ঢাকা, বুধবার, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ জুন ২০২৪, ১৮ জিলহজ ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

গল্প-আড্ডায় অন্যরকম কেনাকাটা 

সৈয়দ বাইজিদ ইমন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪১ ঘণ্টা, এপ্রিল ২, ২০২২
গল্প-আড্ডায় অন্যরকম কেনাকাটা  ছবি: বাংলানিউজ

চট্টগ্রাম: নগরের দক্ষিণ খুলশীর শেখ রেসিডেন্স নামের ভবনের নিচ তলায় থরে থরে সাজানো দেশিয় বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী। ঘরোয়া পরিবেশে গল্প-আড্ডায় পণ্য কিনছেন ক্রেতারা।

এমনটিই তো হওয়ার কথা। কেননা এই প্রদর্শনীর নামই যে দেওয়া হয়েছে ‘বৈঠক’।

চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো শুধুমাত্র দেশিয় পণ্য নিয়ে চলছে ঈদ প্রদর্শনী বৈঠক। এ প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছেন চট্টগ্রামের ৫ জন নারী উদ্যোক্তা। পোশাক নিয়ে ‘মৌরিতা’, গহনা নিয়ে আছে ‘মাদুর’, নান্দনিক গিফট সামগ্রী নিয়ে ‘বিচিত্রা’, বিভিন্ন দেশিয় খাবার নিয়ে আছে তিতাস কন্যা ও হুমা’স কিচেন।  

কোনও রেস্টুরেন্ট বা কনভেনশন হলে নয়, তারা এ প্রদর্শনীর আয়োজন করেছেন বাসায়। আয়োজকরা সবাই অনলাইন মাধ্যমে কাজ করছেন। ক্রেতাদের সঙ্গে তাদের সরাসরি কথা হওয়ার সুযোগ হয় না। ক্রেতাদেরও শুধু ছবি দেখেই সিদ্ধান্ত নিতে হতো। তাই তাদের সঙ্গে সরাসরি দেখা-সাক্ষাতের জন্য এ আয়োজন।  

আয়োজকরা বলছেন, এ পরিবেশে যে আন্তরিকতা থাকবে সেটা বড় মেলায় সম্ভব নয়। আবার শুধুমাত্র দেশিয় পণ্য নিয়ে এখনও কোনও মেলা হয়নি  চট্টগ্রামে।  ক্রেতার সঙ্গে আস্থার সম্পর্ক সৃষ্টি তথা দেশিয় পণ্যের প্রচারে এই ভিন্নধর্মী আয়োজন। আমরা এখানে অতিথি আপ্যায়নের ব্যবস্থা রেখেছি৷ নাস্তায় স্থান পেয়েছে গণি বেকারির বেলা বিস্কুট। যেকোনও উৎসব ও আনুষ্ঠানিকতায় আমাদের দেশিয় পণ্যের ব্যবহার বাড়াতে হবে। এভাবেই হবে আমার ঐতিহ্যের প্রচার ও প্রসার। এখানে শুধু দেশিয় পণ্য, নিজস্ব ডিজাইন, নিজেদের তৈরি, ঘরোয়া পরিবেশ।

পাঁচজন উদ্যোক্তার মধ্যে একজন চট্টগ্রাম প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মেহের নিগার। হাতে তৈরি পোশাকে অঙ্কন করেন তিনি। অধ্যাপনার পাশাপাশি অবসরে প্রদর্শনীতে সময় দেন।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, করোনার কারণে মানুষ যখন ঘর থেকে বের হচ্ছে না। তখন আমরা অনলাইনে আমাদের পণ্য সামগ্রী বিক্রয় শুরু করি। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় আমরা সরাসরি প্রদর্শনীটা দর্শকের সামনে নিয়ে এসেছি। এখানে দেশিয় পণ্যের জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। তাঁতীদের নিজের হাতে বানানো। কাজের ফাঁকে এখানে সময় দেই। শুধুমাত্র দেশিয় পণ্য নিয়ে কাজ করি৷ এটা বিশাল আকারে করা সম্ভব নয়, তাই আমরা প্রথমে ঘরোয়া পরিবেশে করেছি। প্রথমে আমরা গণি বেকারির বেলা বিস্কুট নিয়ে শুরু করি ‘বৈঠক’ নামের এ প্রদর্শনী। এখানে গল্প করতে করতে আমরা জিনিস কিনছি, খাচ্ছি। সেটা মেলায় সম্ভব না।  

অ্যাডভোকেট নূরজাহান ইসলাম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়ালেখা শেষ করেছেন ১৭ বছর আগে। এরপর আইন পেশায় সম্পৃক্ত হন। পরে অবসরে মিষ্টান্ন জাতীয় পণ্য তৈরিতে সময় দেন ।  

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমরা যেসব বিষয়ে পারদর্শী সেসব বিষয় এখানে প্রদর্শন করছি। আমি মিষ্টি জাতীয় জিনিস তৈরি করতে পছন্দ করি। তাই এটা নিয়ে কাজ করি। খাঁটি দুধের সর দিয়েই এসব মিষ্টি জাতীয় খাদ্যদ্রব্য তৈরি করি। এখানে কোনও ভেজাল নেই।  

নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটি থেকে প্রদর্শনীতে কেনাকাটা করতে আসা আয়েশা হারুন নিপা বাংলানিউজকে বলেন, ঘরোয়া পরিবেশে আড্ডা আর কেনাকাটার এমন পরিবেশ সহজে পাওয়া যায় না। কাপড়ের মানও অনেক ভালো৷ সবকিছুই দেশিয় পণ্য। আমার দেশিয় পণ্যের প্রতি সবসময় একটা ঝোঁক ছিল। তাই বান্ধবীর মাধ্যমে খোঁজ পেয়ে এখানে এসেছি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩০ ঘণ্টা, ২ এপ্রিল, ২০২২
বিই/এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।