তৃতীয় দিনটি বাংলাদেশ নিজেদের করেই রেখেছে। আগের দিন ৫ উইকেট হারালেও তৃতীয় দিন আড়াই সেশনের মতো খেলে বাকি উইকেটগুলো হারায় টাইগাররা।
তৃতীয় দিন শেষে লঙ্কান ওপেনার দিমুথ করুনারত্নে ২৫ ও উপুল থারাঙ্গা ২৫ রানে অপরাজিত থাকেন।
সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ঐতিহাসিক ম্যাচ স্মরণীয় করে রাখেন সাকিব আল হাসান। সপ্তম উইকেটে মোসাদ্দেকের সঙ্গে গড়েন ১৩১ রানের পার্টনারশিপ। দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ১৫৯ বল মোকাবেলায় ১১৬ রানের ঝলমলে ইনিংস উপহার দেন সাকিব। তাতে ছিল ১০টি চারের মার। ১১৪তম ওভারে সুরাঙ্গা লাকমলের বলে মিডঅনে লক্ষণ সান্দাকানের তালুবন্দি হন। সাকিবের বিদায়ে ৪২১ রানে সপ্তম উইকেট হারায় টাইগাররা। দলের শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন অভিষিক্ত মোসাদ্দেক। হেরাথের বলে স্ট্যাম্পিংয়ের আগে ১৫৫ বলে সাতটি চার আর দুটি ছক্কায় তিনি করেন ৭৫ রান।
এর আগে পরপর দুই বলে মেহেদী হাসান মিরাজ (২৪) ও মোস্তাফিজুর রহমানের বিদায়ে শেষ ভরসা হয়ে থাকেন মোসাদ্দেক। ১২৯তম ওভারে মিরাজ-মোস্তাফিজকে এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১০০০তম উইকেট উদযাপন করেন রঙ্গনা হেরাথ। ৪৫৪ রানে নবম উইকেট হারায় টাইগাররা। মোসাদ্দেক-মিরাজের জুটিতে আসে ৩৩।
আগের দিন ৭ বলে তিনটি উইকেট হারিয়ে দ্বিতীয় দিনের শেষটা ছিল বিষাদময়। বাংলাদেশের স্কোর ২ উইকেটে ১৯২ থেকে হয়ে যায় ৫ উইকেটে ২১৪ (৬০ ওভার)। উইকেটে থিতু হয়েও ৫৭তম ওভারে লক্ষণ সান্দাকানের করা চতুর্থ বলে এলবিডব্লু হয়ে সাজঘরে ফেরেন ইমরুল কায়েস (৩৪)। পরের বলেই ‘নাইটওয়াচম্যান’ হিসেবে নামা তাইজুল ইসলামকে এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলেন বাঁহাতি স্পিনার সান্দাকান। পেসার সুরাঙ্গা লাকবলের করা পরের ওভারের চতুর্থ বলে ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার কাছে ক্যাচ দিয়ে সবাইকে হতাশ করেন সাব্বির রহমান (৪২)। ১৯৮ রানে পঞ্চম উইকেটের পতন ঘটে।
প্রথম দিন শেষ বেলায় দলের এমন পরিস্থিতির মুখে টি-২০ মেজাজে ব্যাট চালান সাকিব আল হাসান। ৮ বলে ১৮ রান করার পথে ভাগ্যগুনে দু’বার আউট হতে হতে বেঁচে গেছেন! ৭ বলে ২ রান করে মাঠ ছাড়েন অধিনায়ক মুশফিক। সাকিব-মুশফিকের ব্যাটে আগের দিনের শেষ বিকেলে তিন উইকেটের হতাশা ভুলে ঘুরে দাঁড়ায় টাইগাররা। কলম্বোর পি সারা ওভালে দু’জনের ৯২ রানের পার্টনারশিপ লিড নেওয়ার ভিত গড়ে দেয়। দলীয় ২৯০ রানে সুরাঙ্গা লাকমলের বলে বোল্ড হওয়ার আগে মুশফিকুর রহিমের ব্যাট থেকে আসে ৫২।
ওপেনিং জুটিতে ৯৫ রান তুলে কী ভালো শুরুটাই না এনে দিয়েছিলেন তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার। ১ রানের জন্য অর্ধশতক বঞ্চিত হন তামিম। টানা তিন ইনিংসে ফিফটি হাঁকিয়ে ফেরেন সৌম্য (৬১)। সৌম্য-ইমরুল মিলে ৩৫ ও ইমরুল-সাব্বিরের পার্টনারশিপে আসে ৬২।
লঙ্কানদের হয়ে চারটি উইকেট নেন রঙ্গনা হেরাথ, সান্দাকান। দুটি উইকেট নেন লাকমল।
এর আগে দিনেশ চান্দিমালের ১৩৮ রানের দায়িত্বশীল ইনিংসে সবকটি উইকেট হারিয়ে ৩৩৮ রান করে স্বাগতিকরা। নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন তিনি। শেষ তিন উইকেটে আসে ১৪৩। ধনাঞ্জয়া সিলভা ও নিরোশান ডিকওয়েলা দু’জনই ৩৪ রান করেন। শেষদিকে লঙ্কান দলপতি হেরাথ ২৫ ও লাকমল ৩৫ রানের কার্যকরী ইনিংস উপহার দেন।
মেহেদী হাসান মিরাজ তিনটি ও দু’টি করে উইকেট নেন মোস্তাফিজুর রহমান, শুভাশিস রায়, সাকিব আল হাসান। বাকি উইকেটটি তাইজুল ইসলামের।
ঐতিহাসিক টেস্ট দিয়ে দুই ম্যাচ সিরিজে সমতায় ফিরতে চোখ রাখছে টিম বাংলাদেশ। ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় গল টেস্টে (৭-১১ মার্চ) ২৫৯ রানে হার মানতে হয়েছিল।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫১ ঘণ্টা, ১৭ মার্চ, ২০১৭
এমআরপি