ঢাকা, বুধবার, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

‘মুখপোড়া হনুমান’ পাচারের চেষ্টা, ৩ জন গ্রেপ্তার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪০ ঘণ্টা, নভেম্বর ৪, ২০২৩
‘মুখপোড়া হনুমান’ পাচারের চেষ্টা, ৩ জন গ্রেপ্তার

চট্টগ্রাম: নগরীর বাকলিয়া থানার নতুন ব্রিজ এলাকা থেকে পাঁচটি বিলুপ্ত প্রজাতির ‘মুখপোড়া হনুমান’ উদ্ধার করেছে বাকলিয়া থানা পুলিশ। এ সময় পাচারে জড়িত থাকার অভিযোগে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালকসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এর আগে গত ৩০ অক্টোবর একই এলাকা থেকে বিপন্ন প্রজাতির দুইটি গোর খোদককে উদ্ধার করেছিল পুলিশ।  

শনিবার (৪ নভেম্বর) দুপুরে নগরীর চেরাগী পাহাড়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) উপকমিশনার (দক্ষিণ) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান ডিসি (দক্ষিণ) মোস্তাফিজুর রহমান।

 

গ্রেপ্তাররা হলেন- কক্সবাজার জেলার চকরিয়া থানার ফাসিয়াখালী ইউনিয়নের দিগরপান খালী স্কুলের পাশে মৃত আবদুল মালেকের ছেলে মো. সেলিম (৫৩), একই থানার চকরিয়ার পৌরসভার মৌলভীর চরের আবুল খায়েরের বাড়ির ফয়েজ আহাম্মদের ছেলে নুরুল কবির (৩১) ও একই জেলার মহেশখালী থানার শাপলাপুর বাড়িয়াছড়ি এলাকার আলতাফ হোসেনের ছেলে সালাউদ্দিন কাদের প্রকাশ হেলাল উদ্দিন (৩৫)।

ডিসি (দক্ষিণ) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সাম্প্রতিক বন্যপ্রাণী বিলুপ্ত ও পাচার প্রতিরোধে বিভিন্ন সংস্থার বৈশ্বিকভাবে কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থার (ইন্টারপোল) তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার বিকেলে সাড়ে ৩টার দিকে নগরের বাকলিয়া থানার নতুন ব্রিজ এলাকায় অভিযান চালিয়ে পাঁচটি মুখপোড়া হনুমান উদ্ধার করা হয়। পাচারকারীরা পার্বত্য চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার থেকে এসব বিরল বন্যপ্রাণী সংগ্রহ করে। এরপর বিভিন্ন জনের হাত ধরে ভারত সীমান্ত হয়ে ইউরোপ-আমেরিকা পাচার হচ্ছে।  

সিএমপির অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) নোবেল চাকমা বাংলানিউজকে বলেন, গ্রেপ্তার তিনজনই বন্যপ্রাণী পাচার চক্রের সক্রিয়া সদস্য। তারা কম দামে বন্যপ্রাণীগুলো সংগ্রহ করে বেশি দামে বিক্রি করে থাকে। যে প্রাণী যত বেশি বিরল তত দাম বেশি। তাই লোভে পড়ে পাচারকারীরা এসব প্রাণী ধরে বিদেশে পাচার করে। পাচার চক্রে আরও যারা জড়িত তাদেরকেও গ্রেপ্তার করতে পুলিশের অভিযান চলছে।  

তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাচারকারীরা জানিয়েছে কক্সবাজারের মহেশখালী থেকে হনুমান পাঁচটি চট্টগ্রামে নিয়ে আসা হয়। এরপর চট্টগ্রামের শাহ আমানত সেতু পার হয়ে বাকলিয়ায় ইমরান নামে এক ব্যক্তির কাছে দেওয়ার কথা ছিল। ইমরানকে গ্রেপ্তার করতে কয়েকটি স্থানে অভিযান চালানো হয়েছে। উদ্ধার হওয়া ‘মুখপোড়া হনুমান’ গুলো ভারতের সীমান্ত দিয়ে পাচারের পরিকল্পনা ছিল।

বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহিম বাংলানিউজকে বলেন, গ্রেপ্তার তিনজনের মধ্যে মো. সেলিমকে বাঁশখালী থানায় চারটি ধনেশসহ গত ২৪ মে গ্রেপ্তার হওয়ায় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২ সাল মোতাবেক ৬ মাসের কারাদণ্ড প্রদান করে। ১ মাস ২ দিন কারাভোগ করার পরে কারাগার থেকে বের হয়ে পুনরায় বন্যপ্রাণী পাচারে জড়িয়ে পড়ে। কম পরিশ্রমে বেশি টাকার লোভে এই কাজটা করে থাকে।  

ওসি আরও বলেন, গত ৩০ অক্টোবর মহাবিপন্ন দুইটি গোরখদকসহ এ চক্রের আরও দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। গ্রেপ্তার তিনজনের বিরুদ্ধে বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের অনুযায়ী গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হবে। প্রাণীগুলোকে আদালতের মাধ্যমে আইন অনুযায়ী বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হবে। গ্রেপ্তার সালাউদ্দীন কাদের  মহেশখালী থানায় তিনটি মামলা রয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩২ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৪, ২০২৩
এমআই/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

চট্টগ্রাম প্রতিদিন এর সর্বশেষ