ঢাকা, শনিবার, ০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

সেলিনা শেলীর বিরুদ্ধে মৌলবাদী অপতৎপরতা: বিশিষ্টজনদের বিবৃতি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০২৩
সেলিনা শেলীর বিরুদ্ধে মৌলবাদী অপতৎপরতা: বিশিষ্টজনদের বিবৃতি কবি সেলিনা শেলী

চট্টগ্রাম: কবি সেলিনা শেলীকে হুমকি দেওয়া স্বাধীনতাবিরোধী মৌলবাদী চক্রের হীন তৎপরতার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন চট্টগ্রামের বিশিষ্টজনরা। তারা সরকার এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অবিলম্বে এই দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ এবং বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে অবিলম্বে সেলিনা আক্তার শেলীর বিরুদ্ধে নেওয়া পদক্ষেপ প্রত্যাহার করার আহ্বান জানান।

 

মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা এ আহ্বান জানান।  

বিবৃতিতে বলা হয়েছে-

দেশের বিশিষ্ট কবি ও চট্টগ্রাম বন্দর মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ সেলিনা আক্তার শেলীর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া একটি পোস্ট নিয়ে সম্প্রতি একটি মহল ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে।

বাঙালি মুসলমান চিরকাল পবিত্র রমজান মাসকে ‘মাহে রমজান’বা ‘রমজানুল মোবারক’ বলতে অভ্যস্ত। ইদানীং ‘রামাদান’ শব্দটির ব্যবহার তাঁর কাছে আরোপিত মনে হওয়ায় তিনি এ বিষয়ে ফেসবুকে একান্ত ব্যক্তিগত অভিমত প্রকাশ করেন।  

কিন্তু সেলিনা শেলীর সহজ, সরল বিশ্বাসে দেওয়া এই বক্তব্যকে অহেতুক বিকৃত ও অতিরঞ্জিত করে সুযোগসন্ধানী মৌলবাদী গোষ্ঠী অহেতুক পরিস্থিতি জটিল করার চেষ্টা করতে থাকে। কুশপুত্তলিকা দাহসহ মিছিল-সমাবেশ করে মৌলবাদী গোষ্ঠী তাকে নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিতে থাকে। নিরাপত্তাহীনতায় কবি সেলিনা শেলী ফেসবুকে দেওয়া তার পোস্টটি পরবর্তীতে প্রত্যাহার করে নেন। কিন্তু এরপরও এই গোষ্ঠী তাকে হুমকি-ধমকিসহ নানাভাবে হেনস্তা অব্যাহত রেখেছে।

এদিকে সমগ্র বিষয়টি যাচাই-বাছাই ছাড়াই চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ সেলিনা আক্তার শেলীকে তাঁর কর্মক্ষেত্র থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে এবং বিভাগীয় মামলা দায়ের করে।  

আমরা দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই, কবি সেলিনা শেলী ফেসবুকে দেওয়া পোস্টের মাধ্যমে কোনোভাবেই ইসলাম ধর্মের অবমাননা করেননি, পবিত্র রমজান মাসের বিরুদ্ধেও তার কোনো বক্তব্য সেই পোস্টে ছিল না কিংবা ধর্মীয় মনীষীদের নিয়েও কোনো কটূক্তি তিনি করেননি। এরপরও তিনি যেভাবে হেনস্থার শিকার হচ্ছেন, এটি একজন নাগরিকের ব্যক্তিস্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করার পাশাপাশি চরম অন্যায় আচরণ বলে আমরা মনে করি।

বিবৃতি দিয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাহফুজুর রহমান, খেলাঘর চট্টগ্রাম মহানগরী কমিটির সভাপতি প্রফেসর ডা. একিউএম সিরাজুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সাবেক সভাপতি প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার, বাংলাদেশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির মহাসচিব অধ্যক্ষ মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, মানবাধিকার সংগঠক নূরজাহান খান, লেখক-শিক্ষাবিদ আনোয়ারা আলম, কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক ফেরদৌস আরা আলীম, উন্নয়ন সংগঠক শিশির দত্ত, সাংস্কৃতিক সংগঠক ডা. চন্দন দাশ, অ্যাডভোকেট আকতার কবীর চৌধুরী, ইতিহাসের খসড়া সম্পাদক মুহাম্মদ শামসুল হক, কবি ও সাংবাদিক বিশ্বজিৎ চৌধুরী, এজাজ ইউসুফী, কামরুল হাসান বাদল, ওমর কায়সার, নাট্যজন কুন্তল বড়ুয়া, শিক্ষক হোসাইন কবির, সাংবাদিক ফারুক ইকবাল, রাজীব নূর, মহিলা পরিষদ চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক লতিফা কবীর, পরিবেশ সংগঠক শরীফ চৌহান, আবৃত্তিশিল্পী রাশেদ হাসান, সাংস্কৃতিক সংগঠক স্বপন মজুমদার, লেখক আহমেদ মুনির, সুমন টিংকু, কবি আসমা বীথি, রিমঝিম আহমেদ ও ফারহানা আনন্দময়ী।  

এ ছাড়া সম্মিলিত আবৃত্তি পরিষদ, উদীচী, খেলাঘর চট্টগ্রাম মহানগর, প্রমা আবৃত্তি সংগঠন, খেলাঘর চট্টগ্রাম মহানগরী, বোধন আবৃত্তি পরিষদ, কণ্ঠনীড়, নির্মাণ আবৃত্তি সংগঠন, বিভাষ, চট্টগ্রাম আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্র সাংগঠনিকভাবে এই বিবৃতির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০২৩
এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।