ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

টিভিতে নিজেকে দেখে ভয় পেয়েছিলেন সরফরাজ

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০১৭
টিভিতে নিজেকে দেখে ভয় পেয়েছিলেন সরফরাজ ছবি: সংগৃহীত

বেশিরভাগ ক্রিকেটার এমন প্রস্তাবে তালগোল পাকিয়ে ফেলেন। তবে, জুয়াড়িদের কাছ থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর সেই প্রস্তাব গ্রহণ না করে উল্টো বোর্ডকে জানিয়ে সাহসীকতার পরিচয় দিয়েছেন পাকিস্তানের তিন ফরমেটের দলপতি সরফরাজ আহমেদ। তবে তিনিও একটা সময় ভীষণ ভয় পেয়েছিলেন।

পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ চলাকালীন পাকিস্তানের দলপতির কাছে এসেছিল ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব। তবে, সেই প্রস্তাবে সাড়া দেননি পাকিস্তান দলপতি।

উল্টো নিজ বোর্ডের কাছে ঘটনার বিস্তারিত জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। বোর্ড সেটা জানিয়ে দেয় ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা আইসিসিকে। বাজিকরদের কাছ থেকে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব সঙ্গে সঙ্গেই দুর্নীতি দমন ইউনিটকে জানিয়ে দেওয়া হয়। তবে, বাজিকরের পরিচয় প্রকাশ করেনি পিসিবি। নিরাপত্তার ইস্যুতে দুবাইয়ে পাকিস্তানিদের টিম হোটেল পরিবর্তন করা হয়।

সরফরাজ জানান, ‘যা হবার হয়ে গেছে। আমার যা করার ছিল তাই করেছি। কিন্তু এই খবরটা জানানোর পর আমি ততোটা ভয় পাইনি। আমি অনেক বেশি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম যখন টেলিভিশনে নিজেকে দেখতে শুরু করলাম। আমাকে নিয়ে টেলিভিশনে এতো বেশি আলোচনা শুরু হয়েছিল যে এক পর্যায়ে আমি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। যা হোক আল্লাহর রহমতে সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে গেছে। যখন আপনি একটি সিরিজ খেলতে মাঠে নামবেন, তার আগে স্বাভাবিক থাকা দরকার। ' 

এমনিতেই স্পট ফিক্সিংয়ের কাণ্ডে শীর্ষে পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা। দেশটির গ্রেড ওয়ানের অনেক তারকা ক্রিকেটাররাই অতীতে ম্যাচ ফিক্সিংয়ে জড়িয়ে নিষিদ্ধ হয়েছেন। সম্প্রতি পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) ম্যাচ গড়াপেটার অভিযোগে জাতীয় দলের ক্রিকেটার শারজিল খান ও খালিদ লতিফকে পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ২০১০ সালে লর্ডসে স্পট ফিক্সিং কেলেঙ্কারিতে নিষিদ্ধ হন সালমান বাট, মোহাম্মদ আসিফ ও মোহাম্মদ আমির। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আমির ফিরলেও সালমান বাট আর মোহাম্মদ আসিফের এখনও ফেরা হয়নি।

পিসিবির এক কর্মকর্তা সরফরাজের বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশ করেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি জানান, ‘সরফরাজের এই সাহসিকতার প্রশংসা করেছে পিসিবি। আমরা কঠোরভাবেই এটা হতে দিতে চাই না। হোটেলে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। খেলোয়াড়দের ওপর নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে। আইসিসির নিয়মানুযায়ী এরকম ক্ষেত্রে আমরা খেলোয়াড়ের নাম প্রকাশ করতে পারি না। তবে, সরফরাজ প্রস্তাবটি পাওয়ার সাথে সাথেই সংশ্লিষ্টদের (আইসিসি) জানানোয় তারা সঠিক পদক্ষেপ নিয়েছে। সঠিকভাবেই ব্যাপারটি আয়ত্ত্বে আনা হয়েছে। জাতীয় দলের অধিনায়ক ও খেলোয়াড় হিসেবে সরফরাজ আমাদের মুখ উজ্জ্বল করেছে। এটা বাকি ক্রিকেটারদের সামনে উদাহরণ সৃষ্টি করবে বলেই আমরা মনে করি। ’

আরও জানানো হয়, বাজিকরদের চেনেন সরফরাজ। তারা নাকি দুবাই থেকেই তাদের কাজকর্ম চালায়। তাদের সাথে পাকিস্তান দলের আরও খেলোয়াড়দের পরিচয় আছে। আর এবারের বিষয়টি যথাযথ প্রক্রিয়া ও পদ্ধতি মেনেই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সরফরাজ তার সতীর্থদের দেখিয়েছে কিভাবে খেলাটিকে কলুষিত করার প্রচেষ্টা থেকে দূরে থাকতে হয়। এই ঘটনায় মাঠের বাইরে চলাচলে কিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে পাকিস্তান দলের ওপর।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৮ ঘণ্টা, ২৬ অক্টোবর ২০১৭
এমআরপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।