চট্টগ্রাম: ২০২২ সালের ২৯ জুলাই। বেলা দেড়টার দিকে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী মহানগর প্রভাতী ট্রেন পর্যটকবাহী একটি মাইক্রোবাসকে ধাক্কা দিয়ে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে নিয়ে যায়।
এতে প্রাণ হারান ১২ জন। তারা হাটহাজারী উপজেলার আমানবাজারের পূর্ব খন্দকিয়া গ্রামের বাসিন্দা।
এ ঘটনায় খৈয়াছড়া রেলক্রসের গেটম্যান মো. সাদ্দাম হোসেন দায়ি হিসেবে চিহ্নিত হয়। ২০১৮ সালের ২ সেপ্টেম্বর ভোরে বারইয়ারহাট রেলক্রসিংয়ে গেট খোলা পেয়ে রেললাইনে উঠে পড়ে যাত্রীবাহী বাস। এ সময় চট্টগ্রামগামী ট্রেন বিজয় এক্সপ্রেস বাসটিকে ধাক্কা দিয়ে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে নিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় দুই বাসযাত্রীর, আহত হয় আরও ২০ জন।
এমন দুর্ঘটনা রোধে সেই রেলক্রসিংয়ে এখন তিনজন গেটম্যান নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে জানান বড়তাকিয়া রেল স্টেশন মাস্টার আক্তারুজ্জামান। তিনি বলেন, বর্তমানে এই রেলক্রসিংয়ে তিনজন গেটম্যান ৮ ঘণ্টা করে রোস্টার ডিউটি করছে।
মীরসরাই ট্র্যাজেডির এক বছরেও সন্তান হারানোর শোক ভুলতে পারেননি মা-বাবা, স্বজনরা।
সেদিন নিহত হন আজিম সাব রেজিস্ট্রার বাড়ির হাজী মোহাম্মদ ইউসুফের ছেলে গাড়িচালক গোলাম মোস্তফা নিরু (২৬), চিকনদন্ডী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মো. ইলিয়াস ভুট্টোর ছেলে মোহাম্মদ হাসান (১৭), একই ইউনিয়নের খন্দকার পাড়ার আবদুল হামিদের ছেলে কোচিং সেন্টার শিক্ষক জিয়াউল হক সজিব (২২), ৮ নম্বর ওয়ার্ডের আজিজ মেম্বার বাড়ির জানে আলমের ছেলে কোচিং সেন্টার শিক্ষক ওয়াহিদুল আলম জিসান (২৩), মজিদ আব্বাস চৌধুরী বাড়ির বাদশা চৌধুরীর ছেলে কোচিং সেন্টার শিক্ষক রিদুয়ান চৌধুরী (২২), মো. পারভেজের ছেলে সাগর (১৭), একই এলাকার আবদুল অদুদ মাস্টার বাড়ির আবদুল মাবুদের ছেলে ইকবাল হোসেন মারুফ (১৭), ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মোজাফফর আহমদের ছেলে মোসহাব আহমেদ হিশান (১৬), আবদুল আজিজ বাড়ির মৃত পারভেজের ছেলে তাসমির হাসান (১৭), মনসুর আলমের ছেলে মো. মাহিম (১৭), মদনহাটের জনি শীলের পুত্র শান্ত শীল (১৮), ২ নম্বর ওয়ার্ডের আবু মুছা খানের বাড়ির মোতাহের হোসেনের ছেলে মোস্তফা মাসুদ রাকিব (১৯)।
সেদিন দুর্ঘটনা থেকে ভাগ্যক্রমে বেঁচে যায় চিকনদন্ডী ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সবজি ব্যবসায়ী মো. মহিউদ্দিনের ছেলে এইচএসসি পরীক্ষার্থী মো. মাহিম (১৮)। দুর্ঘটনার পর সে ২ মাসেরও বেশি সময় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল।
তার পিতা মো. মহিউদ্দিন জানান, ছেলে এখনো স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারে না। তবুও প্রাণে বেঁচে ফিরেছে, এটাই আল্লাহর কাছে শুকরিয়া।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৪ ঘণ্টা, জুলাই ২৯, ২০২৩
বিই/টিসি