ঢাকা, শনিবার, ০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চট্টগ্রাম-৮ উপনির্বাচন: ভোটারদের নিরাপত্তা চান ইসলামিক ফ্রন্ট প্রার্থী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০২৩
চট্টগ্রাম-৮ উপনির্বাচন: ভোটারদের নিরাপত্তা চান ইসলামিক ফ্রন্ট প্রার্থী ...

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম-৮ উপনির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মনোনীত প্রার্থী সৈয়দ মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দীন।  

বুধবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে নগরের চেরাগী পাহাড় ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগর অফিসের সংবাদ সম্মেলনে এই আহ্বান জানান।

 

সৈয়দ মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দীন বলেন, জনগণ যাতে ভোট কেন্দ্র গিয়ে নিজের পছন্দ প্রার্থী ভোট দিতে পারে, সেটা নির্বাচন কমিশনকে নিশ্চিত করতে হবে। আমরা নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছি জনগণ ভোট দিতে চাই, জনগণ যাতে ভোট দিতে পারে, সেটার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

এখনো  পর্যন্ত নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করা সকল প্রার্থীদের সুহৃদ সর্ম্পক রয়েছে। কিন্তু কিছু বিছিন্ন ঘটনা ঘটছে। আমাদের ব্যানার চুরি ও পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে। কে বা কারা এই কাজ করছে আমাদের জানা নেই। নির্বাচন অফিসে মৌখিকভাবে জানিয়েছি। নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছি, নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত আমরা থাকব।  

প্রতিটি কেন্দ্রে আমাদের এজেন্ট থাকবে জানিয়ে চেয়ার প্রতীকের প্রার্থী সৈয়দ মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দীন বলেন, আমরা বিশ্বাস করি সরকার এই বার সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে নির্বাচন আয়োজন করবে। গণতন্ত্রের সার্থে সুন্দর নির্বাচন সরকার আয়োজন করবে। এই নির্বাচনে সরকারের ভাবমূর্তি জড়িত। আগামী আট মাস পরে জাতীয় নির্বাচন। নির্বাচন কমিশনে প্রতিটি ভোট কেন্দ্রেতে সিসি ক্যামেরার স্থাপনের আহ্বান জানানো হলেও কমিশনের বাজেটে সল্পতার কারণে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে না।  

জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আমি বোয়ালখালী শাকপুরার স্থানীয় বাসিন্দা। আমি এলাকায় প্রতিটি ভোটারের কাছে যাওয়ার চেষ্ঠা করতেছি। এখনো পর্যন্ত জনগণের প্রচুর সাড়া পাওয়া যাচ্ছে।  

