মিরপুর থেকে: ভালো শুরুর পরও বড় স্কোর গড়তে পারেনি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের খুলনা টাইটান্স। নির্ধারিত ওভার শেষে তাদের সংগ্রহ দাঁড়িয়েছে ৯ উইকেটে ১৪৪।
প্রথম দশ ওভারে এক উইকেটে ৯২ রান তুলে বড় সংগ্রহের আভাস দিয়েছিল খুলনা। এরপরই ছন্দে ফেরে কুমিল্লার বোলাররা। শেষ দশ ওভারে তারা ৫২ রানের বিনিময়ে তুলে নেয় আটটি উইকেট। দেড়শ’র মধ্যে আটকে রাখে খুলনাকে।
টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন কুমিল্লা দলপতি মাশরাফি বিন মর্তুজা। আন্দ্রে ফ্লেচার ও মোহাম্মদ হাসানুজ্জামানের ব্যাটে খুলনার শুরুটা হয় দুর্দান্ত।
ইনিংসের পঞ্চম ওভারে ৪৫ রানের ওপেনিং জুটি ভাঙেন মাশরাফি। ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যান ফ্লেচারকে (২৩) ইমরুল কায়েসের ক্যাচে পরিণত করে ব্রেকথ্রু এনে দেন তিনি।
১১তম ওভারে এসে আবারো দলকে উইকেট উল্লাসে মাতান মাশরাফি। নাবিল সামাদের তালুবন্দি হন শুভাগত হোম (১৬)। এক ওভার ঘুরতেই আবারো মাশরাফির আঘাত। এবার বিপদজনক হয়ে ওঠা হাসানুজ্জামানকে (৩৭) ফিরিয়ে নিজের তৃতীয় উইকেট তুলে নেন। লিটন দাসের গ্লাভসবন্দি হন খুলনা ওপেনার।
মাশরাফির পর খুলনা শিবিরে জোড়া আঘাত হানেন নাজমুল হাসান শান্ত। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের (১১) পর অলক কাপালিকে (৩) সাজঘরে পাঠান ১৮ বছরের এ উঠতি অলরাউন্ডার। দলীয় ১১৭ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে ব্যাকফুটে চলে যায় তারা।
শেষ ২৭ রানে খুলনার আরো চার উইকেটের পতন ঘটে। তিনটিই পাকিস্তান পেসার সোহেল তানভীরের দখলে যায়। নিকোলাস পুরান ১২ ও কেভন কুপার ১১ রান করে আউট হন। বাকি উইকেটটি নেন তরুণ আফগান লেগস্পিনার রশিদ খান।
সাতটি টিমের মধ্যে একমাত্র কুমিল্লাই এখনো জয়ের দেখা পায়নি। টানা দুই ম্যাচ হেরে পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। মাশরাফিদের সামনে ঘুরে দাঁড়ানোর চ্যালেঞ্জ!
এদিকে, রোববারের (১৩ নভেম্বর) প্রথম ম্যাচটিতে সাব্বির রহমানের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতেও বরিশাল বুলসের কাছে ৪ রানে হেরে যায় রাজশাহী কিংস। মুশফিক-নাফিসের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে চার উইকেটে ১৯৩ রানের চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় বরিশাল। নাফিস ৬৩ ও মুশফিক ৮১ রান (অপ.) করেন। জয়ের কাছাকাছি গিয়েও হতাশায় ডোবে রাজশাহী। নির্ধারিত ওভার শেষে তাদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ছয় উইকেটে ১৮৮। ৬১ বলের ১২২ রানে ‘বিস্ফোরক’ ইনিংস উপহার দেন ম্যাচ সেরা সাব্বির।
গত ৮ নভেম্বর উদ্বোধনী ম্যাচে চিটাগং ভাইকিংসের কাছে ২৯ রানের হার দিয়ে নতুন আসর শুরু করে কুমিল্লা। বরিশালের বিপক্ষেও (১১ নভেম্বর) ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি মাশরাফির দল। ছয় উইকেটে হেরে যায় তারা।
রোমাঞ্চকর জয় দিয়ে খুলনার বিপিএল যাত্রা শুরু হয়। রাজশাহীকে তারা ৩ রানে পরাজিত করে। কিন্তু নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচেই রংপুরের বিপক্ষে মাত্র ৪৪ রানে অলআউটের লজ্জায় ডোবে মাহমুদউল্লাহরা। তবে ১২ নভেম্বরের ম্যাচে চিটাগংকে চার রানে হারিয়ে আবারো ছন্দে ফেরে খুলনা।
পয়েন্ট টেবিলে তিন ম্যাচে দুই জয়ে চার পয়েন্ট নিয়ে খুলনার অবস্থান চতুর্থ। সমান ম্যাচে সমান পয়েন্টে নেট রান রেটে এগিয়ে থাকায় তিনে উঠে এসেছে বরিশাল। একই সমীকরণে শীর্ষে সাকিবের ঢাকা ডায়নামাইটস ও দুইয়ে রংপুর রাইডার্স। শীর্ষ চার দলের পয়েন্টই ৪। তিন ম্যাচ শেষে সমান এক জয়ে যথাক্রমে পাঁচে রাজশাহী ও ছয় নম্বরে চিটাগং।
কুমিল্লা একাদশ: সৈকত আলী, ইমরুল কায়েস, মারলন স্যামুয়েলস, নাজমুল হোসেন শান্ত, লিটন দাস (উইকেটরক্ষক), মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), আসার জাইদি, রশিদ খান, সোহেল তানভীর, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, নাবিল সামাদ।
খুলনা একাদশ: আন্দ্রে ফ্লেচার, মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান, শুভাগত হোম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক), অলক কাপালি, নিকোলাস পুরান (উইকেটরক্ষক), আরিফুল হক, কেভন কুপার, মোশাররফ হোসেন রুবেল, শফিউল ইসলাম, জুনাইদ খান।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০১৬
এমআরএম