ঢাকা, সোমবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

ঐতিহ্যের পানাম নগর

সোহেল সরওয়ার, সিনিয়র ফটো করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২২
ঐতিহ্যের পানাম নগর ছবি: বাংলানিউজ

পানাম নগর থেকে ফিরে: ২০০৩ সালে সংরক্ষিত পুরাকীর্তি হিসেবে পানাম নগরকে গেজেটভুক্ত করে সরকার। ২০১৫ সালে ৬ অক্টোবর থেকে এই পানাম নগর পরিদর্শন করতে হলে পর্যটকদের টিকিট কেটে প্রবেশ করতে হয়।

প্রায় দেড় হাজার বছরের প্রাচীন শহর সোনারগাঁ ছিল বাংলার রাজধানী। মুসলিম শাসকদের অধীনে পূর্ববঙ্গের একটি প্রশাসনিক কেন্দ্র ছিল সোনারগাঁ।

১৩ শতকের স্থানীয় হিন্দু রাজা দনুজ মাধব দশরথদেব সুবর্ণ গ্রামকে তাঁর শাসনকেন্দ্রে পরিণত করেন।  

বঙ্গ অঞ্চল মুসলিম শাসনে আসার পর থেকে ১৬১০ সালে ঢাকা সুবা বাংলার রাজধানী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগ পর্যন্ত সোনারগাঁ ছিল স্বাধীন সুলতানি বাংলার অন্যতম রাজধানী ও প্রশাসনকেন্দ্র।

১৭ শতকের প্রথম দশকে সুবা বাংলার রাজধানী ঢাকায় স্থাপিত হওয়ার পর সোনারগাঁয়ের প্রশাসনিক গুরুত্ব কমতে থাকে। ১৯ শতকের শুরু থেকে হিন্দু বণিকদের একটি অংশ পানাম অঞ্চলে আবাসিক ভবন নির্মাণ করেন।  

প্রায় ৫ মিটার প্রশস্ত ও ৬০০ মিটার দীর্ঘ একটি সড়কের দুইপাশে সুরম্য স্থাপনা নিয়ে পানাম নগর গড়ে ওঠে। সড়কের দুইপাশে মুখোমুখি দ্বিতল ও তৃতীয় তলাবিশিষ্ট ৫২টি ভবন রয়েছে।

এসব বাড়ির স্থাপত্যে ইউরোপীয় শিল্পরীতির সঙ্গে মুঘল আমলের শিল্পরীতির মিশ্রণ রয়েছে। বাড়িগুলোর ইটের সঙ্গে ব্যবহার করা হয়েছে ঢালাই লোহার তৈরি ব্র্যাকেট ভেন্টিলেটর ও জানালার গ্রিল।  

মেঝেতে রয়েছে লাল, সাদা, কালো মোজাইকের কারুকাজ। অধিকাংশ বাড়িতে খিলান, ছাদে ও মধ্যবর্তী স্থানে রয়েছে নীল ও সাদা মোজাইকের কাজ। প্রতিটি বাড়িতেই আছে কূপ।

প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, পানাম নগরের ভবনগুলো জরাজীর্ণ হয়ে পড়ায় ২০২০ সালের ২১ ডিসেম্বর পানাম নগরের ১৩ নম্বর ভবনটি গবেষণামূলক পাইলটিং কাজের উদ্বোধন করেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। এরপর শেষ হয় সংস্কারকাজ।

ইতিহাসের সাক্ষী পানাম নগরী প্রতিনিয়ত দেশি-বিদেশি পর্যটকদের মুগ্ধ করছে। ভ্রমণ পিপাসুদের আকর্ষণের প্রতীক হয়ে উঠছে এই নগরের আশপাশের সর্দার বাড়ি, ঈশা খাঁর তোরণ, নীলকুঠি, বণিক বসতি, ঠাকুর বাড়ি ও পানাম নগর সেতু।

ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির নীলচাষের নির্মম ইতিহাসের নীরব সাক্ষী পানামের নীলকুঠি। পানাম পুলের কাছে দুলালপুর সড়কের পাশেই এর অবস্থান। এ ছাড়াও আমিনপুর ও দুলালপুর গ্রামের সংযোগ রক্ষাকারী পানাম পুলটি পঙ্খীরাজ খালের ওপর ১৭ শতকে নির্মিত হয়। তিনটি খিলানের ওপর পুলটি স্থাপিত।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০২২
এসএস/এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।