ঢাকা: জাতীয় লিগের প্রথম তিন রাউন্ড বৈরী আবহাওয়ার কারণে জমেনি। সব ভেন্যুতেই বৃষ্টি কেড়ে নিয়েছে অন্তত ১-২ দিন।
প্রায় দুই মাসের বিরতির পর জাতীয় লিগের চতুর্থ রাউন্ড মাঠে গড়াতেই ফলাফল এলো চার ম্যাচে। যার মধ্যে তিন দিনেই শেষ হয়েছে ফতুল্লা ও বিকেএসপি ভেন্যুর ম্যাচ। চতুর্থ দিনের শুরুতে ফলাফল আসে বগুড়া ও সিলেট ভেন্যুর ম্যাচে।
চার ভেন্যুতেই ফল আসার পেছনে বোলারদের অবদান তো আছেই, ভূমিকা রেখেছে উইকেট। সবগুলো ভেন্যুতেই ম্যাচ হয়েছে সবুজ ঘাসের উইকেটে। যেখানে পেসাররা উইকেট থেকে পেয়েছেন পর্যাপ্ত বাউন্স।
বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে সবসময় স্পিনারদের আধিপত্য দেখা গেলেও ঘাসের উইকেট তৈরী করায় জাতীয় লিগের চারটি ম্যাচেই আধিপত্য দেখিয়েছে পেসাররা। বিকেএসপিতে বরিশালের বিপক্ষে খুলনার পেসার আশিকুজ্জামান দুই ইনিংসে নিয়েছেন ৯ উইকেট। চার ভেন্যুতে বল হাতে দাপট দেখিয়েছেন পেসার মোহাম্মদ শরিফ, আবু জায়েদ রাহি, আবু হায়দার রনি, ফরহাদ রেজা, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, আরিফুল হকরা।
চতুর্থ রাউন্ডে ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে গড়ায় ঢাকা মেট্রো ও ঢাকা বিভাগের ম্যাচ। তিন দিনে শেষ হওয়া ম্যাচটিতে দু’শো রান পেরোতে পারেনি কোনো দল। উইকেটে এত ঘাস ছিল যে পেসারদের সামলাতে হিমশিম খেতে হয়েছে ব্যাটসম্যানদের। পেস সহায়ক উইকেট পেয়ে চার স্লিপ নিয়ে বল করেছেন মোহাম্মদ শরিফ-শাহাদাত হোসেনরা।
ঢাকা মেট্রোর বাঁহাতি স্পিনার ইলিয়াস সানি ফতুল্লার উইকেট নিয়ে বললেন, ‘আমাদের কোনো ব্যাটসম্যান উইকেট গিফট করে আসেনি। বলতে হবে প্রতিপক্ষের বোলাররা উইকেট তুলে নিয়ে গেছে। উইকেটে ঘাস থাকায় দারুণ বাউন্স ও পেস পেয়েছে পেসাররা। ফতুল্লার উইকেট সবুজ টার্ফ মনে হয়েছে আমার কাছে। আমরা সচরাচর এমন উইকেটে খেলে অভ্যস্ত নই। বোলাররা খুব ভালো বোলিং করেছে। পেসাররা আধিপত্য দেখিয়েছে। ’
ঢাকা মেট্রোর কোচ মিজানুর রহমান বাবুল একটু ভিন্নভাবেই প্রকাশ করলেন উইকেট নিয়ে তার রোমাঞ্চের কথা, ‘এত দারুণ ঘাসের উইকেট ফতুল্লায়। দেখে মনে হচ্ছিলো আমি নিজেই বোলিং করতে নেমে যাই! এমন উইকেটে নিয়মিত খেলা হলে ব্যাটসম্যানদের শেখার সুযোগ থাকবে। সেই সঙ্গে পেস বোলিংয়ে আগ্রহী হবে তরুণরা। ভবিষ্যতে অনেক পেসার পাবে বাংলাদেশ। ’
বাউন্সি উইকেটে পেসারদের দাপটে স্পিনারদের আড়াল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকছে। তবে ইলিয়াস সানি এভাবে ভাবতে চান না। এমন উইকেটে মানিয়ে নিয়ে বোলিং করাটাকে দায়িত্ব ভাবছেন এ স্পিনার, ‘স্পিনারদের জন্য কঠিন অবশ্যই। কারণ, সবুজ উইকেটে বল টার্ন কম করে। উইকেট এমন হলেও স্পিনারদের নিজেদের পারফরম্যান্স ধরে রাখতে হবে। চেষ্টা করা উচিত এমন উইকেটে কিভাবে উইকেট বের করা যায়। সবুজ ঘাসের উইকেটে কিভাবে সার্ভাইভ করা যায় এটা শেখার চেষ্টা থাকা উচিত। ’
অনূর্ধ্ব-১৯ দল পেরিয়ে প্রথম শ্রেনির ক্রিকেট শুরু করা জয়রাজ শেখ ইমন জানালেন তার অভিজ্ঞতার কথা, ‘ফতুল্লায় যেমন উইকেট এমন উইকেটে নিয়মিত খেলা হলে আমাদের শেখার অনেক সুযোগ থাকবে। যে কোনো কন্ডিশনেই আমরা মানিয়ে নিতে পারবো। শেখার জায়গা আরও বাড়বে, ব্যাটিংয়ে বেশি সিরিয়াস হবে সবাই। ’
বিসিবির গ্রাউন্ডস অ্যান্ড ফ্যাসিলিটিজ ম্যানেজার সৈয়দ আব্দুল বাতেন বললেন, ‘সব ভেন্যুর উইকেটেই ঘাস লাগানো হয়েছে। এখন থেকে উইকেটের আচরণ এমনই থাকবে। পরের রাউন্ডগুলোতে পরিবর্তন হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
আগামী মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) মাঠে গড়াবে জাতীয় লিগের পঞ্চম রাউন্ড। দুই স্তরের চার ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে ফতুল্লা, বিকেএসপি, সিলেট ও চট্টগ্রামে। বাউন্সি উইকেটের নিশ্চয়তা থাকায় ফল তো আশা করাই যায়!
বাংলাদেশ সময়: ২০০৮ ঘণ্টা, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৬
এসকে/এমএমএস