মিরপুর থেকে: নতুন বলে চট্টগ্রাম টেস্টে দারুণ করেছিল বাংলাদেশের স্পিনাররা। মিরপুরেও দেখা গেল তার ধারাবাহিকতা।
শেষ বিকেলে মিরপুরের উইকেটে সাকিব-মেহেদির ঘূর্নি যেন আফসোস আরও বাড়াচ্ছিল। বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসটা আরেকটু বড় হলেই তো দিনটা বাংলাদেশের বলা যেত।
বাংলাদেশের অনুকূলেই ছিল সব। টস জিতে আগে ব্যাটিং, দ্বিতীয় উইকেটে তামিম ইকবাল ও মুমিনুল হকের ১৭০ রানের জুটি। কিন্তু মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যানরা হয়তো চাইছিলেন দিনটা হোক ইংলিশদের! নইলে অমন ব্যাটিং কেন? খেলাটা যে টেস্ট সেটিই যেন ভুলে গেলেন মাহমুদউল্লাহ, সাকিব, শুভাগত। এ তিন ব্যাটসম্যানই উইকেট বিলিয়ে এসেছেন।
যেভাবে তামিম-মুমিনুল খেলছিলেন তাতে মনে হয়েছে আজই বুঝি তিন’শ পেরিয়ে যাবে বাংলাদেশের। উইকেট হাতে রেখে আগামীকালও করবে ব্যাটিং। কিন্তু বাস্তবতা হলো মিডলঅর্ডারের ব্যর্থতা বাংলাদেশকে ২২০ রানে গুটিয়ে দিয়ে ইংল্যান্ড খেললো ১২.৩ ওভার।
সময়ের সঙ্গে বাংলাদেশের ইনিংস যেমন খাদে পড়েছে উইকেটও বদলেছে তার আচরণ। প্রথম ঘন্টার পরই বল মন্থর হয়ে আসতে শুরু করে ব্যাটে। সেই সঙ্গে বাড়তে থাকে টার্ন। চট্টগ্রামের উইকেট যেন ফিরে আসে মিরপুরে।
কঠিন উইকেটেই সাবলীল থেকে ব্যাট করে গেছেন তামিম-মুমিনুল। ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই ইমরুল যখন ক্রিস ওকসের শিকারে পরিণত হন দলের রান তখন মাত্র ১। সেখান থেকে তামিম-মুমিনুল জুটি ১৭১ পর্যন্ত নিয়ে যান বাংলাদেশকে। ১০৪ রানের ইনিংস খেলে মঈন আলীর বলে এলবিডব্লুউ হন তামিম। ১৪৭ বলে ১২টি চারের সাহাজ্যে সাজান ইনিংসটি বাংলাদেশকে বড় সংগ্রহের ভীত গড়ে দিয়েই আউট হন তামিম।
এরপরই বালুর বাঁধের মতো ভেঙে পড়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ। দলীয় ১৯০ রানে ব্যক্তিগত ৬৬ রান করে মঈন আলীর করা স্টাম্পের উপর বলটি ব্যাকফুটে ড্রাইভ করতে গেলে লাইন মিসে বোল্ড হন মুমিনুল। আর ৬ রান যোগ হতেই বেন স্টোকসের অফস্টাম্প বরাবর লাফিয়ে ওঠা বলটি ব্যাটের কানায় লাগিয়ে কুককে স্লিপ ক্যাচের অনুশীলন করান মাহমুদউল্লাহ (১৩)।
খানিক বাদেই ফিরে যান মুশফিক (৪) সাব্বির (০), শুভাগত (৬)। অফস্টাম্পের অনেক বাইরের বল জায়গায় দাঁড়িয়ে ড্রাইভ করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে বেয়ারস্টোর বিশ্বস্ত গ্লাভসে ধরা পড়েন শুভাগত। অনেকটা আত্মাহুতি দেন এ ব্যাটসম্যান।
প্রথম টেস্টে ব্যাট হাতে ব্যর্থ মেহেদি হাসান মিরাজ জুটি বাঁধেন সাকিব আল হাসানের সঙ্গে। তবে এ দিনও ব্যাট হাতে হতাশ করেন মিরাজ। মঈন আলীর ঝুঁলিয়ে দেয়া বলটি সুইপ করতে গিয়ে এলবিডব্লুউ হন মাত্র ১ রান করে। শেষ ভরসা সাকিব আল হাসানও (১০) উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসেন। ক্রিস ওকসের করা অফস্টাম্পের অনেক বাইরের বলটি ব্যাটের পরশ বুলাতে গিয়ে বেয়ারস্টোর হাতে ধরা পড়েন এ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
মঈন আলীর পঞ্চম শিকার হন কামরুল ইসলাম রাব্বি। রানের খাতা খেলার আগেই সাজঘরে ফেরেন তিনি। অপর প্রান্তে ৫ রানে অপরাজিত থেকে যান তাইজুল ইসলাম। শেষ ৪৯ রানে ৯ উইকেট হারিয়ে না বসলে হতে পারতো এটি বাংলাদেশের দিন। এই আক্ষেপকে সঙ্গী করেই শেষ হলো ঢাকা টেস্টের প্রথম দিন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১১ ঘণ্টা, ২৮ অক্টোবর, ২০১৬
এসকে/এমএমএস