ঢাকা, রবিবার, ১ পৌষ ১৪৩১, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

যুদ্ধাপরাধীদের নামে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বাতিলের প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে

সৈয়দ বাইজিদ ইমন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৪ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০২৩
যুদ্ধাপরাধীদের নামে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বাতিলের প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে ...

চট্টগ্রাম: স্বাধীনতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের নামে চট্টগ্রামে দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম বাতিলের প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষ।

বৃহস্পতিবার (২৫ মে) চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মুস্তফা কামরুল আখতারের সই করা এক চিঠিতে এ প্রস্তাব পাঠানো হয়।

 

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী হাটহাজারী উপজেলার ফজলুল কাদের চৌধুরী আইডিয়্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিবর্তে এলাকার নামানুসারে রহিমপুর আইডিয়্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজে পরিবর্তন করে প্রতিষ্ঠান প্রধান রেজুলেশন ও প্রত্যয়নপত্রসহ আবেদন করেছেন। এ আবেদনের প্রেক্ষিতে বিদ্যালয়ের নাম ফজলুল কাদের চৌধুরী আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিবর্তে রহিমপুর আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ পরিবর্তনের বিষয়ে সদয় সম্মতি জ্ঞাপনের জন্য পেশ করা হলো’।

অপর চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, চট্টগ্রাম নগরের বন্দর থানাধীন মাইজপাড়া মাহমুদুন্নবী চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের নামকরণে প্রাপ্ত তথ্য ও বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে নিশ্চিত হওয়া যায়, মাহমুদুন্নবী চৌধুরী শান্তি কমিটির প্রধান হিসাবে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী কর্মকাণ্ডে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন। বিদ্যালয় ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকে এ ব্যাপারে অবহিত করা হয়। আবেদনে উক্ত বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে মাইজপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় নামকরণ করার জন্য প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির যৌথ স্বাক্ষরে প্রস্তাব প্রেরণ করেন। ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ পতেঙ্গা থানা কমান্ড এর আবেদনে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা মেমোরিয়াল হাইস্কুল নামকরণের প্রস্তাব করা হয়।

এমতাবস্থায় সার্বিক বিবেচনায় মাইজপাড়া মাহমুদুন্নবী চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে মাইজপাড়া বিদ্যালয় অথবা শহীদ মুক্তিযোদ্ধা মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়-এ দুই নামের যে কোনও একটি নামকরণে সদয় সম্মতি জাপন করার জন্য সুপারিশসহ অনুরোধ করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক ড. বিপ্লব গাঙ্গুলী বাংলানিউজকে বলেন, চট্টগ্রামের দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নামের বিষয়ে অভিযোগ আসে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ওই দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তনের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।  

এদিকে কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার খৈয়ারবিল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে স্বাধীনতাবিরোধী প্রতিষ্ঠাতার ছবি রাখা হয়। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে এ ছবি সরানোর জন্য চিঠি দেয় চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড। এছাড়াও ফোন করে সে ছবি সরানোর জন্য বলেন চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক। কিন্তু এরপরেও ছবি না সরানোয় ৭ দিনের মধ্যে কেন এ ছবি সরানো হয়নি তার কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় শিক্ষাবোর্ড। একইসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাবিরোধী ব্যক্তির ছবি অপসারণের নির্দেশনাও দেওয়া হয়। কড়া নির্দেশনা পেয়ে সেই ছবি সরাতে বাধ্য হয় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি ইউএনওকে আলোচিত ব্যক্তির ব্যাপারে তদন্তের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিক চকরিয়া সরকারি কলেজে দাতা প্রতিষ্ঠাতার নামে স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকারের ছবি টাঙানোর অভিযোগ পাওয়া যায়। চকরিয়া কলেজের অধ্যক্ষকে সে ছবি সরানোর জন্য নির্দেশনা দেয় শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষ। পরে সেই ছবিও সরিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

ড. বিপ্লব গাঙ্গুলী বলেন, যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত ও সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির নামে কোনো বিদ্যালয়ের নামকরণ থাকলে তা পরিবর্তন করে ফেলতে হবে। চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের আওতাধীন যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে সেগুলোকে আমরা ইতিমধ্যে নির্দেশনা দিয়েছি। যারা এ নির্দেশনার ব্যত্যয় ঘটাবে, আমরা সেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২০ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০২৩ 
বিই/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।