ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

সাকিবদের হারিয়ে বরিশালের জয়

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৪৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০১৫
সাকিবদের হারিয়ে বরিশালের জয় ছবি : শোয়েব মিথুন / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

মিরপুর থেকে: প্রথম তিনটি ম্যাচের মতোই শেষ ওভারে শেষ হলো আরও একটি ম্যাচ। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের চতুর্থ ম্যাচে জয় পেয়েছে মাহামুদুল্লাহ রিয়াদের বরিশাল বুলস।

সাকিব আল হাসানের রংপুর রাইডার্সকে ১৩ রানে হারিয়েছে বুলস। নিজেদের প্রথম ম্যাচেই জয় তুলে নিল বরিশাল। আর দুই ম্যাচ খেলে রংপুরের একটি করে জয় ও পরাজয়।

মাহামুদুল্লাহ রিয়াদ আর নাদিফ চৌধুরির ব্যাটে ভর করে নির্ধারিত ওভার শেষে বরিশাল বুলস ৯ উইকেট হারিয়ে ১৫৫ রান সংগ্রহ করে। জবাবে ব্যাট করতে নেমে মোহাম্মদ মিথুনের ব্যাটে ভর করে অলআউট হওয়ার আগে ১৪২ রানে থেমে যায় রংপুরের ইনিংস।

চতুর্থ ম্যাচে টস জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন রংপুর রাইডার্সের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। আগে ব্যাট করতে নেমে বরিশাল বুলসের হয়ে ব্যাটিং উদ্বোধন করতে নামেন রনি তালুকদার এবং শাহরিয়ার নাফিস।

ব্যাটিংয়ে নেমে চরম বিপর্যয়ে পড়ে মাহামুদুল্লাহ রিয়াদের বরিশাল। দ্বিতীয় ওভারেই থিসারা পেরেরার শিকারে সাজঘরের পথ ধরেন রনি তালুকদার। উইকেটের পেছনে মোহাম্মদ মিথুনের গ্লাভসবন্দি হয়ে ফেরেন রনি (১)। একই ওভারে এলবির ফাঁদে ফেলে শাহরিয়ার নাফিসকে বিদায় করেন পেরেরা। পরের ওভারে আক্রমণে এসে সাকিব ফিরিয়ে দেন ব্রেন্ডন টেইলরকে।

পেরেরা চতুর্থ ওভারের শেষ বলে সাব্বির রহমানকেও সাজঘরের পথ দেখান। এলবির ফাঁদে পড়া সাব্বির ৮ বলে দুটি চারে ১১ রান করেন।

টপঅর্ডারের চার ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে ধুঁকতে থাকে বরিশাল। দলীয় ১৫ রানের মাথায় ফিরে যান শাহরিয়ার নাফিস, ব্রেন্ডন টেইলর, রনি তালুকদার আর সাব্বির রহমান। এরপর ব্যাটিংয়ের হাল ধরেন দলপতি মাহামুদুল্লাহ রিয়াদ এবং নাদিফ চৌধুরি। ৮২ রানের জুটি গড়েন তারা। তবে, ইনিংসের ১৬তম ওভারে সাকিবের দ্বিতীয় বলে পেরেরার তালুবন্দি হন রিয়াদ। আউট হওয়ার আগে দারুণ এক ইনিংস খেলেন বরিশালের এ দলপতি। ৪৩ বল মোকাবেলা করে রিয়াদের ব্যাট থেকে আসে ৫১ রান। তার ইনিংসে ছিল ৫টি চার আর একটি ছক্কা।

রিয়াদের পর একই ওভারে (১৬তম ওভারে) ৩১ বলে ৩০ রান করা নাদিফকেও ফিরিয়ে দেন সাকিব। এরপর ৪ বলে একটি করে চার ও ছয়ে ১২ রান করে রান আউট হন সেকুজে প্রসন্ন। ৫ বলে দুটি চার আর একটি ছক্কা হাঁকানো মোহাম্মদ সামিকে (১৫) মিসবাহর হাতে বন্দি করেন সাকলাইন সজীব। ১৩ বল খেলে শেষ ওভারে রান আউট হন দুটি চার আর একটি ছক্কা হাঁকানো কেভিন কুপার (২১)।

রংপুরের হয়ে তিনটি করে উইকেট তুলে নেন সাকিব এবং পেরেরা। সাকিব ৪ ওভার বল করে মাত্র ২৩ রান খরচ করেন। আর পেরেরা ৪ ওভারে দেন ২৯ রান।

