ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

বিপাকে আফ্রিদি-ওয়াকার আর পাকিস্তান ক্রিকেট

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২, ২০১৬
বিপাকে আফ্রিদি-ওয়াকার আর পাকিস্তান ক্রিকেট ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: নেতৃত্ব হারাতে যাচ্ছেন পাকিস্তানের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক শহিদ আফ্রিদি। বরখাস্ত হতে যাচ্ছেন দলটির প্রধান কোচ ওয়াকার উইনুস।

নিষিদ্ধ করা হতে পারে দলের সিনিয়র চার ক্রিকেটারকে। পাকিস্তান ক্রিকেটে এখন এমনই আভাসের দেখা মিলছে।

 

এশিয়া কাপের পর টি-টোয়েন্টি বিশকাপেও ব্যর্থ হয় পাকিস্তান দল। ফলে, দেশটির ক্রিকেট-নীতিনির্ধারকরা তদন্ত কমিটি (ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি) গঠন করে আফ্রিদিকে অধিনায়কের আসন থেকে সরিয়ে দিতে বোর্ডের কাছে সুপারিশ করেছে। সঙ্গে ওয়াকার ইউনুসকে বরখাস্ত করতে পারে প্রধান কোচের দায়িত্ব থেকে।

 

দলের কোচ ওয়াকার ইউনুস ও ম্যানেজার ইন্তিখাব আলম তাদের রিপোর্টে আফ্রিদির প্রসঙ্গে অভিযোগ করার পর পাকিস্তানি মিডিয়াগুলো এ ধরনের খবর ছেপেছে। তবে, বোর্ডের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা দেয়া হয়নি।

পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) একটি সূত্র জানায়, উমর আকমল, ওয়াহাব রিয়াজ, শোয়েব মালিক আর আহমেদ শেহজাদকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হতে পারে। এই দুই বছরে পিসিবি আয়োজিত ক্রিকেটের কোনো আসরেই তারা অংশ নিতে পারবেন না।

এশিয়া কাপ আর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ব্যর্থতার পর দেশে ফিরে বোর্ডের কাছে দলের বাজে পারফর্ম আর বিপর্যয়ের রিপোর্ট পেশ করেন কোচ ওয়াকার ইউনিস। তার রিপোর্টের প্রেক্ষিতে ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি’ এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়ে বোর্ডের কাছে সুপারিশ করে। তারই প্রেক্ষিতে পিসিবি প্রধান শাহরিয়ার খানের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে কমিটির সদস্যদের তৈরি করা সুপারিশ।

ওয়াকারের রিপোর্টে আরও ছিল দলের অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদির অহেতুক সব সিদ্ধান্তের কথা। কোচ জানান, এশিয়া কাপের আসর থেকেই ক্রিকেটে মন ছিল না আফ্রিদির। দলের অনুশীলন ও টিম মিটিংয়েও উপস্থিত থাকতেন না দলপতি। এছাড়া তিনি রিপোর্টে উল্লেখ করেন, বিশ্বকাপ চলাকালীন সময়ে শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন ওপেনার আহমেদ শেহজাদ ও উমর আকমল। উমর আকমল পাকিস্তানের কিংবদন্তি ক্রিকেটার ইমরান খানের সঙ্গে গোপনে দেখা করে তিন নম্বরে ব্যাট করতে চাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। যা সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজে পরে প্রকাশিত হয়।

এশিয়া কাপে বাংলাদেশের বিপক্ষে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেয় পাকিস্তান। এছাড়া হেরেছিল ভারতের বিপক্ষেও। এরপর বিশ্বকাপের সুপার টেনে বাংলাদেশের বিপক্ষে জিতলেও ভারত, নিউজিল্যান্ড আর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হেরেছিল সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।

ওয়াকার তার রিপোর্টে আরও জানান, অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান আহমেদ শেহজাদ তার চোটের কথা লুকিয়েছিলেন ম্যানেজমেন্টের কাছে। নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের আগে পেসার মোহাম্মদ আমিরও নাকি তার চোটের কথা গোপন করেছিলেন। এছাড়া, দলের নিয়ম মানেননি পেসার ওয়াহাব রিয়াজ। আর শোয়েব মালিকের মতো ক্রিকেটার হঠাৎ করেই তার পারফর্ম অনুযায়ী দলকে সেরাটা দিতে ব্যর্থ হন।

ওয়াকার আর দলের ম্যানেজার ইন্তিখাব আলমের এমন সব রিপোর্টের প্রেক্ষিতে বোর্ডের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বসে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি। তাতে ওয়াহাব রিয়াজ, আহমেদ শেহজাদ, শোয়েব মালিক আর উমর আকমলকে দুই বছরের নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয় পিসিবির কাছে।

কমিটি থেকে সুপারিশ করা হয় আফ্রিদিকে সরিয়ে অধিনায়কের দায়িত্ব উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান সরফরাজ আহমেদের হাতে তুলে দেওয়ার। পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) ফাইনালিস্ট কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটর্সকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সরফরাজ।

মাঠ ও মাঠের বাইরে একাধিক ভুল সিদ্ধান্ত, ক্রিকেটারদের প্রেরণা দিতে ব্যর্থ হওয়ার জেরে চাকরি হারাতে পারেন ওয়াকার। চলতি বছর জুনে পাকিস্তানের কোচ হিসেবে ওয়াকার ইউনুসের চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। পিসিবি তার চুক্তি নবায়ন করবে না বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়। তার স্থলাভিষিক্ত হতে পারেন দেশটির সাবেক ক্রিকেটার মহসিন খান। তবে, কমিটির সুপারিশে আরও রয়েছে সাবেক টেস্ট দলপতি মইন খান আর সাবেক পেসার আকিব জাভেদের নাম। আকিব জাভেদ বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাতের কোচের দায়িত্ব পালন করছেন।

ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির প্রস্তাব গৃহীত হলে পাকিস্তানের ক্রিকেটে বেশ পরিবর্তন আসবে তা একরকম নিশ্চিত।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩০ ঘণ্টা, ০২ এপ্রিল ২০১৬
এমআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।