চট্টগ্রাম-৮ উপ-নির্বাচনে সৈয়দ মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দীন বোয়ালখালী, চান্দগাঁও, পাঁচলাইশ ও বায়েজিদ নগরের নানা উন্নয়নসহ ১৩ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। ১৩ দফা নির্বাচনী ইশতেহার গুলো হলো- অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কালুরঘাট সেতু নির্মাণে সরকারি উদ্যোগ দ্রুত বাস্তবায়ন করার কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে এবং নতুন সেতু নির্মিত না হওয়া পর্যন্ত নিয়মিত বিদ্যমান কালুরঘাট সেতু সংস্কারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কর্ণফুলী নদীর স্বাভাবিক নাব্যতা রক্ষা, অবৈধ দখল উচ্ছেদ ও পানি দূষণের হাত থেকে কর্ণফুলীকে রক্ষায় কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। চট্টগ্রাম-৮ নির্বাচনী এলাকা যেহেতু নগর এবং গ্রামের সমন্বয়ে গঠিত সুতরাং গ্রাম শহরের সমন্বিত উন্নয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। চট্টগ্রাম-৮ এলাকায় চলাচলের অনুপযোগী সেতু-কালভার্ট ইত্যাদি দ্রুত মেরামত এবং পুন:নির্মাণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়াও চলাচলের অনুপযোগী রাস্তা-ঘাট দ্রুত মেরামত করার উদ্যোগ নেয়া হবে। নগরের চান্দগাঁও, পাঁচলাইশ, বায়েজিদ ও বোয়ালখালীর সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার পরিবেশ উন্নত করাসহ এলাকায় কমপক্ষে ২০টি প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয়কে সরকারী করণের উদ্যোগ নেয়া হবে। চট্টগ্রাম-৮ নির্বাচনী এলাকায় প্রতি ওয়ার্ড ও ইউনিয়নে ১টি করে মসজিদকে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের আওতায় এনে পরিচালনার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। চট্টগ্রাম-৮ নির্বাচনী এলাকার সংখ্যালঘুদের সার্বিক নিরাপত্তা বিধান, নির্বিশেষে ধর্ম চর্চার অবারিত সুযোগ প্রদান, এলাকায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সুরক্ষাসহ সংখ্যালঘুদের কল্যাণে বহুমাত্রিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। বোয়ালখালীর উপরের অংশে পাহাড় ও জঙ্গলে অবাধ বৃক্ষ নিধনের ফলে বন্য হাতিদের চলাচল খাদ্য ও আবাসস্থলের সংকটের কারণে প্রতিনিয়ত জনপদে বন্য হাতি আক্রমণ চালায়। যা প্রতিরোধে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জনগণের স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে বোয়ালখালীর বিদ্যমান স্বাস্থ্য কেন্দ্রের শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধি করে ন্যুনতম ২৫০ শয্যায় উন্নীত করা হবে এবং চিকিৎসাসেবা উন্নত করা হবে। নগরের চান্দগাঁও, পাঁচলাইশ ও বায়েজিদ এলাকার জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে বিজ্ঞানভিত্তিক পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থা, জলাবদ্ধতা ও জলজট নিরসনে বিশেষজ্ঞের মতামতের ভিত্তিতে পরিকল্পিত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নালা নর্দমাগুলোকে সংস্কারপূর্বক নিয়মিত পরিষ্কার করার ব্যবস্থা নেয়া হবে। চান্দগাঁও, পাঁচলাইশ ও বায়েজিদ এলাকার প্রতিটি ওয়ার্ডে নতুন একটি করে ফায়ার সার্ভিস স্থাপনের চেষ্টা করা হবে। দলগত হিংসাত্মক প্রতিযোগিতার পরিবর্তে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের জায়গা থেকে বুদ্ধিভিত্তিক রাজনৈতিক চর্চা ও ইতিবাচক বিতর্কের ক্ষেত্র তৈরীর জন্য অন্তত মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মুক্ত আলোচনার ব্যবস্থা করা হবে। শিক্ষার প্রাথমিক ভিত্তি হিসেবে সকল সরকারী প্রাইমারী স্কুল ও এবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষা কার্যক্রম নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষনের ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং সকল সরকারী প্রাইমারি স্কুল ও এবতেদায়ী মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের জন্য টিফিনের ব্যবস্থা করা হবে। কোনো রোহিঙ্গাকে চট্টগ্রাম-৮ নির্বাচনী এলাকার কোথাও অবৈধভাবে স্থায়ী বসবাসের সুযোগ দেওয়া হবে না।

চট্টগ্রাম-৮ আসনের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মুহাম্মদ কফিল রানার সঞ্চালনায় ইশতেহার পাঠ করেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব এ এস এম কাউছার। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের ভাইস চেয়ারম্যান কাজী মো. জসিম উদ্দিন, অধ্যক্ষ এম ইব্রাহিম আখতারী, কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সভাপতি স.ম.হামেদ হোসাইন, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ছৈয়দ হাফেজ আহম্মেদ, চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি আলহাজ্ব ওয়াহেদ মুরাদ, অর্থ সম্পাদক আনিসুর রহমান, সদস্য শাহেদুল আলম মুন্না, কাজী আহসানুল আলম ও আহমদ রেজা ।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০২৩ 
এমআই/পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।