বরিশাল বুলসের দেয়া ১৫৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নামেন রংপুর রাইডার্সের দুই ওপেনার সৌম্য সরকার ও লিন্ডল সিমন্স। বল হাতে আক্রমন শুরু করেন মোহাম্মদ সামি। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে উইকেটের পেছনে থাকা ব্রেন্ডন টেইলরের গ্লাভসবন্দি হয়ে ফেরেন জ্বলে উঠার আভাস দেওয়া সৌম্য সরকার। সামির বলে আউট হওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে চারটি বাউন্ডারি আসে। ৭ বলে ১৭ রান করেন তিনি।

সৌম্য সরকারের উইকেট হারিয়ে এগুতে থাকা রংপুরের ইনিংস মেরামতের দায়িত্ব নেন সাকিব। তবে, প্রথম ম্যাচের মতো দ্বিতীয় ম্যাচেও ব্যাট হাতে ব্যর্থ হন ব্যক্তিগত ৬ রান করা এ অলরাউন্ডার। ষষ্ঠ ওভারে কেভিন কুপারের বলে প্রসন্নের হাতে ধরা পড়েন তিনি।

নবম ওভারে ফিরে যান ওপেনার লিন্ডল সিমন্স। সেকুজে প্রসন্নের বল তুলে মারতে গিয়ে লংঅনে সামির হাতে ধরা পড়েন এ ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যান। আউট হওয়ার আগে তিনি ২১ বল খেলে তিনটি চারের সাহায্যে ১৯ রান করেন। ইনিংসের ১২তম ওভারে কেভিন কুপার ফিরিয়ে দেন গত ম্যাচের জয়ের নায়ক মিসবাহ উল হককেও। ২২ বলে ১৯ রান করে উইকেটের পেছনে থাকা টেইলরের গ্লাভসবন্দি হন তিনি।

৬৬ রানে টপঅর্ডারের চার ব্যাটসম্যানকে হারালেও রানের চাকা ঘোরাতে থাকেন মোহাম্মদ মিথুন এবং থিসারা পেরেরা। পঞ্চম উইকেট জুটি থেকে এ দু’জন আরও ৬৮ রান যোগ করেন। দলীয় ১৯তম ওভারে রান আউট হয়ে ফেরেন পেরেরা। বিদায় নেওয়ার আগে এ লঙ্কান তারকা ১৮ বলে দুটি চারের সাহায্যে ১৭ রান করেন। একই ওভারে ফিরে যান মিথুনও। মোহাম্মদ সামির বলে তুলে মারতে গিয়ে অর্ধশতক হাঁকানো মিথুন প্রসন্নের তালুবন্দি হন। তবে, আউট হওয়ার আগে টাইগার এ ব্যাটসম্যান ৩২ বলে ৫টি চারের সাথে দুটি ছক্কা হাঁকিয়ে ৫৫ রানের ইনিংস খেলেন।

শেষ ওভারে রংপুরের দরকার ছিলো ১৫ রান। প্রথম বলেই ড্যারেন স্যামিকে ফিরিয়ে দেন কেভিন কুপার। দ্বিতীয় বল ডট হলে তৃতীয় বলে রান আউট হন আল আমিন (৪)। চতুর্থ বলে লেগ বাই হলেও পঞ্চম বলে মুক্তার আলিকে ফিরিয়ে দেন কুপার। শেষ বলে আবু জায়েদকেও ফিরিয়ে দেন কুপার।

বরিশালের হয়ে কেভিন কুপার ৪ ওভার বল করে মাত্র ১৫ রান খরচায় তুলে নেন ৫টি উইকেট। এছাড়া মোহাম্মদ সামি ৪ ওভারে ৩৫ রানের বিনিময়ে নেন দুটি উইকেট। একটি উইকেট পান সেকুজে প্রসন্ন। উইকেট শূন্য থাকেন রিয়াদ ও তাইজুল।

রংপুর রাইডার্স: সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), লিন্ডল সিমন্স, সৌম্য সরকার, থিসারা পেরেরা, ড্যারেন স্যামি, সাকলাইন সজীব, আবু জায়েদ চৌধুরী রাহি, আল আমিন (জুনি:), মিসবাহ উল হক, মোহাম্মদ মিথুন ও মুক্তার আলি।

বরিশাল বুলস: মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক), নাদিফ চৌধুরী,  সেকুজে প্রসন্ন, রনি তালুকদার, সাব্বির রহমান, আল আমিন হোসেন, কেভিন কুপার, শাহরিয়ার নাফিস, মোহাম্মদ সামি, তাইজুল ইসলাম ও ব্রেন্ডন টেইলর।

বাংলাদেশ সময়: ২২৫৪ ঘণ্টা, ২৩ নভেম্বর ২০১৫
এমআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।