ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ক্রিকেট

তিন সেঞ্চুরির ম্যাচে পাকিস্তানের পরাজয়

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০১৭
তিন সেঞ্চুরির ম্যাচে পাকিস্তানের পরাজয় ছবি: সংগৃহীত

অ্যাডিলেড ওভালে পাঁচ ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচেও জয় তুলে নিয়েছে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া। সফরকারী পাকিস্তানকে সিরিজের শেষ ম্যাচে ৫৭ রানে হারিয়েছে অজিরা। এর ফলে ৪-১ এ সিরিজ হারের লজ্জায় পড়লো পাকিস্তান।

এর আগে প্রথম ম্যাচে ব্রিসবেনে ৯২ রানে জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। দ্বিতীয় ম্যাচে মেলবোর্নে ঘুরে দাঁড়িয়ে ৬ উইকেটের জয় তুলে নেয় পাকিস্তান।

পার্থের তৃতীয় ম্যাচে পাকিস্তানকে ৭ উইকেটে হারায় স্বাগতিকরা। আর চতুর্থ ম্যাচে ৮৬ রানের জয় তুলে নিয়ে সিডনিতেই সিরিজ নিশ্চিত করে অজিরা।

টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ওভার শেষে সাত উইকেট হারিয়ে ৩৬৯ রানের পাহাড় গড়ে অজিরা। জবাবে, ৯ উইকেট হারিয়ে ৪৯.১ ওভারে ৩১২ রান তুলতে ইনিংস থামে পাকিস্তানের। রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে সোয়েব মালিক আর ব্যাটিংয়ে নামেননি।

ওপেনিং জুটিতে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে রেকর্ড গড়েন ডেভিড ওয়ার্নার ও ট্রাভিস হেড। অ্যাডিলেড ওভালে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে ২৮৪ রানের জুটি গড়ে করে পেছনে ফেলেন ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে অ্যারন ফিঞ্চ ও শন মার্শের করা ২৪৬ রানের জুটিকে।

পাঁচ ম্যাচ সিরিজের শেষটিতে তিন রানের জন্য বিশ্ব রেকর্ড গড়তে পারেনি ওয়ার্নার-হেড জুটি। আর মাত্র তিন রান করতে পারলেই পেছনে চলে যেতো ওপেনিংয়ে বিশ্ব রেকর্ডের মালিক শ্রীলঙ্কার সনথ জয়সুরিয়া-উপল থারাঙ্গা জুটি। ২০০৬ সালের পহেলা জুলাইয়ে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওপেনিংয়ে ২৮৬ রান করেছিলেন এই লঙ্কানরা। ওয়ার্নার-হেডের পর ২০১১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২৮২ করে তৃতীয়স্থানে আছে শ্রীলঙ্কার তিলকরত্নে দিলশান-থারাঙ্গা জুটি।

ছবি: সংগৃহীতঅন্তত আরও দুই রান করলে যৌথভাবে বিশ্ব রেকর্ডটির মালিক হতো ওয়ার্নার-হেড জুটি। ব্যক্তিগত ১৭৯ রান করে জুনায়েদ খানের বলে আউট হন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান ওয়ার্নার। অবশ্য নিজের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ওডিআই ইনিংস খেললেন তিনি। ২০১৫ ঘরের মাঠের বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ১৭৮ ছিল তার পূর্বের সর্বোচ্চ স্কোর।

আরও সাত রান করতে পারলে অজিদের হয়ে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের ইনিংসের মালিক হতেন ওয়ার্নার। ২০১১ সালের এপ্রিলে বাংলাদেশের বিপক্ষে ১৮৫ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে রেকর্ডের মালিক শেন ওয়াটসন। ২০০৭ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অপরাজিত ১৮১ করে দ্বিতীয় অবস্থানে আছেন ম্যাথিউ হেইডেন। ওয়ার্নারের ইনিংসটি রয়েছে তৃতীয়স্থানে। চতুর্থটিও তার অধীনে।

ক্রিকেট বিশ্ব এই জুটিতে দেখেছে অনেক রেকর্ড। তার মধ্যে আরেকটি ছিল পাকিস্তানের বিপক্ষে ওপেনিংয়ে রেকর্ড জুটি। আগের রেকর্ডটি ছিল শ্রীলঙ্কার মাহেলা জয়াবর্ধনে-উপল থারাঙ্গা জুটির। ২০০৯ সালের আগস্টে ২০২ রান করেছিলেন তারা।

