কলকাতা: ‘বেয়োনেট হোক যত ধারালো, কাস্তেটা ধার দিও বন্ধু’— এসব গণসঙ্গীতের মধ্যদিয়ে পশ্চিমবঙ্গে সিপিআইএমের (কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া মার্ক্সিস্ট) উত্থান হয়েছিল। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গে ধার কমেছে কাস্তের।
দুয়ারে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচন। তাই মমতার ‘দুয়ারে সরকার’,‘পাড়ায় সমাধান’ বা ‘দিদিকে বলো’র মতো কর্মসূচি। অপরদিকে বিজেপির ‘দাদাকে বলো’, ‘আর নয় অন্যায়’ শিরোনামে কর্মসূচির পাল্টা হিসেবে এবার মাঠে নামছে সিপিএম। তাদের স্লোগান ‘আপনার বাড়ি, কাস্তে হাতুড়ি’।
নির্বাচনের আগে এ নতুন কর্মসূচিকে সামনে রেখে সিপিএমের নেতাকর্মীরা দু’মাস ধরে মানুষের বাড়ি বাড়ি যাবেন। উদ্দেশ্য জনসংযোগ বাড়ানো এবং পুরনো ভোটব্যাংক পুনরুদ্ধারের চেষ্টা। পাশাপাশি বাড়ির মালিকের সম্মতি নিয়ে দেওয়ালে দেওয়ালে কাস্তে-হাতুড়ির ছবিও আঁকবেন তারা।
বাম নেতৃত্বের একাংশের মতে, পশ্চিমবঙ্গের ভোটারদের সঙ্গে ভারতের অন্য রাজ্যের ভোটারদের বিস্তর ফারাকা রয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজ্যের বেশিভাগ মানুষ শাসকদলের বিরোধী হয়ে উঠেছে। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় শাসকদলকেও মেনে নিতে না পারার কারণ বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলো অবস্থা ভালো নয়। ফলে তাদের মতে এখনই সময়। লোহা গরম থাকতেই হাতুড়ির বাড়ি মারা উচিত। অন্তত চেষ্টা করা উচিত।
অবশ্য মমতার দলের বিরুদ্ধে বিজেপি অনেক আগেই মাঠে নেমে পড়েছে। ‘আর নয় অন্যায়’ কর্মসূচিতে তারা এলাকায় লিফলেটও বিলি করছে। চলছে সভা। এমনকী কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের নিয়ে এসে কর্মসূচি করাচ্ছে বিজেপি।
তবে বিহার বিধানসভা নির্বাচনে বামজোট ভালো ফল করায় পশ্চিমবঙ্গের বামদলগুলো যেন পায়ের তলায় একটু মাটি পেয়েছে। এতদিন তারা রাজ্যে ছোট ছোট জনসভা করছিল। সেখানে জনগনের অস্তিত্ব দেখে মনবল পাচ্ছে বামদলগুলো। ফলে নির্বাচনের আগে কর্মী-সমর্থকদের চাঙ্গা করতে সিপিএম নেতৃত্ব ‘আপনার বাড়ি, কাস্তে হাতুড়ি’ কর্মসূচিকে সামনে রেখে মাঠে নামছে।
জানুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে সিপিএম নেতৃত্বরা এ কর্মসূচি পালন করবে। কর্মসূচিতে সিপিএমের নেতকর্মীরা লাল পতাকা নিয়ে বাড়ি বাড়ি যাবেন। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলবেন। তুলে ধরবেন মমতা এবং মোদী সরকারের ব্যর্থতার দিকগুলো। এরপর বাড়ির মালিক সম্মতি দিলে সেই বাড়ির দেয়ালে কাস্তে-হাতুড়ি চিহ্ন আঁকা হবে। অর্থাৎ, এ কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দেয়াল লিখনের কাজও শুরু হয়ে গেলো।
সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সম্পাদক তথা রাজ্য কমিটির সদস্য মৃণাল চক্রবর্তী বলেন, ‘আমরা মানুষের পাশেই রয়েছি। আপনার বাড়ি, কাস্তে হাতুড়ি কর্মসূচি নিয়ে আমরা মানুষের বাড়ি বাড়ি যাবো। তাদের সঙ্গে কথা বলবো। এ কর্মসূচির সঙ্গে আমরা কিছু স্লোগানও বানিয়েছি। দেয়ালে প্রতীক চিহ্ন আঁকার সঙ্গে এ স্লোগানগুলোও লেখা হবে। ’
বাংলাদেশসময়: ১৬০৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০২১
ভিএস/এফএম