ঢাকা, রবিবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৯ মে ২০২৪, ১০ জিলকদ ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

বাঁশখালী উপকূলের ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে লবণ চাষ

সোহেল সরওয়ার, সিনিয়র ফটো করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৯ ঘণ্টা, মার্চ ৪, ২০২২
বাঁশখালী উপকূলের ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে লবণ চাষ ছবি: বাংলানিউজ

চট্টগ্রাম: বাঁশখালীর উপকূল জুড়ে চলছে লবণ উৎপাদন। এখানকার বিভিন্ন ইউনিয়নে ৫০ হাজার লবণচাষি ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে লবণ চাষ করছেন।

লবণ চাষের আয়ে চলে অনেকের সারা বছরের খরচ।  

চাষিরা নিজেদের জমি বা লিজ নিয়ে লবণ চাষ করেন।

অনেকে জমি মালিকের সঙ্গে চুক্তিতে চাষ করেন। উপজেলার কাথরিয়া, বাহারছড়া, সরল, গন্ডামারা, পুইছড়ি, শেখেরখীল, ছনুয়া ও খানখানাবাদ উপকূলীয় এলাকায় ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।        

লবণ চাষিরা জানান, কাঠের রোলার দিয়ে মাঠ সমতল করার পর চারপাশে মাটির আইল দিয়ে ছোট ছোট প্লট তৈরি করা হয়। এরপর ছোট প্লটগুলো রোদে শুকিয়ে কালো বা নীল রঙের পলিথিন বিছিয়ে দেওয়া হয়।  

জোয়ার এলে মাঠের মাঝখানে তৈরি করা নালা দিয়ে জমির প্লটে জমানো হয় সাগরের লবণাক্ত পানি। অনেকে ইঞ্জিনচালিত শ্যালো মেশিনও ব্যবহার করেন। এভাবে পানি সংগ্রহ করার পর ৪ থেকে ৫ দিন রোদে রাখা হয়।  

কড়া রোদে পানি বাষ্পীভূত হয়ে চলে যায় আর লবণ পড়ে থাকে পলিথিনের ওপর। লবণ চাষ মূলত আবহাওয়ার ওপর নির্ভরশীল। একটু ঝড় বৃষ্টি হলেই উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়।  কুয়াশাও লবণের জন্য ক্ষতিকর।  

উৎপাদিত লবণ থেকে পানি সরে গেলে ব্যাপারীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এই লবণ কিনে নিয়ে কারখানায় রিফাইনারি মেশিনের মাধ্যমে পরিশোধন শেষে বস্তা বা প্যাকেট ভর্তি করা হয়। পরে সেই লবণ চলে যায় বিভিন্ন স্থানে।

প্রতি বছর বর্ষায় চিংড়ি ঘের এর উৎপাদন শেষে লবণ চাষে নামেন উপকূলের চাষিরা। ডিসেম্বর থেকে পরের বছরের জুন মাস পর্যন্ত চলে এই লবণ উৎপাদন মৌসুম। বর্তমানে প্রতি মণ লবণের বাজার মূল্য ২৫০-৩০০ টাকা।

চাষিরা জানান, গত কয়েক বছর ধরে প্রায় পানির দরেই লবণ বিক্রি করতে হয়েছে। তবে সম্প্রতি লবণের মূল্য কিছুটা বৃদ্ধি পাওয়ায় লবণের ন্যায্যমূল্য পাবেন বলে আশা করছেন তারা। চলতি মৌসুমে উৎপাদন ১ লাখ টন ছাড়িয়ে যাবে বলেও ধারণা তাদের।  

শেখেরখীল ইউনিয়নের লবণচাষি জসিম উদ্দীন বলেন, এ বছর ২২ বিঘা জমি লিজ নিয়ে লবণ চাষ করেছি। শ্রমিক, পানি ও অন্যান্য খরচ বাবদ ৪ লাখ টাকা খরচ হচ্ছে। বিগত মৌসুমে ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় মাঠে গর্ত করে রাখা হয় প্রায় ৬০০ মণ লবণ।  

বাঁশখালী উপজেলা লবণ শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মোস্তফা আলী বাংলানিউজকে বলেন, কয়েক বছর ধরে সোডিয়াম সালফেটের আড়ালে লাখ লাখ টন সোডিয়াম ক্লোরাইড (ভোজ্য লবণ) আমদানি হওয়ার ফলে মাঠে উৎপাদিত লবণের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হয়েছে উপকূলের লবণচাষিরা। বর্তমানে দুই মণ লবণ ধোলাই খরচসহ পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকায়। অথচ গত বছরের জুলাই-আগস্টে প্রতি মণ লবণ বিক্রি হয়েছে ১৯০-২২০ টাকায়।  

বাংলাদেশ সময়: ১০১০ ঘণ্টা, ৪ মার্চ, ২০২২
এসএস/এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

চট্টগ্রাম প্রতিদিন এর সর্বশেষ