কলকাতা: শহরের ব্যস্ততম রেল স্টেশন শিয়ালদহ রেলস্টেশন। সেখানে প্রতিদিন লাখো মানুষ চলাফেরা।
পশ্চিমবঙ্গের শাসকদলের এক বিধায়কের উদ্যোগে এবং কলকাতার সাধারণ মানুষের সহযোগিতায় ভাস্কর্য দুটি স্থাপিত হয়েছে। সাত ফুট উচ্চতার বেদিতে স্থাপিত বিশালকায় আবক্ষ ভাস্কর্য দুটির উচ্চতা ১২ ফুটের বেশি। তৈরি হতে সময় লেগেছে চার মাসের বেশি। ভাস্কর্য দুটি ফাইবারের। দুই পিতাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে দুই পাশে মাথা নত করে দাড়িয়ে রয়েছেন দুই সেনা।
পশ্চিমবঙ্গের উত্তর কলকাতার বেলেঘাটা বিধানসভার বিধায়ক পরেশ পাল। শাসক দলের একজন দক্ষ প্রশাসকের পাশাপাশি একজন সমাজকর্মী হিসেবে পরিচিত। জন্ম বরিশালে। আজও তিনি শেকড়ের টান অনুভব করেন। তারই উদ্যোগে শিয়ালদহ স্টেশনের পাশে স্থাপনা হয়েছে ভারত এবং বাংলাদেশের জাতির পিতা আবক্ষ ভাস্কর্য।
তিনি বলেন, দুই দেশের-দুই পিতা হলেন বিশ্ব শান্তির দূত। আমি যেমন আমার দেশের গান্ধীজিকে ভালোবাসি, তেমনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতো সংগ্রামী চরিত্রকেও আমি শ্রদ্ধা করি।
তার অভিমত, শিয়ালদা স্টেশন এমন একটি অঞ্চল, যেখানে ভারতের পাশাপাশি অনেক বাংলাদেশি আসা-যাওয়া করেন এবং এ অঞ্চল তার বিধানসভার এলাকার মধ্যে পড়ে। তাই সেখানেই ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বর্তমান বাংলাদেশ যার হাতে অর্থাৎ বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনাকেও আমি যথেষ্ট শ্রদ্ধা করি। আমি চাই তিনিই ক্ষমতায় থাকুন। এরপরই নিজের মত প্রকাশ করে বলেন, অবশ্য নির্বাচনটা সম্পূর্ণ বাংলাদেশের বিষয়। তাই এ নিয়ে আমার বিশেষ কথা না বলাই ভালো।
তবে ঘটা করে ভাস্কর্য দুটি উন্মোচন হয়নি। তিন বছর আগে তৈরি করে ঘিরে রাখা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর ১০৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ভাস্কর্য জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।
পরেশ পালের অভিমত, খ্যাতির বিড়ম্বনা থেকে তিনি একটু দূরে থাকতেই পছন্দ করেন। তাই ঘটা করে কোনো উদ্বোধন করেননি। একটু আলোর কাজ বাকি ছিল, তাই সময় লাগল।
প্রকাশ্যে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য শহরের বুকে এই প্রথম। খুশি তাই কলকাতাবাসীও। কারণ, শত হলেও বাংলাদেশের জাতির পিতা। এ শহরের অন্তরে ঢুকলে দেখা যাবে সিংহভাগ মানুষের শেকড় রয়েছে বাংলাদেশে, যা আজ ছিন্ন করে তারা কলকাতাবাসী।
একইভাবে বেনাপোল-পেট্রাপোল হয়ে যে বাংলাদেশিরা রেলপথ ধরেন, তাদেরও গন্তব্য হয় কলকাতার শিয়ালদহ স্টেশনে। শহরে প্রবেশ মাত্রই দুই দেশের জাতির পিতার ভাস্কর্য দেখে খুশি বাংলাদেশিরাও।
শার্শার বাসিন্দা আজিজুল বলেন, শত হলেও কলকাতা বিদেশের মাটি। সেখানে আমাদের জাতির পিতার মূর্তি দেখতে পাব, ভাবতেও পারিনি। কতটা গর্ব হচ্ছে, বলে বোঝাতে পারবো না। এ পথ দিয়ে অনেক বাঙালি আসা-যাওয়া করেন। সবার নজরে পড়বে। বাঙালি হিসেবে গর্ববোধ করছি।
বাংলাদেশ সময়: ১১১৪ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০২৩
ভিএস/আরএইচ