ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ক্রিকেট

ই-মেইল ফাঁস, কুম্বলেকে সরাতে কোহলির হাত!

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৮
ই-মেইল ফাঁস, কুম্বলেকে সরাতে কোহলির হাত! কুম্বলেকে সরিয়ে দেওয়ার পেছনে ভূমিকা ছিল কোহলির-ছবি: সংগৃহীত

ভারতের সাবেক কোচ অনিল কুম্বলেকে সরিয়ে দেওয়ার পেছনে বিরাট কোহলির হাত ছিল। এতদিন এই তথ্য অনেকে বিশ্বাস করলেও শক্ত কোনো প্রমাণ ছিল না। এবার সেই প্রমাণও হাজির। ফাঁস হয়ে গেছে ভারতীয় অধিনায়কের কুকীর্তি।

দলে ক্ষমতার ভারসাম্য নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে কুম্বলেকে সরিয়ে নিজের পছন্দের মানুষ রবি শাস্ত্রীকে কোচের দায়িত্বে আনতে গোপন তৎপরতা চালিয়েছেন কোহলি। এ সংক্রান্ত বেশ কিছু ই-মেইল ফাঁস হয়ে গেছে।

আর এই ফাঁস হওয়া ই-মেইল প্রকাশ করেছে ইএসপিএনক্রিকইনফো।

ইএসপিএনক্রিকইনফো দাবী করেছে, ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের (বিসিসিআই) প্রধান নির্বাহী রাহুল জহুরীর কাছে কুম্বলেকে নিয়ে একাধিক মেইল পাঠিয়েছেন কোহলি। এরপর পছন্দের প্রার্থী রবি শাস্ত্রীকে দায়িত্বে আনতে বোর্ডকে চাপ দিয়ে কোচের পদে আবেদন করার সময়ও বাড়িয়ে নিয়েছিলেন তিনি। আর এই কাজে তাকে সহায়তা করেন রাহুল জহুরী।

কোহলির কারণেই ১৭ টেস্টে মাত্র ১ হারের অসাধারণ রেকর্ড নিয়েও কোচের পদ থেকে সরে যেতে বাধ্য হন কুম্বলে। যদিও তাকে ফের আবেদন করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু দলকে টেস্ট র‍্যাংকিংয়ের শীর্ষে তুলে আনার পরও এই দায়িত্বে ফেরার কোনো আগ্রহ দেখাননি ভারতের সাবেক অধিনায়ক কুম্বলে। সরে যাওয়ার পর কুম্বলে নিজেও বলেছিলেন কোহলির সঙ্গে তার সম্পর্ক ভালো ছিল না। তাকে কোচ পদে যে কোহলি আর চাইছেন না তাও প্রকাশ করেন তিনি।

বোর্ডের সঙ্গে কোহলির এমন গোপন তৎপরতার তথ্য ফাঁস করেছেন ডায়না এডুলজি। ভারতের সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃক নিয়োগকৃত কমিটি অব অ্যাডমিনিস্ট্রেটরের (সিওএ) প্রধান বিনোদ রায়কে পাঠানো তার মেইলটি দু’দিন আগে ফাঁস হয়েছে। ডায়না নিজেও সিওএ’র সদস্য। সেই মেইলে তিনি জানিয়েছেন, কোচ নিয়োগে কিভাবে ক্রিকেট বোর্ডে কোহলি প্রভাব বিস্তার করেছিলেন।

এদিকে এসব কিছুর অবতারণা হয়েছে মূলত ভারতের নারী ক্রিকেট দলের কোচ নিয়োগ সংক্রান্ত সৃষ্ট জটিলতা নিয়ে। এবার কোচ নিয়োগ নিয়ে নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক হরমনপ্রিতের পছন্দের কোচ রমেশ পাওয়ারকে রেখে দেওয়া নিয়ে ঝামেলা বেধেছে।

ঘটনার সূত্রপাত গত নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। কোচ রমেশ পাওয়ারের কাছে হেনস্থা হওয়ার অভিযোগ তোলেন দলের সেরা তারকা মিতালি রাজ। তাছাড়া সেমিফাইনালের দল থেকে তাকে বাদ দেওয়া নিয়েও কোচের দিকে অভিযোগের আঙুল তোলেন তিনি। এর জেরে তাকে সরিয়ে দিতে বোর্ডের কাছে চিঠি লেখেন মিতালি। পাল্টা মিতালির বিরুদ্ধে অভিযোগের তোপ দাগেন রমেশ। এসব ঘটনার পর কোচের পাশে দাঁড়ান ডায়না এডুলজি। বিনোদকে পাঠানো মেইলে এডুলজি লিখেছেন, ‘ক্রিকেট অ্যাডভাইসরি কমিটি (সিএসি) চাওয়া সত্ত্বেও কুম্বলেকে কোচের পদে মেনে নেননি কোহলি। ‘

‘কোচ নিয়োগের কথা বলে নারী ক্রিকেটারদের মেইল পাঠানোতে আমি কোনো সমস্যা দেখিনি। তারা (হরমনপ্রীত ও স্মৃতি) তো নিজেদের মতামত জানিয়েছে মাত্র। বিরাট যখন কোচ বদলের জন্য বোর্ড সিইওকে ঘন ঘন এসএমএস করতেন তখন আপনারা মেনে নেন এবং পরিবর্তন আনেন। ’

‘কোহলিদের কোচের জন্য প্রথমে রবি শাস্ত্রী তো আবেদনও জানাননি। তখন বোর্ড আবেদন জানানোর তারিখ আরও কয়েকদিন বাড়িয়ে দেয়। শাস্ত্রী তখন আবেদন জানান। আর কোচও হয়ে যান তিনি। ’

‘কুম্বলের মতো গ্রেটকে কোচের পদ থেকে সরে যেতে হয়। রবি শাস্ত্রীকে কোচ করা হয় বিরাটের কথা মেনে। সেখানে সৌরভ-শচিন-লক্ষণকে নিয়ে গঠিত উপদেষ্টা কমিটির ভূমিকা ছিল নামে মাত্র। বোর্ডের সিইও নিয়ম ভঙ্গ করেছেন। ’

এদিকে ৩০ নভেম্বর মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া রমেশকে কোচ পদে রেখে দিতে বোর্ডের কাছে চিঠি দেন টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক হরমনপ্রীত কৌর এবং সহ-অধিনায়ক স্মৃতি মন্ধানা। এর মাঝে কোচ নিয়োগের বিজ্ঞাপন দেয় বোর্ড। কোচ বাছাইয়ের জন্য বিসিসিআই কপিল দেব, অংশুমান গায়কোয়াড এবং শান্তা রঙ্গস্বামীকে নিয়ে অ্যাড-হক কমিটিও গঠন করেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৮
এমএইচএম/এমএমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।