ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

বিএনপি সংখ্যালঘু শব্দে বিশ্বাস করে না, আমরা সবাই বাংলাদেশি: আমীর খসরু

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০২৪
বিএনপি সংখ্যালঘু শব্দে বিশ্বাস করে না, আমরা সবাই বাংলাদেশি: আমীর খসরু ...

চট্টগ্রাম: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়া আমাদেরকে পরিষ্কারভাবে বলেছেন, বিএনপি সংখ্যালঘু বলে কোন শব্দে বিশ্বাস করেনা। কারণ বাংলাদেশের সংবিধান সবাইকে বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে ঘোষণা করেছে।

বাংলাদেশের সংবিধান প্রত্যেকটা নাগরিককে ধর্মীয়, সামাজিক, রাজনৈতিক সব ক্ষেত্রে সমান অধিকার দিয়েছে। বাংলাদেশের সীমান্তের মধ্যে যারা বসবাস করে তাদের সবাইকে সমানভাবে দেখতে হবে।
এটা নিশ্চিত করা শুধু রাষ্ট্রের দায়িত্ব নয়। যারা রাজনীতি করে সমাজনীতি করে সকলের দায়িত্ব, সকল ধর্মের। আমি এখান থেকে বলব চট্টগ্রামে যদি কোনো হিন্দু মন্দিরে আক্রমণ হয়ে এটার দায় আমাদেরকে নিতে হবে। এই দায় কিন্তু এড়ানো যাবে না। আমার জানামতে চট্টগ্রাম মহানগরীতে কোনো মন্দিরে হামলা বা আক্রমণ হয়নি। আমি ঢাকা থেকে আমাদের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছি সব সময়। মন্দিরের বিষয়ে আমি খোঁজখবর নিয়েছি। কমিটিও করা হয়েছে, তারা আমাকে ছবিও পাঠিয়েছে। আমি সেখান থেকে মনিটরিং করেছি।

রোববার (১৮ আগস্ট) দুপুরে চট্টগ্রামের ইসকন প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দির ও রামকৃষ্ণ মিশন পরিদর্শনকালে তিনি একথা বলেন। তিনি নগরের প্রবর্তক মোড়ে ইসকন মন্দির পরিদর্শন করেন। ইসকন প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলে সার্বিক অবস্থার খোজ খবর নেন। পরে তিনি অসকার দিঘির পাড়স্থ রামকৃষ্ণ মন্দির পরিদর্শন করেন।

তিনি বলেন, পরিচয়ের রাজনীতি আমরা করি না। আমাদের সবার পরিচয় হচ্ছে আমরা বাংলাদেশি। পরিচয় দিয়ে কোন রাজনীতি হয় না। অন্য পরিচয় এনে যদি বাংলাদেশের রাজনীতি করতে হয়, তাহলে যে পরিচয় এনে রাজনীতি করবে তাদের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হবে। এটা আমাদেরকে বুঝতে হবে। কারণ আমাদের ভ্রাতৃত্ববোধ, সাম্প্রদায়িক যে চেতনা, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ভাবনা, সম্প্রীতি পরস্পর সম্মানবোধ সেখান থেকে সরে যাওয়ার অন্য কোন সুযোগ নাই। এবং সেই যুক্তির উপরে একটা স্বৈরাচারকে বিদায় করেছে৷ সে সবকিছু ভেঙ্গে ছুড়ো চুরমার করে দিয়েছে। সেই ভাবনা ও আকাঙ্ক্ষা থেকে মানুষ স্বৈরাচার দুর্নীতিবাজকে বিতাড়িত করেছে। পরিচয়ের রাজনীতির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে যে খারাপ একটা চিত্র তৈরি করা হয়েছে। সেটা থেকে সবাইকে বিরত থাকতে হবে। আপনাদেরকে ব্যবহার করে রাজনীতির যে একটা চিত্র তুলে দেওয়া হয় সেটা তো ক্ষতিকর, লাভের কিছু হয় না।  

তিনি বলেন, বাংলাদেশের নতুন প্রজন্ম ৬৫% মানুষ ২৫ বছরের নিছে বর্তমানে। এরা কিন্তু দুনিয়াদারি বুঝে এবং জানে। সবার হাতে হাতে এখন একটা করে মোবাইল ফোন রয়েছে। সবাই সারা দুনিয়া দেখতেছে এখন। এর মধ্যে আমি এখানে বক্তব্য রাখছি একই সময়ে দুনিয়াতে আরও ৫০-১০০ টা বক্তব্য চলছে। আমার বক্তব্য ভালো না লাগলে দুই মিনিট পর সুইচ অফ করে আরেক দিকে চলে যাবে। মানুষকে আর বোকা বানানোর সময় নাই। সব কিছু বিশ্ব দেখেছে।  

