ঢাকা, রবিবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

পশ্চিমবঙ্গে কড়া নিরাপত্তায় পঞ্চায়েত ভোট গণনা শুরু

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৬ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০২৩
পশ্চিমবঙ্গে কড়া নিরাপত্তায় পঞ্চায়েত ভোট গণনা শুরু

কলকাতা: কড়া নিরাপত্তায় শুরু হয়েছে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত নির্বাচনের ভোট গণনা।

মঙ্গলবার (১১ জুলাই) স্থানীয় সময় সকাল ৮টা থেকে রাজ্যের ২২টি জেলার ৩৩৯টি কেন্দ্রে ভোটগণনা শুরু হয়েছে।

তবে এদিন সকালেও বিভিন্ন জেলা থেকে সহিংসতা এবং ব্যাপক বোমাবাজির ঘটনা সমনে আসছে। ফলে গণনাকেন্দ্রগুলিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

ত্রি-স্তর নিরাপত্তায় ভোট গণনায় মোতায়েন রয়েছে এক কোম্পানি করে কেন্দ্রীয় বাহিনী। ১০০ জন বিশিষ্ট এক কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীতে সক্রিয় থাকে ৮২ জন আধা সামরিক সেনার সদস্যরা। সঙ্গে রয়েছে রাজ্য ও কলকাতা পুলিশও। প্রতিটা গণনাকেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা রয়েছে। যা সরাসরি মনিটরিং-এ থাকবে কলকাতার নির্বাচন কমিশনের অফিস থেকে। প্রতি গণনাকেন্দ্রে একজন করে পর্যবেক্ষক রয়েছেন। এছাড়া দার্জিলিং, কালিম্পংসহ প্রতি জেলায় রয়েছেন একজন করে বিশেষ পর্যবেক্ষক।

৩৩৯টি ভোট গণনা কেন্দ্রে গণনা কক্ষের সংখ্যা রাখা হয়েছে ৩ হাজার ৫৯৪টি। গণনা চলবে ৩০ হাজার ৩৯৬টি টেবিলে। পঞ্চায়েত আসনের ফল ঘোষণা করবেন কাউন্টিং পর্যবেক্ষক। পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদের ফল ঘোষণা করবেন ব্লক ডেভলেপমেন্ট অফিসার (বিডিও)। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রত্যেক স্তরে দু’রাউন্ড করে গণনা হবে। কোথাও কোথাও তিন রাউন্ড গণনা হবে। শেষ না হওয়া পর্যন্ত গণনা চলবে। যেহেতু ব্যালট পেপারে ভোট নেওয়া হয়েছে, সেক্ষেত্রে কিছু জেলায় গণনা শেষ হতে পারে বুধবার (১২ জুলাই)।

জটিল এই গণনায়, প্রথমে গোনা হবে গ্রাম পঞ্চায়েতে আসনগুলো, তারপর পঞ্চায়েত সমিতি এবং সব শেষে জেলা পরিষদের আসন গণনা হবে। রাজ্যে মোট পঞ্চায়েত আসন ৬৩ হাজার ২২৯টি। পঞ্চায়েত সমিতির আসন ৯ হাজার ৭৩০টি এবং জেলা পরিষদ আসন ৯২৮টি। তবে জেলা পরিষদের ৯১২টি আসনে গণনা হবে। কারণ ১৬ আসনে অনেক আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে তৃণমূল।

এছাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতে ৬৩ হাজার ২২৯ আসনের মধ্যে আট হাজার দু’টি আসন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন প্রার্থীরা। এর মধ্যে তৃণমূল জিতেছে ৭ হাজার ৯৪৪টি আসনে। দুইটি আসনে জয়ী বিজেপি। তিন আসনে জয়ী সিপিআইএম। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয় পেয়েছে ৫৩ আসনে। পাশাপাশি পঞ্চায়েত সমিতিতে নয় হাজার ৭৩০ আসনের মধ্যে ৯৯১ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন বিভিন্ন দলের প্রার্থীরা। এরমধ্যে তৃণমূল জিতেছে ৯৮১ আসনে। অন্যরা জিতেছে ১০ আসনে।

বছর ঘুরলেই ভারতে লোকসভা নির্বাচন। তার আগে শাসক থেকে বিরোধী সব পক্ষের কাছেই পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত ভোট ছিল শক্তিপরীক্ষা। শনিবার (৮ জুলাই) ভোট ঘিরে প্রাণহানি, রক্তপাত, সংঘর্ষ, বোমাবাজি হয়েছে বেশ কয়েকটি জেলায়। সেদিন রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের হার ৮০ দশমিক ৭১ শতাংশ। এরপর সোমবার (১০ জুলাই) ৬৯৬টি বুথে পুননির্বাচন হয়েছে। ভোটের হার ছিল ৭০ শতাংশের কিছুটা বেশি। ভোটের দিনগুলোয় সহিংসতায় রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ১৯ জনের। সমগ্র ভোট পর্বে অর্থাৎ ৮ জুন ভোটের তফসিল ঘোষণার পর থেকে সোমবার পর্যন্ত ৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে।

গত শনিবার (৮ জুলাই) পশ্চিমবঙ্গে একধাপে ভোট হয়েছে ২২ জেলায়। কলকাতা বাদ দিয়ে রাজ্যটির এই ২২ জেলার মধ্যে দার্জিলিং এবং কালিম্পং জেলায় ভোট হয়েছে দ্বি-স্তর বিশিষ্ট। এবং বাকি জেলাগুলিতে ত্রি-স্তর বিশিষ্ট (গ্রাম সভা, পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদ) অংশে ভোট হয়েছে। মঙ্গলবার (১১ জুলাই) বেলা বেলা গড়ালেই ধারণা পাওয়া যাবে কার হাতে থাকছে গ্রাম বাংলার শাসন। তবে ইতোমধ্যে বিরোধীদের থেকে প্রতিক্ষেত্রেই এগিয়ে রয়েছে মমতার দল তৃণমূল কংগ্রেস।
 
বাংলাদেশ সময়: ১০১৫ ঘণ্টা, ১১ জুলাই, ২০২৩
ভিএস/এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।