ঢাকা: ইংল্যান্ডের বাংলাদেশ সফরের বিষয়টি ক্রমেই স্পর্শকাতর হয়ে উঠেছিল। অবশেষে বাংলাদেশ সফরে সবুজ সংকেত দিয়েছে ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড।
সবুজ সংকেত পেলেও ইংলিশদের নিয়মিত টেস্ট দলপতি অ্যালিস্টার কুককে নিয়ে অনিশ্চয়তা থেকেই যাচ্ছে। দোটানায় পড়েছেন কুক নিজেও। নিরাপত্তার কোনো বিষয় নয়, কুক আসবেন না একান্তই ব্যক্তিগত কারণে। এমন খবর প্রকাশ করেছে জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম ‘ডেইলি মেইল’ আর ‘গার্ডিয়ান’।
দ্বিতীয়বারের মতো বাবা হতে চলেছেন কুক। আর এ সময় স্ত্রী অ্যালিসের পাশে থাকার ইচ্ছা আগেই প্রকাশ করেন তিনি। আবার দলের সঙ্গে এশিয়া সফরেও (বাংলাদেশ-ভারত) আসতে চাইছেন তিনি। আসন্ন সফরে কুক কিভাবে এই সমস্যার সমাধান বের করবেন তা নিয়ে তিনি দোটানায় পড়েছেন বলে জানাচ্ছে ডেইলি মেইল।
এদিকে, গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, পুরো সফর নয়, কুক সফরের শুরুর অংশটিতে না-ও থাকতে পারেন।
ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের নিরাপত্তা দল বাংলাদেশ ঘুরে গিয়ে এই সফরে আসার ব্যাপারে মত দিয়েছেন। সম্প্রতি ইংল্যান্ডের ওয়ানডে দলপতি ইয়ন মর্গান জানিয়েছেন, ‘বাংলাদেশ সফরে ক্রিকেটারদের সিদ্ধান্ত গুরুত্ব পাবে। যদি, কোনো ক্রিকেটার সফরে যেতে ইচ্ছুক না হয় তবে তাকে স্কোয়াডে না রেখেই বাংলাদেশ সফরে যাবে ইংল্যান্ড। আমার মনে হয় না, এই সফরে যাবার জন্য কাউকে চাপ দেয়া হবে। আমার মনে হয় এটা আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ সবাই একসাথে হওয়া। ’
এদিকে, এসেক্সের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ না খেলে বোর্ডের সভায় যোগ দিয়েছিলেন কুক। সেখানে সবাই সম্মিলিতভাবে বৈঠক করার পর প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ সফরে আসার ব্যাপারে সম্মতি দিয়েছেন। তবে, বোর্ডের কাছে কুক ছুটি কাটানোর কথাও বলে রেখেছেন। বোর্ডও তাকে বাংলাদেশ সফরে না পেলেও ভারত সফরের জন্য বেশি করে চাইছে।
খেলোয়াড়দের পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হলেও আলোচনায় বারবার আসছে কুকের প্রসঙ্গটিই। বাংলাদেশ সফরে গত বছর দক্ষিণ আফ্রিকার এবিডি ভিলিয়ার্স আসেননি সন্তান সম্ভবা স্ত্রীর পাশে থাকার জন্য। অথচ তিনি সেই সফর করলে অভিষেক থেকে টানা ১০০ টেস্ট খেলার বিরল রেকর্ডটা করতে পারতেন।
গত বছর অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রে সন্তান সম্ভবা স্ত্রী শিশিরের পাশে ছিলেন সাকিব আল হাসান। স্ত্রী অনুরোধে দেশের মাটিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে অংশ নিতে চলে আসেন সাকিব। প্রথম ম্যাচে বল হাতে তুলে নেন পাঁচটি উইকেট। সাকিব দেশের জার্সি গায়ে খেলতে চেয়েছিলেন সিরিজের সব ম্যাচগুলো। কিন্তু, সন্তান সম্ভবা স্ত্রীর পাশে থাকতে আরেকবার যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্য ঢাকা ছাড়েন তিনি। ফলে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের বাকি ম্যাচগুলো তার খেলা হয়নি।
এছাড়া, ২০০৬ সালে তখনকার অধিনায়ক অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফ দলের প্রয়োজনে ভারত সফরে এসেছিলেন। তার ছেলে কোরির জন্মের সময়ে স্ত্রীর পাশে থাকতে পারেননি ফ্লিনটফ। ক্রিকেটে পেশাদারিত্ব আগে, কিন্তু পরিবার তো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩০ ঘণ্টা, ২৬ আগস্ট ২০১৬
এমআরপি