তিনি বলেন, খারাপ ভালো বিবেচনা করার যোগ্যতা আমাদের নতুন প্রজন্মের রয়েছে। যারা প্রাণ দিয়ে স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়েছে। আরো প্রাণ দিতে হলে আরো মারা যেত। আরো কিছুদিন থাকলে ৫০০ থেকে ১০০০ জন আরও মারা যেত। কিন্তু কেউ সরে দাঁড়াবে না। এই লোকগুলোর এইযে সেক্রিফাইস। এর আগে গত ১৭ বছর এখানে যারা আছে সবার বিরুদ্ধে হাজার হাজার মামলা রয়েছে। ৬০ লাখে উপরে মিথ্যা মামলা।  

তিনি আরো বলেন, ভোট ও নির্বাচন এগুলো মানুষের ব্যক্তিগত ব্যাপার। এখানে আমাদের কোন বিষয় নেই, এটা যার যার নিজস্ব চিন্তা। কিন্তু সেটাকে যদি রাজনীতিকরণ করে একটা গোষ্ঠীকে ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়, তারা সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত। কিন্তু এটি যারা করে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। তারা তো নাই, অনেকে পালিয়ে গিয়েছে। সুতরাং আমাদেরকে এই বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে। আমাদের পক্ষ থেকে আমি আবারও বলতে চাই- বাংলাদেশী চিন্তা চেতনা মূলক যে রাজনীতি অন্তর্ভক্তিমূলক না রাজনীতি। এই চেতনা থেকে আমরা অতটুকু সরে দাঁড়াবো না। আমি এটাও বলছি আপনাদেরকে, অন্য কোন জায়গায় যদি এ ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করে। কিন্তু বাংলাদেশে আমরা হতে দেব না। আমি দৃঢ়ভাবে এ কথাটা বলছি।

এসময় তার সঙ্গে ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, মহানগর বিএনপির আহবায়ক এরশাদ উল্লাহ, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান, ইসকন প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের অধ্যক্ষ লীলারাজ গৌর দাস ব্রহ্মচারী, পুন্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী, চট্টগ্রাম রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ স্বামী শক্তিনাথানন্দজী, সাংবাদিক বিপ্লব পার্থ, রামকৃষ্ণ মিশনের সহ সভাপতি তাপস হোড়, প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক দারুব্রহ্ম জগন্নাথ দাস ব্রহ্মচারী, মহানগর বিএনপি নেতা আলহাজ্ব এম এ আজিজ, এস এম সাইফুল আলম, শফিকুর রহমান স্বপন, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, শাহ আলম, আবদুল মান্নান, জয়নাল আবেদীন জিয়া, এড. মফিজুল হক ভুঁইয়া, আবুল হাশেম, আনোয়ার হোসেন লিপু, মন্জুর আলম চৌধুরী মন্জু, মো. কামরুল ইসলাম, মহানগর যুবদলের সভাপতি মোশাররফ হোসেন দিপ্তী, সম্মিলিত পেশাজীবি পরিষদের সদস্য সচিব ডা. খুরশীদ জামিল চৌধুরী, মেডিক্যাল কলেজ ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. জসীম উদ্দীন, জেলা ড্যাবের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. তমিজ উদ্দিন আহমেদ মানিক, সাধারণ সম্পাদক ডা. বেলায়েত হোসেন ঢালী, ড্যাবের কেন্দ্রীয় নেতা ডা. এস এম সারোয়ার আলম, প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের সদস্য স্বতন্ত্র গৌরাঙ্গ দাস ব্রহ্মচারী, উজ্জ্বল নীলাম্বর দাস ব্রহ্মচারী, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রাজীব ধর তমাল, চট্টগ্রাম মহানগর শাখার আহ্বায়ক অধ্যাপক ঝুন্টু কুমার বড়ুয়া, সদস্য সচিব বাপ্পী দে, যুগ্ম আহ্বায়ক সুজন দাশ, সদস্য সুমন ঘোষ বাদশা প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০২৪
পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।