ঢাকা, সোমবার, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চট্টগ্রামে এক সপ্তাহে রেকর্ড ৬৬৪ মিমি বৃষ্টি, বিপর্যস্ত জনজীবন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১৭ ঘণ্টা, আগস্ট ৮, ২০২৩
চট্টগ্রামে এক সপ্তাহে রেকর্ড ৬৬৪ মিমি বৃষ্টি, বিপর্যস্ত জনজীবন ছবি: সোহেল সরওয়ার

চট্টগ্রাম: গেল চার দিনের টানা ভারি বর্ষণে বিপর্যস্ত চট্টগ্রাম। নগর তো বটেই বিভিন্ন উপজেলায় পানিতে ডুবে গেছে নিম্নাঞ্চলগুলো।

অতিবৃষ্টি ও জোয়ারের কারণে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় টানা চারদিন ধরে কার্যত পানিবন্দি ছিলেন নগরবাসী। গত এক সপ্তাহে চট্টগ্রামে ৬৬৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
যা বিগত কয়েক বছরের চেয়ে বেশি।  

মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) সকাল থেকে ভারি বর্ষণ না হলেও থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে চট্টগ্রামে।  

পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের তথ্যানুযায়ী, চট্টগ্রামে চলতি আগস্ট মাসের গত সাত দিনে ৬৬৪ মিলিমিটার (মিমি) বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর মধ্যে গত ৪ আগস্ট ৪২ দশমিক ৮ মিমি, ৫ আগস্ট ৬৪ দশমিক ২ মিমি, ৬ আগস্ট ২৩১ দশমিক ৫ মিমি এবং ৭ আগস্ট ২১৬ দশমিক ৪ মিমি মিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এছাড়া আবহাওয়া অফিসের আমবাগন কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী, গত ৪ আগস্ট ১২৫ মিলিমিটার, ৫ আগস্ট ৭৭ মিমি, ৬ আগস্ট ১৯৬ মিমি এবং ৭ আগস্ট ২০৮ মিমি মিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।  

পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ উজ্জ্বল কান্তি পাল বাংলানিউজকে বলেন, এমন বৃষ্টিপাত আগামীকালও থাকবে। এরপর থেকে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমতে পারে। তবে এ মাসের মাঝামাঝি সময়ে আবারও ভারি বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে।  

তিনি বলেন, জলবায়ু বিশ্লেষণে দেখা যায় চলতি আগস্ট মাসে পতেঙ্গা এলাকায় সাধারণত ৫৩০ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হওয়ার কথা। কিন্তু গত সাতদিনেই বৃষ্টিপাত হয়েছে ৬৬৪ মিলিমিটার।  

এদিকে, ভারি বর্ষণে প্লাবিত এলাকায় বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। একইসঙ্গে ঘরে পানি ঢুকে যাওয়ায় ব্যহত হচ্ছে রান্নাসহ দৈনন্দিন কাজকর্ম। পানি কিছুটা কমে আসলেও এখনও দুর্ভোগ কমেনি নগরবাসির।  

মঙ্গলবার সকালে চকবাজার, বাকলিয়া, বাদুরতলা সহ বেশকিছু এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, গত চারদিনে জোয়ার ও বৃষ্টিতে প্রায় প্রতিটি দোকানে ও বাসায় পানি ঢুকেছে। নষ্ট হয়েছে অনেক দোকানের মালামাল। অনেক বাসার নিচতলায় পানির মোটর নষ্ট হয়ে গেছে । এতে ভবনে পানি তুলতে না পারায় সংকট তৈরি হয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট।

স্থানীয়দের অভিযোগ, নালা-নর্দমা নিয়মিত পরিষ্কার না করায় অতিবৃষ্টিতে জলজট সৃষ্টি হয়েছে। এতে দোকানপাট ও বাসাবাড়িতে পানি ঢুকে পড়ে। সিটি করপোরেশন উদ্যোগ না নেওয়ার কারণে এ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে নগরবাসীকে।  

চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার বাসিন্দা আশফাকুল হক সামির বাংলানিউজকে বলেন, টানা বৃষ্টিতে পুরো এলাকা ডুবে ছিল। এখনও বেশকিছু রাস্তায় পানি জমে আছে। কাদা আর আবর্জনায় রাস্তায় চলাচলে দুর্ভোগ চরমে।  

হামজারবাগ এলাকার বাসিন্দা জাহেদুল ইসলাম আরিফ বাংলানিউজকে বলেন, বৃষ্টিতে এলাকায় সোমবার পর্যন্ত কোমর সমান পানি ছিল। রাতে পানি কিছুটা নেমেছে। যদি আজকে (মঙ্গলবার) টানা আধাঘণ্টাও বৃষ্টি পড়ে আবার পানি জমে যাবে। কারণ নালাগুলো আবর্জনায় ঠাসা।

অন্যদিকে, টানা বৃষ্টি আর জলজটে নাজেহাল নগরের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মঙ্গলবার বন্ধ ঘোষণা করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি)।

বাংলাদেশ সময়: ১৩০০ ঘণ্টা, আগস্ট ৮, ২০২৩
এমআর/পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।