ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

আমার বিরুদ্ধে অনিয়মের প্রমাণ দিতে পারলে রাজনীতি ছেড়ে দেব: নদভী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪১ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০২৪
আমার বিরুদ্ধে অনিয়মের প্রমাণ দিতে পারলে রাজনীতি ছেড়ে দেব: নদভী ...

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম-১৫ (লোহাগাড়া ও সাতকানিয়া আংশিক) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভী বলেছেন, গত দুই জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমি সংসদ সদস্য থাকাকালীন সাতকানিয়া ও লোহাগাড়ায় জামায়াতপন্থি ওয়ায়েজদের স্থান হয়নি। গত দুই মাসে সাতকানিয়া-লোহাগাড়ায় জামায়াতপন্থি ওয়ায়েজদের মাধ্যমে বিভিন্ন স্থানে ওয়াজ মাহফিল শুরু গেছে।

তার ইতোমধ্যে এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী সাতকানিয়া-লোহাগাড়ায় এসে সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে গেছে। মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশকে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা প্রদানকারী বন্ধুপ্রতীম রাষ্ট্র ভারতকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করেছে।
 

বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই দাবি করেন।  

সাতকানিয়া ও লোহাগাড়ায় উপজেলা নির্বাচনের মাঠ জামায়াতের পক্ষে নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে গেছে জানিয়ে নদভী বলেন, জামায়াতপন্থি ওয়ায়েজ তারেক মনোয়ার, আমীর হামজা, কামরুল ইসলাম সাঈদ আনসারী, আয়ুব আলী আনসারীর মতো সরকারবিরোধী ওয়ায়েজ মাহফিলে অংশ গ্রহণ করছেন। আমি সংসদ সদস্য থাকতে বিতর্কিত কোনো ব্ক্তা মাহফিলে এসে উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রচার করতে পারেনি। আমি কখনোই সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদীদের এখানে প্রশ্রয় দিইনি। এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী আমার পরিবার নিয়ে মাহফিলে বসে জঘন্য ভাষায় বিষোদগার করেছে।

নদভী বলেন, আমি এই দেশে ২৬ বছর ধরে হাজার হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছি। হাজারো মসজিদ, ওজুখানা, মাদ্রাসা কমপ্লেক্স নির্মাণ করেছি। ৩০ হাজারের মত ঘরবাড়ি নির্মাণ ও সংস্কার করেছি আরববিশ্বসহ পৃথিবীর নানা দেশের সহায়তায়। বিভিন্ন দূর্যোগে এ পর্যন্ত ৫ লাখ মানুষের হাতে আল্লামা ফজলুল্লাহ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে আমি খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিয়েছি। কোরবানির উপলক্ষে হাজার হাজার গরু-ছাগল বিভিন্ন এলাকায় পৌঁছে দিয়েছি। ২০২২ সালে সিলেটে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার পর সাড়ে ৬ হাজার পরিবারকে ঘর সংস্কারের কাজ করে দিয়েছি। আর সে কি-না বলে বেড়ায় আমি আমার এলাকার মানুষ থেকে টাকা নিয়েছি। নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে বিষোদগার করতে গিয়ে, সরকারের বিরুদ্ধে জনগণকে বিভ্রান্ত করতে ডা. মিনহাজ নির্বাচনী স্লোগান দিয়ে বলেছে, ‘বহুত দিন খাইও, আর ন হাইও’। আমি তাকে বলি, ‘দেশে আমি এনেছি, তোমরা লুটেপুটে খেয়েছো’। কেউ যদি প্রমাণ দিতে পারে সরকারি কোনো প্রকল্পের এক টাকার অনিয়ম আমার হাত দিয়ে হয়েছে, আমি রাজনীতি করা ছেড়ে দেব। এই লোকগুলো বিমানের টিকিটের ভুয়া ছবি বানিয়ে ফেসবুকে প্রচার করেছে, আমরা দেশ ছেড়ে চলে গিয়েছি। আসলে ভয় পেয়ে তারা এসব অপপ্রচার করে বেড়াচ্ছে। আমি জনগণের খেদমত করছি ২৫ বছর ধরে, যা আমৃত্যু অব্যাহত থাকবে। রাজনীতি করতে হলে জনমুখী হতে হবে। জনগণের উন্নয়ন চিন্তা করতে হবে।

সংসদ নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের নেতারা বাড়িতে যেতে পারছেন না অভিযোগ করে আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভী বলেন, নির্বাচনি প্রচারণার সময় আমার স্ত্রী ও মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেত্রী রিজিয়া রেজা চৌধুরীর ওপর হামলা করা হয়। ওই ঘটনায় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের অন্তত ২৫ নেতাকর্মী আহত হয়। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হলে প্রশাসন থেকেও সন্ত্রাসীদের নাম বাদ দিতে চাপ দেয়।  

গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর চট্টগ্রাম-১৫ আসনে ঈগল প্রতিক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী এমপির প্রত্যক্ষ মদদে তার উগ্র সমর্থক কর্তৃক সাতকানিয়া-লোহাগাড়ায় নৌকা প্রতীকের পক্ষে কাজ করার অপরাধে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের উপর হামলা, বাড়ি-ঘর ভাংচুর, মিথ্যা মামলা দায়ের ও ৬ জন হত্যা করা হয়েছে নদভীর অভিযোগের ভিত্তিতে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে নদভী কখন, কোথায়, কতজনের উপর হামলা, বাড়ি-ঘর ভাংচুর,মামলা ও ৬ জন হত্যার বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে পারেননি।  

সংবাদ সম্মেলনে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. ইদ্রিস, আওয়ামী লীগ নেতা গণি সম্রাটসহ নদভীর পক্ষে নেতাকর্মীরা ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩০ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০২৪
এমআই/পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।