ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনে লম্বা লাইনে ভোগান্তি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৮ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০১৫
পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনে লম্বা লাইনে ভোগান্তি ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

কলকাতা: ভারতের পেট্রাপোল স্থলবন্দরের হরিদাসপুর ইমিগ্রেশনে প্রতিদিনই জমছে লম্বা লাইন। বেনাপোল হয়ে ভারতে যাচ্ছেন এমন যাত্রীদের ইমিগ্রেশন কাউন্টারে পার করতে হচ্ছে দীর্ঘ সময়।

রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করেই ল্যাগেজ নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে বাইরের লাইনে।

এই সমস্যা বাংলাদেশ থেকে যারা ভারতে যাচ্ছেন তাদের বেশি। ভারত থেকে ফেরার পথে লম্বা লাইন দেখা গেলেও তার স্থায়ীত্ব এতো বেশি নয়।

বেনাপোল সীমান্ত পার হয়ে ভারতে প্রবেশ করতে ইমিগ্রেশনে আগে খুব ভিড় থাকলেও দুই ঘণ্টার বেশি লাগতো না। এখন সেখানে সময় লাগছে তিন থেকে চার ঘণ্টা। এ অভিযোগ নিয়মিত যাত্রীদের।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেলো যাত্রীদের অভিযোগ সঠিক। কাউন্টারের সামনে মানুষের সারিবদ্ধ জমায়েত। বৃষ্টির মধ্যে জিনিসপত্র সমেত লাইনে দাঁড়িয়ে ভিজতে হচ্ছে যাত্রীদের। যাদের সঙ্গে শিশু অথবা রোগী থাকছে তাদের পক্ষে এই লাইনে দাঁড়ানো চরম ভোগান্তির।

হঠাৎ লাইনে এতো বেশি সময় লাগার অনুসন্ধানে জানা যায়, আগে ‘নোম্যান্স ল্যান্ড’-এ ইমিগ্রেশন করতো বিএসএফ। এখন সেটা করা হয় ভারতীয় সীমান্তের ভিতরে। সেখানে আছে বেশ কয়েটি ইমিগ্রেশন কাউন্টার। প্রতিটি কাউন্টারের সামনেই থাকে লম্বা লাইন। কাউন্টারে  গিয়ে জমা দিতে হয় পাসপোর্ট। সেখানে মিলিয়ে দেখে পরীক্ষার পর তবেই ছাড়া হয় যাত্রীদের।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভারতীয় ইমিগ্রেশনের এক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের কর্মীর কোনো অভাব নেই, কিন্তু কাউন্টারের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় কম। কাউন্টার বাড়ালে দীর্ঘ লাইন অনেকটাই কমে যাবে।

তিনি জানান, বর্তমানে আগত যাত্রীর সংখ্যা আগের থেকে অনেকটাই বেড়েছে। আগে গড়ে আড়াই হাজার লোক প্রতিদিন পেট্রোপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করতেন। বর্তমানে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে গড়ে ছয় হাজার বা তার বেশি।

এই কর্মকর্তা আরও বলেন, বিষয়টি টেকনিক্যাল। এখন আগে থেকে অনেক বেশি সংখ্যক মাল্টিপল ভিসা দেওয়া হচ্ছে। ফলে একটি ভিসায় একাধিক বার ভারতে প্রবেশের সময় স্ট্যাম্প মারা হচ্ছে। প্রতিবার আগের স্ট্যাম্পগুলি মিলিয়ে দেখে তবেই প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়।

এছাড়া আরও একটি সমস্যা চোখে পড়লো সেখানে। ইমিগ্রেশন কাউন্টার ও অফিসের কর্মকর্তারা অনেকেই অবাঙালি। তারা এসেছেন ভারতের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে। বাংলা ভাষা বলার ক্ষেত্রে এদের অনেকেরই সমস্যা রয়েছে। সময় লাগছে বাংলা ভাষা বুঝতেও। ফলে কোনো প্রশ্ন যাত্রীদের বুঝিয়ে বলতে অথবা তাদের কাছ থেকে উত্তর বুঝে নিতে কিছুটা বেশি সময় লাগছে। এটিও সময় বেশি লাগার অন্যতম  কারণ।

সাধারণ মানুষের মতো কাউন্টার কর্মকর্তারাও মনে করেন কাউন্টার সংখ্যা বাড়াতে পারলে এই সমস্যা অনেকটাই কমে যাবে। রোগী ও তার সঙ্গের যাত্রীকে দ্রুত ছাড়ার ব্যবস্থা করা গেলে অসুস্থ মানুষদের সুবিধা হয়। এছাড়া মাল্টিপল ভিসা প্রাপকদের জন্য আলাদা লাইনের ব্যবস্থা করলেও সমস্যা বেশ কিছুটা কমতে পারে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।

এছাড়াও বাংলা ভাষা বলতে ও বুঝতে পারেন এমন কর্মকর্তা বেশি সংখ্যক থাকলে দ্রুত যাত্রীদের পরিষেবা সম্ভব হবে। কাউন্টারে বেশ কিছু বোর্ডে বিভিন্ন নির্দেশিকা লেখা রয়েছে। এ ধরনের বোর্ড বাংলা ভাষায় আরও কিছু বাড়ালে যাত্রীরা উপকৃত হবেন।

ভারতের পর্যটন অধিদপ্তর ‘অতিথি দেব ভব’ তত্ত্বে বিশ্বাসী। তাই আশা করাই যায়, আগামী দিনে তারা বাংলাদেশ থেকে আগত মানুষদের  সুবিধার কথা ভেবে ইমিগ্রেশনের লম্বা সারিতে দাঁড়িয়ে দীর্ঘ অপেক্ষার বিষয়টির সমাধান করবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০৮ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০১৫
ভিএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।