নাথান লিওনের ঘূর্ণিতে ৭১.২ ওভারে ১৮৯ রানেই গুটিয়ে যায় ভারতীয়দের ইনিংস। লিওন একাই আটটি উইকেট দখল করেন।
এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ভারতীয় দলপতি বিরাট কোহলি। দলীয় ১১ রানে ওপেনার অভিনব মুকুন্দের (০) উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে তাকে এলবির ফাঁদে ফেলে অজিদের দিনের প্রথম ব্রেকথ্রু এনে দেন পেসার মিচেল স্টার্ক। এরপর চেতশ্বর পুজারার (১৭) বিদায়ে মধ্যাহ্ন বিরতিতে যায় দু’দল। তাকে পিটার হ্যান্ডসকম্বের ক্যাচে পরিণত করেন লিওন। রাহুল-পুজারার জুটিতে আসে ৬১। প্রথম সেশন শেষে স্কোরবোর্ডে ২৭.৫ ওভারে দুই উইকেট হারিয়ে ৭২ রান তোলে স্বাগতিকরা।
আবারো দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে ব্যর্থ হন দলপতি কোহলি। বেঙ্গালুরুতে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে মাত্র ১২ রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি। টানা তিন ইনিংসে (প্রথম টেস্টে ০, ১৩) হাসেনি কোহলির ব্যাট। কোহলিকে এলবির ফাঁদে ফেলে সতীর্থদের উদযাপনের মধ্যমনি বনে যান স্পিনার নাথান লিওন। দলীয় ৮৮ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় টিম ইন্ডিয়া।
এরপর জুটি গড়ে তোলেন আজিঙ্কা রাহানে আর লোকেশ রাহুল। লিওনের তৃতীয় শিকারে সাজঘরে ফেরেন রাহানে। এই জুটি স্কোরবোর্ডে আরও ৩০ রান যোগ করেন। দলীয় ১১৮ রানের মাথায় রাহানেকে (১৭) স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলেন লিওন। ভারতের পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে সাজঘরে ফেরেন করুন নায়ার (২৬)। প্রথম টেস্টের নায়ক স্টিভ ও’কিফ তার ঘূর্ণি জাদুতে নায়ারকে স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলে নিজের প্রথম উইকেট তুলে নেন। দলীয় ১৫৬ রানের মাথায় ভারত পঞ্চম উইকেট হারায়। লোকেশ রাহুলের সঙ্গে ৩৮ রানের জুটি গড়েন নায়ার।
দ্বিতীয় সেশন শেষে ভারত ৫৯ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে তোলে ১৬৮ রান।
তৃতীয় ও শেষ সেশনে নামার পর পরই বিদায় নেন রবীচন্দ্রন অশ্বিন। লিওনের চতুর্থ শিকারে বিদায় নেন ৭ রান করা অশ্বিন। ওয়ার্নারের তালুবন্দি হয়ে অশ্বিন ফেরার পথে ভারতের স্কোরবোর্ডে ওঠে ১৭৪ রান। এরপর দ্রুত ফেরেন রিদ্ধিমান সাহা। লিওনের পঞ্চম শিকারে স্টিভেন স্মিথের তালুবন্দী হন তিনি। দলীয় ১৭৮ রানে সপ্তম উইকেট হারায় ভারত।
দলের অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে সাজঘরের পথ ধরেন রবীন্দ্র জাদেজা। লিওন তার ষষ্ঠ শিকার বানান ৩ রান করা জাদেজাকে। উইকেটে টিকে থেকে একাই লড়াই চালিয়ে যাওয়া ওপেনার লোকেশ রাহুলকেও বিদায় করেন লিওন। শতক থেকে মাত্র ১০ রান দূরে থাকতে ম্যাট রেনেশর তালুবন্দী হন রাহুল। ৯০ রানের ইনিংস খেলার পথে রাহুল ২০৫ বল মোকাবেলা করে ৯টি বাউন্ডারি হাঁকান। ৭১.১ ওভারে রাহুল বিদায় নিলে শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আসেন ইশান্ত শর্মা। নিজের প্রথম বলেই লিওনকে উইকেট দিতে বাধ্য করেন ইশান্ত। ফলে, হ্যাটট্রিকের অপেক্ষায় থেকে ভারতীয় আট ব্যাটসম্যানকে একাই বিদায় করেন লিওন।
লিওন ২২.২ ওভারে ৪ মেডেন নিয়ে ৫০ রানের বিনিময়ে তুলে নেন আটটি উইকেট। একটি করে উইকেট তুলে নেন স্টার্ক ও স্টিভ ও’কিফ।
প্রথম ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৬ ওভারে কোনো উইকেট হারাতে হয়নি অস্ট্রেলিয়াকে। ৪০ রান তুলে দিন পার করে অজিরা। ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ২৩ ও ম্যাট রেনশ ১৫ রানে অপরাজিত থেকে দ্বিতীয় দিন ব্যাটিংয়ে নামবেন।
এর আগে ভারতের টানা ১৯ টেস্টে (ঘরের মাঠে টানা ২০) অপরাজেয় থাকার দৌড় থামায় অস্ট্রেলিয়া। চার ম্যাচ সিরিজের শুরুতেই বড় এক ধাক্কাই খায় বিরাট কোহলির দল। নিজেদের পাতানো ফাঁদেই আটকা পড়ে স্বাগতিকরা! স্পিনবান্ধব উইকেটে তিন দিনেই ম্যাচের নিষ্পত্তি ঘটে।
ভারতের মাটিতে টানা সাত টেস্টে হারের পর ৩৩৩ রানের উড়ন্ত জয়ে বাঁধভাঙা উল্লাসে মাতে অজিরা। বাঁহাতি স্পিন ঘূর্ণিতে একাই ১২টি উইকেট নিয়ে ভারতের ব্যাটিং লাইনআপ ধসিয়ে দেন ম্যাচ সেরা স্টিভ ও’কিফ। দুই ইনিংস মিলিয়ে টিম ইন্ডিয়ার সংগ্রহ ছিল ২১২ (১০৫ ও ১০৭)।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১০ ঘণ্টা, ৪ মার্চ, ২০১৭
এমআরপি