কলকাতা: ভারতের পশ্চিমবঙ্গে জমি আন্দোলনের অন্যতম পীঠস্থান নন্দীগ্রাম। সেখান থেকেই মমতা বন্দোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক উত্থান।
বুধবার (১০ মার্চ) নন্দীগ্রামেই প্রচারে গিয়ে পায়ে আঘাত পেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। চক্রান্তের অভিযোগ তুলেছে শাসক শিবির। অন্যদিকে উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের দাবি জানিয়েছে বিরোধীরা। নির্বাচন কমিশনও শাসক দলের ষড়যন্ত্রের দাবি উড়িয়ে দিয়েছে। যা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে তরজা তুঙ্গে ওঠেছে।
এরমধ্যে রোববার (১৪ মার্চ) ‘নন্দীগ্রাম দিবস’কে প্রচারের পুঁজি করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। হুইল চেয়ারে করেই কলকাতার রাজপথে নামেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। প্রায় পাঁচ কিলোমিটার পথ মুখ্যমন্ত্রীর হুইল চেয়ার ঠেলে নিয়ে যায় তাঁর ব্যক্তিগত দেহরক্ষী।
নন্দীগ্রাম ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না হয় সে জন্য পুলিশি নিরাপত্তা ছিল চোখে পড়ার মতো। মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার জন্য রাজপথেরে দুই প্রান্ত প্রায় ৫০ মিটার দূরত্ব থেকে দড়ি দিয়ে গার্ড দেওয়া হয়। মমতার মিছিলের জন্যে বন্ধ করে দেওয়া হয় যান চলাচল। সুপ্রিমোর ঠিক পেছনেই ছিল তার ভাইপো যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এবং নেতাকর্মীরা।
মিছিল হয় এসপ্ল্যানেডের মেয়ো রোড থেকে দক্ষিণ কলকাতার হাজরা মোড় পর্যন্ত। মিছিল শুরুর আগে গান্ধী মূর্তিতে পুষ্পার্পন করেন মমতা বন্দোপাধ্যায়। এদিন নন্দীগ্রাম দিবস উপলক্ষ হলেও মিছিলে ছিলেন কলকাতায় এগারো জন দলীয় বিধায়ক প্রার্থীরা। ছিলেন ধর্মগুরুরা। ছিলের টালিগঞ্জের কলাকুশলীরা। মিছিলে কর্মী সমর্থকদের গলায় ছিল ‘খেলা হবে, খেলা হবে। ভাঙা পায়েই খেলা হবে’ স্লোগান।
এরপর হাজরা মোড়ে মমতার বক্তব্য রাখার জন্য এক মঞ্চ করা হয়। মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রীর উঠার জন্য আলাদা ব্যবস্থা করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমার পায়ে এখনও ব্যথা রয়েছে। কিন্তু জনগণের ব্যথা আমি বেশি অনুভব করছি। বিরোধীরা চক্রান্ত করছে। গণতন্ত্রের যন্ত্রনা অনেক বড়। মানুষের কাছ থেকে শক্তি পেয়েই আমি আজ পথে নেমেছি। অনেক ঘাত-প্রত্যাঘাতের মধ্য দিয়ে আমার জীবন গেছে। জমি অন্দোলনে নন্দীগ্রাম আমার প্রাণ নিতে চেয়েছিল। আবার বাঁচিয়েছিলো। আমাকে চিকিৎসকেরা বিশ্রাম নিতে বলেছিলো। কিন্তু এখন তার সময় নয়। ভাঙা পা নিয়েই সারা বাংলা প্রচার করবো।
এরপর তিনি কর্মী সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘খেলা হবে। নিশ্চয়ই খেলা হবে। ’
রাজপথে মিছিল-সভা শেষ করে ১৪ মার্চ দুর্গাপুর চলে যান মমতা ব্যানার্জি। সোমবার (১৫ মার্চ) থেকেই শুরু হবে তাঁর জেলা সফর। পুরুলিয়া এবং বাঁকুড়া জেলায় জোড়া সভা করবেন তিনি। তবে নন্দীগ্রামের ঘটনার পর রোববার (১৪ মার্চ) প্রথমবার প্রকাশ্যে এলেন মুখ্যমন্ত্রী। হুইল চেয়ারে বসেই ভোটের প্রচার করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১০ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০২১
ভিএস/এইচএডি/