আগরতলা (ত্রিপুরা): মিয়াজাকি আমকে বিশ্বের সবচেয়ে দামি আম বলা হয়ে থাকে। এই জাতের আমের আদি ভূমি জাপান।
জাপানে মিয়াজাকিকে আভিজাত্যের প্রতীক মানা হয়ে থাকে, তাই সে দেশে এক কেজি আম দুই লাখ টাকা বা তার বেশি দামে বিক্রি হয়।
এই মিয়াজাকি এখন ত্রিপুরার ধলাই জেলার অন্তর্গত প্রত্যন্ত পাহাড়ি জনপদ পঞ্চরতন এডিসি ভিলেজের যুবক প্রজ্ঞান চাকমার বাগানের গাছে শোভা পাচ্ছে। এবছর তার বাগানে প্রথমবারের মতো এই আম ফলেছে।
প্রজ্ঞান জানান, গত বছর কলকাতা থেকে মিয়াজাকি আম গাছের চারা এনে লাগিয়েছিলেন। প্রথম বছরেই গাছগুলোতে মুকুল আসে, তবে গাছের বৃদ্ধির কথা চিন্তা করে তিনি সব মুকুল ভেঙ্গে ফেলেছিলেন। এবছরও প্রচুর সংখ্যক মুকুল এসেছিল। কিন্তু বেশিরভাগ মুকুল ভেঙ্গে ফেলে, কয়েকটি মুকুল রেখেছিলেন কেমন হচ্ছে তা দেখার জন্য। এই মুকুলগুলোর মধ্য থেকে ৫টি আম ফলেছে।
হঠাৎ করে বিশ্বের সবচেয়ে দামি আমগাছ লাগানোর ভাবনা মাথায় এল কেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, কলকাতার রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে ফাইন আর্টস নিয়ে এম এ কোর্সে পড়াশোনা করেছেন। মেট্রো শহরের কোলাহল তার আছে বেশি যন্ত্রণাদায়ক বলে মনে হতো। এই কোলাহল থেকে মুক্তি পেতে তখন তিনি কলকাতার বিভিন্ন নার্সারি ঘুরে দেখেছেন। নার্সারিগুলোর বিভিন্ন ফলমূলের মধ্যে আম তাকে আকৃষ্ট করেছে। তাই বাড়ি ফিরে নিজের ৪.৫৭ একর জায়গায় আমবাগান গড়ে তুলেছেন।
প্রজ্ঞান পাঁচ বছর ধরে বাগান করছেন। এরমধ্যে দেশ-বিদেশের প্রায় ২০ জাতের আম গাছ তিনি সংগ্রহ করতে পেরেছেন। এগুলোর মধ্যে কয়েকটি নাম হল মিয়াজাকি, আমেরিকান পালমার, আম্রপালি, রাংগুই বার্মিজ, ক্যুজাই, হাড়িভাঙ্গা, কাটিমন, ব্যানানা, ব্রুনাই কিংস, চিয়াংমাই, ব্ল্যাকস্টোন, কিং অফ চাকপাত, আলফনসো, ন্যাম ডকমাই, তাইওয়ান রেড ইত্যাদি। এছাড়াও অন্যান্য ফলের মধ্যে রয়েছে ড্রাগন, আপেল, কুল, রামবুটান। এসব ফলমূলের গাছ তিনি দেশের বিভিন্ন জায়গা এমনকি বিদেশ থেকেও সংগ্রহ করেছেন বলে জানিয়েছেন।
এই তালিকাকে আরও বড় করার ইচ্ছা রয়েছে বলেও জানিয়েছেন প্রজ্ঞান। তাছাড়া আগামী দিনে তিনি বাণিজ্যিকভাবে চাষ শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন। বিশ্বের সবচেয়ে দামি আম দেখার জন্য এখন প্রতিদিন বহু মানুষ প্রজ্ঞানের বাগানে ভিড় জমাচ্ছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩০ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০২২
এসসিএন/এসএ