খুলনা: জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চারটি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ম্যাচ খেলতে পৌষের বিকেলেও অনুশীলন করে ঘাম ঝরিয়েছে টাইগাররা।
রোববার (১০ জানুয়ারি) খুলনার শহীদ শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিংয়ে নিজেদের ঝালাই করতে অনুশীলনে ব্যস্ত সময় কাটায় বাংলাদেশ দল।
শেষ বিকেলের রোদে সারাক্ষণই নেটে ঘাম ঝরিয়েছেন সৌম্য সরকার, সাব্বির রহমান ও তামিম ইকবালরা। বোলিং মেশিন থেকে ছোঁড়া বলগুলো সৌম্য সরকার যখন পুল, হুক, পেরিসকোপ শটে উড়িয়ে দিচ্ছিলেন তখন দারুণ উপভোগ করছিলেন মাঠে আসা শ’খানেক দর্শকও।
এরপর নেটে আসেন খুলনার মাঠের সেরা ওপেনার ইমরুল কায়েস। এসময় উইকেট ছেড়ে সামনে এসে বড় শট খেলার জন্য উৎসাহ দিতে থাকেন সাকিব। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ব্যাট করছিলেন আরেকপাশে। কিছুক্ষণ পর ব্যাট ছেড়ে নেটে হাত ঘোরাতেই তিনি ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
এরইমধ্যে সাকিবের ডাক পড়ে ইনডোরে। সেখানে হাতুরাসিং তাকে নিয়ে আবারও ব্যাটিং অনুশীলনে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। মুশফিক ও সোয়ান মাঠে অনুশীলনে যোগ দেন অন্যদের সঙ্গে।
খুলনার এই মাঠে একমাত্র টি-২০ হয়েছিল ২০০৬ সালের ২৮ নভেম্বর। প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে ওই ম্যাচে বাংলাদেশ প্রথমে ব্যাট করে সংগ্রহ করে ১৬৬ রান। জিম্বাবুয়ে ৯ উইকেটে ১২৩ রান করলে টাইগাররা নিজেদের প্রথম টি-২০ ম্যাচে জয় পায় ৪৩ রানে।
ওয়ানডে ও টেস্টের এই লাকি ভেন্যুতে সর্বশেষ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছিল আট মাস আগে। গত বছরের ২৮ এপ্রিল পাকিস্তানের বিরুদ্ধে শুরু হওয়া ওই টেস্ট ম্যাচে ছিল রেকর্ডের ছড়াছড়ি। খুলনার এই মাঠে টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে ৫৫ বছরের রেকর্ড ভাঙেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েস। প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে টেস্টের তৃতীয় ইনিংসে প্রথমবারের মতো ৩০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন এই দুই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। এর আগে ১৯৬০ সালে ওভালে ঘরের মাঠে ইংলিশ ওপেনার কাউড্রেরি-পুলার জুটি তৃতীয় ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২৯০ রানের জুটি গড়েন। উদ্বোধনী জুটিতে তামিম-ইমরুলের ৩১২ রান ছিল দেশের হয়ে যে কোনো উইকেট জুটিতেও সর্বোচ্চ। ২০১৩ সালে শ্রীলংকার বিপক্ষে গালেতে পঞ্চম উইকেট জুটিতে মোহাম্মদ আশরাফুল ও মুশফিক করেছিলেন ২৬৭ রান।
২০১৩ সালে শ্রীলঙ্কার গালে প্রথম বাংলাদেষি ব্যাটসম্যান হিসেবে ২০০ রান করেন মুশফিকুর রহিম। খুলনার ওই টেস্টে ২০৬ রান করে বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে এক ইনিংসে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের মালিক হন তামিম ইকবাল। টেস্টের শেষ দিনে তামিম ২৭৮ বলে ১৭টি চার ও সাতটি বিশাল ছক্কায় ২০৬ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলার পর মোহাম্মদ হাফিজের শিকার হন। তামিম এর আগে, ২০১০ সালে ভারতের বিরুদ্ধে ঢাকার মাঠে ১৫১ রান করেছিলেন। খুলনা টেস্টে ছিল বাংলাদেশি বোলারদের আরও কিছু অর্জন। এই টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে তাইজুল ইসলাম ৬ উইকেট নেন।
এদিকে, বাংলাদেশের বিপক্ষে ৪ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে সোমবার (১১ জানুয়ারি) বাংলাদেশে আসার কথা রয়েছে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দলের।
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী শুক্রবার (১৫ জানুয়ারি) বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি হবে স্প্রিং বকরা। এরপর ১৭, ২০ ও ২২ জানুয়ারি যথাক্রমে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলবে সফরকারীরা। সবগুলো ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে। চার ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজ শেষে ২৩ জানুয়ারি ঢাকা ছাড়বে এল্টন চিগম্বুরার নেতৃত্বাধীন জিম্বাবুয়ে দল।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০১৫
এমআরএম/এইচএ