এদিকে যেকোনো জুটিতে বিশ্ব রেকর্ডের তালিকায় ওয়ার্নার-হেড জুটি পঞ্চমস্থানে জায়গা করে নিয়েছেন। প্রথমে আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিস গেইল ও মারলন স্যামুয়েলস। গত ওয়ানডে বিশ্বকাপে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তারা দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৩৭২ রান করেছিলেন। দ্বিতীয় অবস্থানে আছে শচীন টেন্ডুলকার-রাহুল দ্রাবিড় (৩৩১), তৃতীয় স্থানে সৌরভ গাঙ্গুলি-দ্রাবিড় (৩১৮), চতুর্থ স্থানে থারাঙ্গা-জয়সুরিয়া (২৮৬)।

ওয়ার্নারের ১৭৯ রান আসে মাত্র ১২৮ বলের মাধ্যমে। যেখানে ছিল ১৯টি চার ও পাঁচটি ছক্কার মার। স্ট্রাইক রেট ১৩৯.৮৪। ২০১৬-১৭ মৌসুমে ওডিআইতে এখন পর্যন্ত ছয়টি সেঞ্চুরি করেছেন ওয়ার্নার। ২০১৪-১৫ মৌসুমে সমান ছয়টি সেঞ্চুরি এর আগে করেছিলেন লঙ্কান গ্রেট কুমার সাঙ্গাকারা।  
ওয়ার্নারকে ওপেনিংয়ে দারুণ সঙ্গ দেওয়া ট্রাভিস হেড এদিন তুলে নেন ক্যারিয়ারে প্রথম সেঞ্চুরি। ২০তম ওডিআইতে ২৩ বছর বয়সী এ বাঁহাতি ১৩৭ বলে নয় চার ও তিন ছক্কায় ১২৮ করেন। উসমান খাজাকে বিশ্রাম দেওয়ায় এ ম্যাচে ওপেনিংয়ে সুযোগ পান হেড। অজি দলপতি স্টিভেন স্মিথ ৪, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ১৩, ম্যাথু ওয়েড ৮, হ্যান্ডসকম্ব ১, জেমস ফকনার ১৮ রান করেন।

পাকিস্তানের হয়ে দুটি করে উইকেট দখল করেন হাসান আলি এবং জুনায়েদ খান। একটি করে উইকেট দখল করেন মোহাম্মদ আমির এবং ওয়াহাব রিয়াজ।

ছবি: সংগৃহীত৩৭০ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে পাকিস্তানের দলপতি আজহার আলি ব্যক্তিগত ৬ রানে বিদায় নেন। আরেক ওপেনার শারজিল খান ৬৯ বলে নয়টি চার আর দুটি ছক্কায় ৭৯ রান।

তিন নম্বরে নামা বাবর আজম ওয়ানডে ক্যারিয়ারের চতুর্থ শতক তুলে নেন। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এর আগে পাকিস্তানের জহির আব্বাস শতক হাঁকিয়েছিলেন। এর ৩৫ বছর পর এবার বাবরের ব্যাটে এমন সেঞ্চুরি আসলো। ১৯৮১ সালে সিডনিতে ১০৮ রানের এক ইনিংস খেলেছিলেন জহির আব্বাস। ১০০ রান করার পথে ১০৯ বল মোকাবেলা করা এই উঠতি তারকা সাতটি বাউন্ডারির পাশাপাশি একটি ছক্কা হাঁকান। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে এটি অবশ্য ১১তম পাকিস্তান কোনো ব্যাটসম্যানের সেঞ্চুরি। ১৩০ রানের জুটি গড়েন বাবর-শারজিল।

মোহাম্মদ হাফিজের ব্যাট থেকে ৩ রান আসে। ১০ রান করে রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে ফেরেন সোয়েব মালিক। মোহাম্মদ রিজওয়ান ৬ রান করে সাজঘরে ফেরেন। উমর আকমল ৪০ বলে ৪৬ রান করে বিদায় নেন। ১৭ রান আসে মোহাম্মদ আমিরের ব্যাট থেকে। ১৩ রান করেন হাসান আলি আর ১৭ রান করেন ওয়াহাব রিয়াজ।

অজিদের হয়ে চারটি উইকেট তুলে নেন মিচেল স্টার্ক। দুটি উইকেট পান প্যাট কামিন্স। আর একটি করে উইকেট দখল করেন জস হ্যাজেলউড, জেমস ফকনার এবং অ্যাডাম জাম্পা।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪২ ঘণ্টা, ২৬ জানুয়ারি, ২০১৭
এমআরপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।