ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

বর্ধমান বিস্ফোরণকাণ্ড

বারো দিন পর মুখ খুললেন মমতা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০১৪
বারো দিন পর মুখ খুললেন মমতা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা: ঘটনার ঠিক বারো দিন পর মুখ খুললেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। বর্ধমান বিস্ফোরণকাণ্ডে কেন্দ্রীয় তদন্ত শুরু হতেই নাম না করে এন আই এ তদন্তের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এর আগে এই বিষয় নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং মুখ না খুলেও দলের প্রথম সারির নেতারা কেন্দ্রীয় তদন্তকে রাজ্যের অধিকারের উপর আঘাত বলে মন্তব্য করেছিলেন।

রাজ্য সরকারের তরফ থেকেও শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এন আই এ –এর তদন্তের কড়া বিরোধিতা করেছিলেন।

রাজ্য সরকার এবং তৃণমূল কংগ্রেস দলের মতে রাজ্যের গোয়েন্দা সংস্থা সি আই ডি এই তদন্তের পক্ষে যথেষ্ট। কিন্তু তদন্তের প্রথম দিন থেকেই রাজ্য পুলিশের দিকে বিভিন্ন প্রশ্নের আঙ্গুল উঠতে শুরু করেছিল বিরোধী দলসহ বিভিন্ন পক্ষের তরফ থেকে।

যদিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার ফেসবুক বার্তায় জানিয়েছেন, কেন্দ্রে নতুন সরকার আসার পর রাজ্যের অধিকারে হাত দিয়েছে কেন্দ্রের সরকার।

ঠিক এই সুরেই সারদা প্রতারণা মামলায় সি বি আই তদন্তের বিরোধিতা করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকার।

সি বি আই তদন্তের প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে ভারতের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। যদিও সুপ্রিম কোর্ট সি বি আই তদন্তের নির্দেশ দেন।

পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল কেশরী নাথ ত্রিপাঠী জানিয়েছেন, সীমান্তবর্তী রাজ্য হবার ফলে বর্ধমান ঘটনার তদন্ত এন আই এ-এর করা উচিৎ।  

বিরোধীরা বলছেন, ২০০৯ সালের ২৩ আগস্ট কলকাতার ‘বৈদিক ভিলেজ’ নামের একটি রিসোর্টে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে গুলি চালানোকে কেন্দ্র করে উত্তেজিত জনতা গোটা রিসোর্টটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। সেই সময় পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই ঘটনার এন আই এ তদন্ত দাবি করেছিলেন।

তাহলে অন্তঃরাজ্য এবং একাধিক বৈদেশিক রাষ্ট্রের বিষয় যখন বর্ধমান বিস্ফোরণকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে ঠিক সেই সময় কেন্দ্রীয় তদন্ত শুরু হতেই নাম না করে এন আই এ-এর তদন্তের বিরুদ্ধে মুখ কেন খুললেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়?

২০০৮ সালে তৈরি হয় এন আই এ। ভারতের সংবিধানের এন আই এ আইনের তৃতীয় চ্যাপ্টারে ৬/৫ অনুচ্ছেদে বলা আছে, যদি কেন্দ্রীয় সরকার কোনো ঘটনায় মনে করেন এন আই এ তদন্তের দরকার তবে সেখানে স্ব-প্রবৃত্ত হয়ে তদন্ত শুরু করতে পারে এন আই এ।

এবং সেই ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারকে প্রয়োজনীয় সব সাহায্য করতে হবে। ভারতের সংবিধানে যে কয়েকটি কেন্দ্র-রাজ্যের ‘যৌথ’ বিষয় আছে এর মধ্যে এন আই এ অন্যতম। ভারতের সংবিধানে বলা আছে, এই ‘যৌথ’ বিষয়গুলিতে কেন্দ্র ও রাজ্য দ্বিমত হলে কেন্দ্রীয় সরকার দেশের স্বার্থে তার ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন।

যদিও সেখানে রাজ্য সরকারের আদালতে যাবার অধিকার আছে। এখন দেখার বিষয় পশ্চিমবঙ্গ সরকার সেই পথে হাঁটে কিনা?

উল্লেখ্য, বর্ধমান বিস্ফোরণের পর কোনো বিবৃতি দেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই প্রথম তিনি এন আই এ তদন্তের বিরোধিতা করে বর্ধমান বিস্ফোরণ প্রসঙ্গে মুখ খুললেন।

বাংলাদেশ সময়: ১০৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।