কলকাতা: ভারতে জাতীয়স্তরে বিজেপি বিরোধী ঐক্য গড়ে তুলতে মরিয়া মমতার দল তৃণমূল কংগ্রেস। সেই লক্ষ্যে দুই দিনের সফরে মহারাষ্ট্রে গিয়েছিলেন তৃণমূল প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় শিবসেনার সুপ্রিমো উদ্ধব ঠাকরের ছেলে তথা মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী আদিত্য ঠাকরের সঙ্গে বৈঠক করেন মমতা। এরপর বুধবার (০১ ডিসেম্বর) বিকেলে এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পাওয়ারের সঙ্গে একঘণ্টার বৈঠক করেন। শরদ পাওয়ারের বাসভবনেই এই বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে দুজনকে একসঙ্গে বাইরে আসতে দেখা যায়। তবে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি বিরোধী মমতার ফ্রন্টে, গান্ধী পরিবার অর্থাৎ কংগ্রেস থাকবে কি-না তাই এখন আলোচ্য বিষয়।
এদিন সাংবাদিকদের সামনে কংগ্রেসকে সঙ্গে রাখা নিয়ে মমতা বলেছেন, ‘যারা ময়দানে নেমে লড়াই করবে, তাদের সঙ্গে রাখা হবে। কেউ ময়দানে নেমে লড়াই করতে না চাইলে, আমরা কী করব। তখন আমাদের নিজেদের মতো লড়তে হবে। ’ অর্থাৎ এদিন মমতা স্পষ্টই বুঝিয়ে দিলেন, যদি কংগ্রেস মমতার হাত না ধরে তাহলে মমতার নতুন ফ্রন্ট, বিজেপি এবং কংগ্রেস দুই জাতীয় দলের বিপক্ষে থাকবে। এভাবেই কংগ্রেসকে বিজেপি বিরোধী জোটে রাখা নিয়ে অবস্থান স্পষ্ট করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী।
শরদ পাওয়ার বলেন, কে বিজেপি বিরোধী ফ্রন্টের নেতা হবে—এ নিয়ে এখনও ভাবার সময় আসেনি। একজোট হয়ে মাঠে নেমে লড়াই এখন প্রধান লক্ষ্য। যারা লড়াই করবে তাদের সঙ্গে রাখা হবে।
এছাড়া এদিন মুম্বাইয়ে বিশিষ্টজনদের সঙ্গে বৈঠক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলিউডের বিখ্যাত গীতিকার-চিত্রনাট্যকার জাভেদ আখতারের উদ্যোগে আয়োজিত এই বৈঠকে মহেশ ভাট, শোভা দে, মেধা পাটকর, স্বরা ভাস্কর, রিচা চাড্ডার মতো অনেক পরিচিত মুখ উপস্থিত ছিলেন। অভিনেত্রী স্বরা ভাস্কর উচ্ছ্বসিত হয়ে বলেন, ‘দিদি বাংলায় খেলা দেখিয়ে দিয়েছেন। তিনি আমাদের কাছে অনুপ্রেরণা। ’ তবে তার মুখের কথা শেষ না হতেই মমতা বলেন, ‘খেলা হয়ে গিয়েছে নয়, খেলা হবে। বিজেপিকে বোল্ড আউট করবই। ’
তবে এদিন সাহিত্যিক শোভা দে সরাসরি মমতাকে প্রশ্ন করেন, ‘যদি নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী না হন। তাহলে কে?’
মমতা বলেন, ‘সেটা পরবর্তী আলোচনার বিষয়। আমাদের এখন লক্ষ্য ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিজেপিকে হারিয়ে গণতন্ত্র রক্ষা করা। এ ব্যাপারে সংবাদমাধ্যমকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে। নাগরিক সমাজকে উদ্যোগী হতে হবে। আপনারাই পারবেন বিজেপিকে বোল্ড আউট করতে। পূর্ণশক্তি নিয়ে আমাদের লড়তে হবে। ’
আরব সাগরের তীরে অর্থাৎ মহারাষ্ট্রে সফরকালে ‘জয় মারাঠা’ এবং ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেন মমতা। তিনি বুঝিয়ে দিতে চাইছেন, ভারতের জাতীয়স্তরের ভোটে শিবসেনা এবং এনসিপির সঙ্গে জোট গড়তে বদ্ধপরিকর তিনি। অর্থাৎ মহারাষ্ট্রকে সঙ্গে নিয়ে চলাই এখন তৃণমূল নেত্রীর মূল লক্ষ্য।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২০ ঘণ্টা, ০২ ডিসেম্বর, ২০২১
ভিএস/এনএসআর