ঢাকা, রবিবার, ১৪ পৌষ ১৪৩১, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ক্রিকেট

সাইডবেঞ্চ থেকে জয়ের নায়ক

তাসনীম হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১৭
সাইডবেঞ্চ থেকে জয়ের নায়ক ছবি: উজ্জ্বল ধর / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম থেকে: বাদ পড়ার আগে একজন চার ম্যাচ খেলে সর্ব সাকুল্যে করেছিলেন ২৭ রান। দু’ম্যাচে হাত ঘুরিয়ে উইকেটের দেখা পাননি। আরেকজনও চার ম্যাচে সুযোগ পেয়ে পেয়েছিলেন মাত্র ২ উইকেট। তার বিপরীতে রান দিয়েছিলেন ৯০। একবারও ব্যাট করতে নামতে হয়নি।

একজন চার ম্যাচ পর, আরেকজন দু’ম্যাচ পর মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) সিলেট সিক্সার্সের বিপক্ষে সুযোগ পেয়েছেন একাদশে। তারা হলেন রংপুর রাইডার্সের জিয়াউর রহমান ও নাজমুল ইসলাম অপু।

প্রথমজনের ভূমিকা অলরাউন্ডার, খেলেছেন জাতীয় দলেও। দ্বিতীয়জন এখনও জাতীয় দলে না আসলেও যথেষ্ট সম্ভাবনাময়ী স্পিনার হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন।

এদিন তারা শুধু সুযোগ পাননি, দু’জনেই আজ দলের জয়ের নায়ক। দুজনেই এই এক ম্যাচ দিয়ে ছাপিয়ে গিয়েছেন বাদ পড়ার আগে খেলা চার ম্যাচের পুরো পারফরম্যান্সকেই।

ওপেনিংয়ে নামা জিয়াউর রহমান ক্রিস গেইলকে ‘ম্লান করে’ পাঁচ চার ও দুই ছয়ে খেলেছেন ১৮ বলে ৩৬ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। রানটা কম হতে পারে-কিন্তু ১৭৪ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে তার ব্যাটিংয়েই ভিত্তিটা তৈরি হয়েছিল রংপুর রাইডার্সের।

এর আগে ১৭৩ রান করা সিলেট সিক্সার্সের ইনিংসের সামনে চার ওভারে মাত্র ১৮ রান খরচায় তিনটি উইকেট তুলে নেন ম্যাচসেরা নাজমুল ইসলাম অপু। সিলেটের টপ অর্ডারের তিনজনকেই ফিরিয়েছেন তিনি। অন্যরা যেখানে প্রতি ওভারে সাতের ওপর করে রান দিয়েছেন সেখানে নাজমুল ভিন্ন। তার স্পিনের শিকার আন্দ্রে ফ্লেচার, নুরুল হাসান সোহান ও ওয়ানডাউনে নামা নাসির হোসাইন।

আগের চার ম্যাচে মোটে ২৭ রান করা জিয়াউর এই এক ম্যাচেই করলেন ৩৬। অন্যদিকে আগের চার ম্যাচে দুই উইকেট পাওয়া নাজমুল ইসলাম এই এক ম্যাচেই তুলে নিয়েছেন তিন উইকেট। যার কল্যাণে হয়েছেন ম্যান অব দ্যা ম্যাচ।

ছবি: উজ্জ্বল ধর / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমদিনশেষে দলের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসা নাজমুল ইসলাম অপুর কাছে নিজের মূল্যায়ন করতে বললে তিনি বলেন, ‘এখনও শিখছি আমি। এই বিপিএলে অনেক কিছু শিখছি। ’

আগের চার ম্যাচ ফ্লপ থাকার পর এই ম্যাচে এতোটা বদলে যাবার কারণ কী? এমন প্রশ্নে কোচ টম মুডি আর মোহাম্মদ রফিককেই কৃতিত্ব দিলেন ২৬ বছর বয়সী এই প্রতিভাবান বাঁহাতি, ‘আমি গত চার ম্যাচে দলে ছিলাম না। কিন্তু এসময় কোচ আমাকে নিয়ে এক্সট্রা কাজ করেছেন। কোচ বলেছেন কাজ করলে কিছু একটা হবে। ’

উদাহরণস্বরূপ বলতে গিয়ে অপু বলেন, ‘আমি টিমের অনুশীলনে সাইড ওয়েজ বল করতাম। কিন্তু জানতাম না কোন অ্যাঙ্গেলে করলে ভালো ফল পাবো। তখন কোচ হাতে কলমে দেখিয়ে দেন এই অ্যাঙ্গেলে করলে ভালো হবে। দেখলাম সেভাবে করলে ভালো হচ্ছে। ম্যাচেও সেভাবে বল করলাম। সফল হলাম। ’

জিয়াউর রহমানকে নিয়েও হয়তো কোচ আলাদা পরিকল্পনা করেছিলেন, আলাদাভাবে কাজ করেছিলেন। না হয় লোয়ার অর্ডারে খেলতে অভ্যস্ত জিয়াউরকে কেনো সরাসরি ক্রিস গেইলের সঙ্গে ওপেনিংয়ে নামিয়ে দেবেন? তাও ব্রেন্ডন ম্যাককালামের মতো তারকা ওপেনার দলে থাকতে?

অবশ্য জিয়াউর রহমানের বক্তব্য না পাওয়ায় সে বিষয়টি অস্পষ্টই থাকলো। তবে ব্যাটিং শেষে ফেরার সময় মাশরাফিকে দেখা গেছে তাকে পিঠ চাপড়ে অভিনন্দন জানাচ্ছেন। হাসি নিয়ে ডাগআউট থেকে একসঙ্গে হেঁটে হেঁটে ফিরছেন ড্রেসিংরুমে। তা হয়তো জিয়াউর রহমানকে নিয়ে নিজের ও কোচের পরিকল্পনা সফল হলো বলে!

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১৭
টিএইচ/টিসি/এমআরএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।