ঢাকা, সোমবার, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

লাল সালুতে বাঁধা কাঞ্চননগরের পেয়ারা

সোহেল সরওয়ার, সিনিয়র ফটো করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০২৩
লাল সালুতে বাঁধা কাঞ্চননগরের পেয়ারা ছবি: বাংলানিউজ

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পটিয়া থেকে চন্দনাইশের সাত-আট জায়গায় প্রতিদিন ভোর থেকে বসছে পেয়ারার হাট। দক্ষিণ চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় পেয়ারার হাট বসে চন্দনাইশের রওশন হাটে।

মহাসড়কের দুইপাশে লাল সালুতে বাঁধা পেয়ারার সারি সারি ভার নিয়ে বসে থাকেন বিক্রেতারা।  

ব্যবসায়ীদের হিসাবে, প্রতিদিন ৫শ ভার পেয়ারা বিক্রি হয় এ বাজারে।

এখানকার পেয়ারা চট্টগ্রাম নগর, কক্সবাজার, পেকুয়া, চকরিয়া, টেকনাফ, হাটহাজারী, বাঁশখালী, লোহাগাড়া, নোয়াখালী, কুমিল্লা, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় নিয়ে যান ব্যবসায়ীরা।

চন্দনাইশ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার প্রায় ৭৫৫ হেক্টর পাহাড়ি জমিতে এবার পেয়ারার চাষ হয়েছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আজাদ হোসেন বলেন, বিভিন্ন ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা নিয়মিত মাঠে গেছেন। সবসময় কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। জ্যাম-জেলি উৎপাদনকারী ব্যবসায়ীরা যদি পেয়ারা চাষিদের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদী চুক্তি করেন তাহলে কৃষকরা ন্যায্যমূল্য পাবেন।

চাষিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, কাঞ্চননগরের পেয়ারা আকারে ছোট হলেও স্বাদ এবং পুষ্টিতে ভরপুর। এবার পেয়ারার বাম্পার ফলন হয়েছে। এই পেয়ারা পাওয়া যাবে অক্টোবরের শেষ পর্যন্ত। লাল সালুতে মোড়ানো ব্যাগের পেয়ারা বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৮০০ টাকায়। তবে সম্প্রতি টানা বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন পেয়ারা চাষিরা। হিমাগারের অভাবে অনেক পেয়ারা বাগানেই নষ্ট হচ্ছে। যারা আগাম লাখ টাকা নিয়ে বাগান কিনেছেন তাদের পাহাড় থেকে পেয়ারা বাজার পর্যন্ত আনতে প্রতি ভারে  শ্রমিকদের খরচ দিতে হয় ২০০-৩০০ টাকা।

পেয়ারা চাষ করে বদলে গেছে চন্দনাইশের হাজারও চাষির ভাগ্য। কাঞ্চননগর থেকে দোহাজারী, কাঞ্চন নগর, হাসিমপুর ও জামিজুরী ইউনিয়নের প্রায় ৬০ ভাগ মানুষ পেয়ারা চাষ করেন।

কাঞ্চন নগর এলাকার পেয়ারা চাষি শামশুল আলম বলেন, চন্দনাইশে পাহাড়ের কোলঘেঁষে প্রায় পাঁচ হাজারের অধিক পেয়ারা বাগান রয়েছে। পাহাড়ের অধিকাংশ জমি অনাবাদী ছিল, কিছু জমিতে হতো জুম চাষ। বিগত দুই দশক ধরে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এসব অঞ্চলের পেয়ারা চাষ। ফলন ও চারা রোপণের পর তেমন খরচ না থাকা এবং লাভজনক হওয়ায় অনেকেই এখন এ চাষের দিকে ঝুঁকে পড়েছে।  

চাষি ওসমান গনি বলেন, প্রায় ১০ একর জমিতে পেয়ারা চাষ করেছি। জনপ্রতি ৭ থেকে ৮শ টাকা মজুরিতে ৭ জন শ্রমিক বাগানে কাজ করেছে। ফলন মোটামুটি ভালো হয়েছে।

মূলত বন বিভাগের মালিকানাধীন পাহাড়ি জমি লিজ নিয়ে পেয়ারা চাষ করা হচ্ছে। আবার অনেকে কেনা জায়গায় পেয়ারা চাষ করছেন। চারা রোপণ থেকে শুরু করে ফল আহরণ পর্যন্ত রাসায়নিক সার কিংবা কীটনাশক ব্যবহার করা হয় না বলে জানান চাষিরা। পেয়ারার মৌসুমে চন্দনাইশের ছৈয়দাবাদের খাঁ-হাট, রওশন হাট, বাগিচা হাট, বাদামতল ও দোহাজারীসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পাইকারি ব্যবসায়ীরা আসেন।

বাংলাদেশ সময়: ১১২০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০২৩ 
এসএস/এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।