ঢাকা: বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ২০তম ম্যাচে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয় তামিম ইকবালের স্বাগতিক চিটাগং ভাইকিংস আর মাশরাফি বিন মর্তুজার কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। তবে, ৫ উইকেটের জয় নিয়ে চট্টগ্রাম পর্বের শেষ ম্যাচে শেষ হাসি হেসেছে মাশরাফির কুমিল্লা।
টস হেরে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ভাইকিংস ১৩৬ রান সংগ্রহ করে। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৫ উইকেট হারিয়ে ২ বল বাকি থাকতে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় কুমিল্লা।
এর আগে ব্যাটিংয়ে নেমে আবারো ওপেনিং জুটি জমিয়ে তোলেন ভাইকিংসের দুই ওপেনার তামিম ইকবাল এবং দিলশান। উদ্বোধনী জুটি থেকে তারা ৫১ রান তুলে নেন। পাওয়ার প্লে’র ছয় ওভারে তারা ৪৩ রান সংগ্রহ করেন।
দলীয় ইনিংসের অষ্টম ওভারে বিদায় নেন তামিম। শুভাগত হোমের দারুণ ডেলিভারিতে লংঅনে আসার জাইদির তালুবন্দি হন ভাইকিংস দলপতি। আউট হওয়ার আগে ২৩ বলে তিনটি চার আর একটি ছক্কায় বাঁহাতি এ ওপেনার করেন ২৭ রান। একই ওভারের শেষ বলে রানআউট হয়ে ফেরেন এনামুল হক বিজয় (০)।
১০ ওভার শেষে ভাইকিংস দুই উইকেট হারিয়ে তোলে ৬১ রান।
ইনিংসের ১৩তম ওভারের তৃতীয় বলে ভাইকিংসের লঙ্কান ওপেনার দিলশানকে বোল্ড করেন জাইদি। সাজঘরে ফেরার আগে দিলশানের ব্যাট থেকে আসে ৩৯ রান। ৪২ বলে সাজানো তার ইনিংসে ছিল ৫টি বাউন্ডারি।
১৭তম ওভারের চতুর্থ বলে আবু হায়দার রনির আঘাতে ফেরেন ৮ রান করা মোহাম্মদ আমির। ইমরুল কায়েসের তালুবন্দি হওয়ার আগে আমির আরেক পাকিস্তানি উমর আকমলের সঙ্গে ৩০ রানের জুটি গড়েন। নতুন ব্যাটসম্যান জিয়াউর রহমান রান আউট হওয়ার আগে করেন ২ রান।
উমর আকমল ব্যাটে ঝড় তুলে করেন ইনিংস সর্বোচ্চ ৪৯ রান। অপরাজিত ইনিংস খেলার পথে পাকিস্তানের এ ব্যাটসম্যান ৩৪ বলে চারটি চার আর দুটি ছক্কা হাঁকান। বিলওয়াল ভাট্টি দুই রানে অপরাজিত থাকেন।
কুমিল্লার হয়ে দলপতি মাশরাফি বোলিং করেননি। সোয়েব মালিক ৪ ওভারে ২৭ রান দিয়ে উইকেট শূন্য থাকেন। একটি করে উইকেট নেন আবু হায়দার, শুভাগত হোম এবং জাইদি। ৪ ওভার বল করে লঙ্কান পেসার নুয়ান কুলাসেকারা ২৭ রান খরচ করে উইকেট শূন্য থাকেন।
১৩৭ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় কুমিল্লা। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে ভাইকিংস পেসার তাসকিন আহমেদ ফিরিয়ে দেন ভিক্টোরিয়ান্সের ওপেনার লিটন দাসকে। ব্যক্তিগত ৩ রান করা লিটন জিয়াউর রহমানের তালুবন্দি হন।
ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে ঘটে অদ্ভূত এক ঘটনা। তাসকিনের করা ওস ওভারের পঞ্চম বলে ইমরুল কায়েস সিঙ্গেল নেওয়ার জন্য স্ট্রাইকিং প্রান্ত থেকে দৌড় শুরু করলেও নন-স্ট্রাইকার আহমেদ শেহজাদ দাঁড়িয়ে থাকেন। রান আউট থেকে বাঁচতে নিজের মার্কে ফেরেন ইমরুল। তবে, বল থ্রো হয়ে যাওয়ার পর আবারো দৌড় শুরু করেন ইমরুল-শেহজাদ। ততক্ষণে বল লুফে নেওয়ার জন্য ক্রিজে প্রবেশ করেন ভাইকিংসের ফিল্ডার দিলশান। ইমরুলের সঙ্গে পায়ে-পায়ে লাগলে ব্যাটিং ক্রিজেই উল্টে পড়েন ইমরুল। ইতোমধ্যে স্ট্রাইকিং প্রান্তে প্রবেশ করেন পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান শেহজাদ। দু’জন ব্যাটসম্যান একই দিকে থাকায় নন-স্ট্রাইকিং প্রান্তের উইকেট ভেঙে দেন ভাইকিংস ফিল্ডাররা। তবে, ইমরুলের জোর আপত্তিতে অবশেষে পেনাল্টি হিসেবে ৫ রান যোগ হয় ভিক্টোরিয়ান্সদের স্কোরবোর্ডে। টিভি রিপ্লে দেখে ইমরুলকে নটআউট ঘোষণার পাশাপাশি এ সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়।
পরে দশম ওভারের তৃতীয় বলে বিদায় নেন ইমরুল। দিলশানই ফিরিয়ে দেন তাকে। উইকেটের পেছনে এনামুল হক বিজয়ের গ্লাভসবন্দি হয়ে ফেরার আগে ইমরুল ২৮ বলে ৫টি বাউন্ডারিতে ৩৫ রান করেন। বিদায়ের আগে শেহজাদের সঙ্গে ৫২ রানের জুটি গড়েন ইমরুল।
১৫তম ওভারের তৃতীয় বলে বিলওয়াল ভাট্টি ফিরিয়ে দেন আহমেদ শেহজাদকে। লংঅফে জিয়ার তালুবন্দি হওয়ার আগে শেহজাদ খেলেন ৩৭ রানের ইনিংস। বিদায়ের আগে সোয়েব মালিকের সঙ্গে ৩৯ রান যোগ করেন শেহজাদ। তার ইনিংসটি সাজানো ছিল ৪১ বলে চারটি বাউন্ডারিতে। ১৭তম ওভারের তৃতীয় বলে পাকিস্তানের পেসার মোহাম্মদ আমির ফিরিয়ে দেন জাইদিকে (৮)। একই ওভারে দুই বল পর আমির বোল্ড করেন দুই রান করা শুভাগত হোমকে।
তবে, ব্যাটিং ক্রিজের আরেক প্রান্ত আগলে রাখেন সোয়েব মালিক। তাকে শেষ দিকে সঙ্গ দেন অলোক কাপালি। শেষ ওভারে ৭ রান দরকার হয় কুমিল্লার। দুই বল বাকি থাকতে ছক্কা হাঁকিয়ে দলকে জয় পাইয়ে দেন মালিক। ২৩ বলে ৩৪ রান করে অপরাজিত থাকেন মালিক। কাপালির ব্যাট থেকে আসে অপরাজিত ১০ রান।
ভাইকিংসের হয়ে দুটি উইকেট নেন মোহাম্মদ আমির। এছাড়া একটি করে উইকেট তুলে নেন তাসকিন, বিলওয়াল আর দিলশান।
বাংলাদেশ সময়: ২২৩৫ ঘণ্টা, ০৩ ডিসেম্বর ২০১৫
এমআর
** মাশরাফির ভিক্টোরিয়ান্সের টার্গেট ১৩৭ রান