ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

আগরতলায় শৈশবের স্মৃতিতে ফিরে গেলেন সিমিন হোসেন রিমি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০২১
আগরতলায় শৈশবের স্মৃতিতে ফিরে গেলেন সিমিন হোসেন রিমি

আগরতলা(ত্রিপুরা): একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকে তাজা করতে ত্রিপুরায় এসেছেন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত তাজউদ্দিন আহমদের মেয়ে সংসদ সদস্য (এমপি) সিমিন হোসেন রিমি।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর উপলক্ষে ভারতের রাজধানী দিল্লিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছিলেন সিমিন হোসেন রিমি।


যুদ্ধের বিভীষিকাময় দিনগুলোতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাত থেকে জীবন বাঁচাতে ঝুঁকি নিয়ে তাজউদ্দিনের পরিবারের সদস্যরা ত্রিপুরায় এসে আশ্রয় নিয়েছিলেন।

অতীত দিনের সেই স্মৃতির সন্ধানে তিনি দিল্লীর অনুষ্ঠান শেষে আবার ত্রিপুরায় আসেন এবং সেই সময় তিনিসহ তার পরিবারের সদস্য যে সব জায়গায় ছিলেন সেই জায়গাগুলো ঘুরে দেখেন। তখন তারা সীমান্ত পেরিয়ে শরণাপন্ন হয়েছিলেন ত্রিপুরার সিপাহীজলা জেলার সোনামুড়ার পদ্মশ্রী মহকুমাশাসক হিমাংশু মোহন চৌধুরীর কাছে। তিনি পরম যত্নে বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রীর পরিবারকে আশ্রয় দিয়েছিলেন।

শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সংসদ সিমিন হোসেন রিমি সাবেক মহকুমা শাসকের বড়দোয়ালী এলাকার বাড়িতে গিয়ে দেখা করেন এবং তার লেখা কিছু বই উপহার হিসেবে তুলে দেন।

সৌজন্য সাক্ষাতের পর সাংসদ সংবাদমাধ্যমকে জানান, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ চলছে বাংলাদেশে। তার বয়স তখন মাত্র নয় বছর। চার শিশু কিশোর ভাই বোনের সঙ্গে বাড়িতে একা তার মা সৈয়দা জোহরা। বাবা তাজ উদ্দিন আহমেদ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অতি ঘনিষ্ঠ বিপ্লবী এবং মুক্তি যুদ্ধের অন্যতম সংগঠক। তাই যুদ্ধের সময় অনাহার অর্ধাহারে শরণার্থী শিবিরে আত্মগোপন করে দিন কাটছিল তাদের। পরে ইতিবাচক সাড়া পেয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে জলপথ, স্থলপথে দীর্ঘ গ্রামীণ পথ পাড়ি দিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করে তাদেরকে নিয়ে ত্রিপুরায় এসে পৌঁছান তাদের মা জোহারা। তারা বক্সনগর সীমান্ত দিয়ে সোনামুড়া মহকুমা এসে পৌঁছান তৎকালীন মহকুমা শাসক পদ্মশ্রী হিমাংশু মোহন চৌধুরী তাদের থাকার ব্যবস্থা করেছিলেন।

একাত্তরের সেই স্মৃতি তিনি এখনো ভুলতে পারেননি, তাই ত্রিপুরায় ছুটে এসেছেন এবং যে মহান ব্যক্তি তাদেরকে যত্নসহকারে রেখেছিলেন তার সঙ্গে তিনি আবার দেখা করেছেন। পুরাতন স্মৃতিগুলোকে আবেগ তাড়িত হয়ে যান তিনি।

এদিন সাংসদের সঙ্গে ছিলেন আগরতলা থেকে বাংলাদেশে সরকারি হাইকমিশনের হাই কমিশনার মো. জুবায়ের হোসেন, মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী বন্ধু সাংবাদিক স্বপন ভট্টাচার্য, সমাজসেবী সুমিত সরকার।

সাংবাদিক স্বপন চৌধুরীর বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রীর অটোগ্রাফ নিয়েছিলেন মুক্তিযুদ্ধোত্তর কোন এক সময়। দীর্ঘ বছর এই অটোগ্রাফ তিনি তার কাছে সযত্নে রেখেছিলেন। এদিন এই অটোগ্রাফ প্রধানমন্ত্রী কন্যা সাংসদ সিমিন হোসেন রিমির হাতে তুলে দেন।

সাংসদ বৃহস্পতিবার ত্রিপুরা এসে দিনভর সিপাহী জলা জেলার বক্সনগর সীমান্ত এবং তৎকালীন মহকুমা শাসকের অফিস যেখানে তারা মুক্তিযুদ্ধের সময় ছিলেন এই জায়গাগুলো ঘুরে দেখেন। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ যে মুক্তিযুদ্ধের সময় ভালো কাজের জন্য ভারত সরকার পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর, ২০২১
এসসিএন/এনএইচআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।