ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

করোনা, সন্ত্রাস আতঙ্ক উড়িয়ে পরিচালকদের নজর এখন কাশ্মীরে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০২০
করোনা, সন্ত্রাস আতঙ্ক উড়িয়ে পরিচালকদের নজর এখন কাশ্মীরে কাশ্মীর/

কলকাতা: সাদা তুলোর মতো মেঘ, নীল আকাশের নীচে বরফে মোড়া পাহাড়, তার পাশ দিয়ে সবুজ মখমলের ন্যায় প্রান্তর, আকাশচুম্বী চিনার গাছ, ডাল লেক, শিকারা। যেন এক রঙ-তুলির আঁচড়ে জীবন্ত ক্যানভাস।

সালটা ১৯৬৪, তখনও সন্ত্রাসের আঁচড় পোড়েনি উপত্যকায়। বাংলার বর্ধমান জেলার রায়নার এক যুবকের ক্যামেরায় গোটা ভারত দেখেছিল ক্যানভাসের ন্যায় রোমান্টিক কাশ্মীরকে। তিনি পরিচালক শক্তি সামন্ত। ছবির নাম ‘কাশ্মীর কি কলি’।

শিকারা বাইছে মাঝি। তাতে শর্মিলা ঠাকুর আর শাম্মি কাপুর। শক্তি সামন্তের কাশ্মীর কি কলির মধ্যদিয়ে সমগ্র ভারত প্রথম দেখেছিল ভূস্বর্গের সেলুলয়েড ক্যানভাসের ন্যায় রোমান্টিক ইমেজ। তারপর থেকে বলিউডের আউটডোর শুটিং মানেই গন্তব্য ছিল ভূস্বর্গ কাশ্মীরে।

এর পরের সময়টা ছিল উথালপাথাল। সন্ত্রাসের ঘেরাটোপে আবদ্ধ ভূস্বর্গকে এড়িয়ে গিয়েছেন অধিকাংশ ছবির পরিচালক, প্রযোজকরা।

এরপর ৩৭০ রদ, করোনা মহামারিতে স্তব্ধ ছিল সবকিছু। তবে ধীরে ধীরে উপত্যকায় কাটছে অন্ধকার। সুদিন ফিরতে শুরু করেছে জম্বু-কাশ্মীরে। সেলুলয়েডে ফের ফিরছে শিকারা, ডাললেক, গুলমার্গ, সোনমার্গ, পহেলগাহ, বালতাল।

ফলে ভারতে লকডাউন পর্ব মিটলেও চলমান করোনা মহামারির দিনগুলোকে সঙ্গী করে ক্যামেরা হাতে সেই কাশ্মীরে পৌঁছে গেলেন আর এক বাঙালি পরিচালক দিবাকর বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি শেষ হলো নেটফ্লিক্স প্রযোজিত ‘ফ্রিডম’ ছবির শুটিং।

তবে শুধু নেটফ্লিক্স নয়, একাধিক সংস্থার মিউজিক ভিডিও অ্যালবাম, ওয়েবসিরিজ থেকে শুরু করে ডিসকভারি চ্যানেলের তথ্যচিত্র একের পর এক শুটিংয়ের বদৌলতে কাশ্মীর এখন জমজমাট। উপত্যকায় একাধিক সন্ত্রাসী হামলার ঘটনাও এই উৎসাহে ভাটা ফেলতে পারছে না।

সম্প্রতি জম্বু-কাশ্মীর মিলিয়ে শুটিং শেষ হলো ডিসকভারি চ্যানেলের জন্য ‘লস্ট এসেন্স অব ইন্ডিয়া’ নামে এক তথ্যচিত্রর। তথ্যচিত্রটি প্রযোজনার দায়িত্বে রয়েছে মুম্বইয়ের সল্ট মিডিয়া সংস্থা এবং সঞ্চালনার দায়িত্বে ইন্ডিয়ান আইডল খ্যাত মিয়াং চ্যাং।

তথ্যচিত্রের এক প্রযোজক শেখ আব্দুল ওয়াহিদের মতে, আগে কাশ্মীরে শুধুমাত্র কয়েকটি সিনেমার শুটিং হতো। কিন্তু, সময় বদলাচ্ছে। এখন বহু ধরনের শুটিং হচ্ছে এখানে।

শুধু তাই নয়, কাশ্মীরকে অন্যভাবে চেনাচ্ছে বিজ্ঞাপন দুনিয়াও। ইতোমধ্যে অ্যাড ফিল্মের জন্য শুটিং করেছে বেশ কয়েকটি বিজ্ঞাপন সংস্থা। হচ্ছে অনেক ওয়েব সিরিজের শুটিংও।

এছাড়া একাধিক পাঞ্জাবি গান এবং ড্যানিস রেঞ্জু পরিচালিত কাশ্মীরী মিউজিক ভিডিও প্রকাশ করেছে জি মিউজিক সংস্থা। নুর মহম্মদ, ইরফান বুখারির মতো নামী সঙ্গীত শিল্পীরা গান গেয়েছেন তাতে।

তবে এখানেই শেষ নয় কাশ্মীরে নজর আরও কয়েকটি বিদেশি ফ্লিম ইন্ড্রাস্ট্রিরও। কাশ্মীরের প্রেক্ষাপটে শুটিং করার জন্য ইতোমধ্যে ভারত সরকারের কাছে আবেদন করেছেন তারা। ফলে হারিয়ে যাওয়া ক্যানভাসের ন্যায় কাশ্মীর খুব শিগগিরই নতুনভাবে ডানা মেলে ধরবে বিশ্বের কাছে। যা থেকে চোখ সরাতে পারবে না পরিচালক থেকে দর্শককুল।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০২০
ভিএস/এইচএডি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।