ঢাকা, শনিবার, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

এক বছরেও হয়নি চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি

মিনহাজুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১৪ ঘণ্টা, মে ৫, ২০২৩
এক বছরেও হয়নি চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক

চট্টগ্রাম: এক বছর পরও চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা যায়নি। ২০ সদস্যের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ আংশিক কমিটি দিয়েই চলছে কার্যক্রম।

সভাপতির বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির ঘটনায় আট মাস আগে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি ফারুক আমজাদ খান ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ কে এম আজিমকে সদস্য করে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনও আলোর মুখ দেখেনি। এছাড়া সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে গত ফেব্রুয়ারি মাসে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে ক্ষুব্ধ নেতারা ঢাকায় গিয়ে নালিশ দেন।

এরপর গত ৩ মার্চ কমিটির নেতাদের ঢাকায় তলব করা হয়। বৈঠকে ২০ সদস্যের মধ্যে ১৫ জনই একাধিক অভিযোগ তুলে ধরেন ।  

এদিকে, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত না হওয়ায় হতাশ অনেক নেতা-কর্মী দলীয় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। একাধিক নেতার অভিযোগ, দলীয় বিধি মেনে বর্তমান কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়নি। ২০২২ সালের ৯ মার্চ তিন বছরের জন্য চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে দেবাশীষ নাথ দেবু সভাপতি এবং আজিজুর রহমান আজিজ সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ ও সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু এই কমিটির অনুমোদন দেন। কমিটিতে ১১ জন সহ-সভাপতি এবং তিনজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, তিনজন সাংগঠনিক সম্পাদক এবং প্রচার সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কাউন্সিলরদের মতামত অথবা ভোটের মাধ্যমে কমিটি গঠন করার কথা থাকলেও ২০২১ সালের ১৯ জুন অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলনের প্রায় ৯ মাস পর ঘোষিত এই আংশিক কমিটিই এখনও রয়ে গেছে। অথচ সাত দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার কথা ছিল। ফলে নগরের অন্য সব নেতাকে এখন নিজেদের সাধারণ কর্মী বা সাবেক নেতা হিসেবে পরিচয় দিতে হচ্ছে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। সাংগঠনিক পরিচয়ের অভাবে অনেকে দলীয় কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে উৎসাহ হারিয়ে ফেলছেন।

কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মহানগর পর্যায়ের নেতাদের মধ্যে আগে থেকেই দ্বন্দ্ব ছিল। এখন এক পক্ষের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বর্তমান মহানগর কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। আরেক পক্ষে আছেন কমিটির সহ-সভাপতি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক। ২০২১ সালের জুন মাসে সম্মেলন ঘিরে তাদের মধ্যে উত্তেজনাও বাড়ে। বিভক্তির জের ধরে পদপ্রত্যাশীদের নিয়ে দলে পৃথক বলয় তৈরি হয়। তবে কেন্দ্রের নির্দেশে সম্মেলন সফল করতে তারা একসঙ্গে কাজ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু বর্তমান কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করার পর তারা আবারও বিচ্ছিন্নভাবে কাজ করছেন।

চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি দেবাশীষ নাথ দেবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজী হননি।  

সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, মহানগর কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার বিষয় নিয়ে ঈদের পর কেন্দ্রীয় কমিটি সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা হয়েছিল। কিন্তু এখনও বসা হয়নি। আশা করি, আগামী ১০ মে’র মধ্যে কমিটি নিয়ে বৈঠক হবে।

স্বেচ্ছাসেবক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক (চট্টগ্রামের দায়িত্বপ্রাপ্ত) নাফিউল করিম নাফা বাংলানিউজকে বলেন,  চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি নিয়ে কোন ধরনের আপডেট আমার কাছে নেই। কমিটির বিষয়ে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অবগত আছেন।  

স্বেচ্ছাসেবক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক এ কে এম আফজালুর রহমান বাবু বাংলানিউজকে বলেন, চট্টগ্রাম মহানগরের পূর্ণাঙ্গ কমিটি নিয়ে নিয়মিত কথা হচ্ছে। তাদের সঙ্গে বৈঠকে কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১১০০ ঘণ্টা, মে ০৫, ২০২৩ 
এমআই/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।