ঢাকা: বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চায়ন বা রিজার্ভ কমে এখন ৩৩ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। চলতি মাসের শুরুতে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩৫ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলার।
চলমান ডলার সংকট কাটাতে রিজার্ভ থেকে এ মাসে ৭১ মিলিয়ন ডলার বিক্রি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপর রিজার্ভের পরিমান দাঁড়ায় ৩৩ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলার।
বুধবার (৩০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় আপডেট এ তথ্য প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের রিজার্ভ হিসাব পদ্ধতি অনুসরণ করলে রিজার্ভের পরিমাণ আরও কমে। ৩৩ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলার থেকে ৮ দশমিক ৪০ বিলিয়ন বাদ দিলে রিজার্ভের পরিমান দাঁড়ায় ২৫ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি নভেম্বর মাসের এক তারিখে দেশের রিজার্ভ মজুত ছিল ৩৫ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলার। গত ৭ নভেম্বর কিছুটা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৫ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলারে। এরপর নভেম্বরের ৭ তারিখে রিজার্ভ থেকে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) ১৩৫ কোটি ডলার পরিশোধ করা হয়।
পাশাপাশি আমদানি দায় মেটাতে ১৩ কোটি ১০ লাখ ডলার বিক্রি করা হয় রিজার্ভ থেকে। এর ফলে রিজার্ভ কমে প্রায় ৩৪ দশমিক ২৮ বিলিয়নে নেমে আসে।
গত ৯ নভেম্বর রিজার্ভ ছিল ৩৪ দশমিক ২৫ বিলিয়ন, ১৪ নভেম্বর বেড়ে দাঁড়ায় ৩৪ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলারে। এরপর ১৫ নভেম্বর রিজার্ভ থেকে ১১৫ মিলিয়ন ডলার বিক্রি করায় তা নেমে আসে ৩৪ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলারে।
১৬ নভেম্বর ৬৯ মিলিয়ন ডলার বিক্রি করা হলে রিজার্ভ দাঁড়ায় ৩৪ দশমিক ২৪ বিলিয়ন ডলার। পরে ১৭ নভেম্বর আবারও বেড়ে ৩৪ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলার হয়। এরপর তা কমে ২১ নভেম্বর রিজার্ভ দাঁড়ায় ৩৪ দশমিক ২১ বিলিয়ন ডলারে।
গত ২২ নভেম্বর ৩৫ মিলিয়ন ডলার বিক্রি করায় রিজার্ভ দাঁড়ায় ৩৪ দশমিক শূন্য ৯ বিলিয়ন ডলারে।
সবশেষ ২৩ নভেম্বর রিজার্ভ মজুত আরও কমে দাঁড়ায় ৩৪ দশমিক শূন্য ৭ বিলিয়ন ডলারে। এরপর আজ বুধবার সরকারি ক্রয়বাবদ ৭৭ মিলিয়ন ডলার বিক্রি করা হয় রিজার্ভ থেকে। এতে বৈদেশিক মজুত আরও কমে দাঁড়িয়েছে ৩৩ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলারে।
চলতি মাস থেকে রেমিটেন্স, রফতানি আয়সহ বৈদেশিক মুদ্রার উৎসগুলো বৃদ্ধির ঘুরে দাঁড়াবে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হলেও এ ধরনের আশ্বাস পুরোপুরি কাজে আসেনি। বরং কমেছে।
ফলে প্রতি সপ্তাহে রিজার্ভ নিচে নামছে। তবে ঋণপত্র খোলা কিছুটা কমলেও এর প্রভাব বৈদেশিক আয়ে এখনই প্রভাব দেখা যাচ্ছে না।
এ বিষয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, প্রতিদিন সকাল বিকেল রিজার্ভ কমার মতো পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে একেবারে হ্রাস বন্ধ হওয়ার মতো পরিস্থিতি এখনো হয়নি। আশা করেছিলাম বৈদেশিক বাণিজ্যে ইতিবাচক ফল এখন পাবো। সেটা পাচ্ছি। কিন্তু পুরোপুরি সুফল পেতে আরও কিছুটা সময় লাগছে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের কারণে আমাদেরও সংকট মোকাবেলা করা লাগছে। আশা করছি জানুয়ার-ফেব্রুয়ারি মাসে পরিস্থিতি আমাদের পক্ষে আসবে। তখন রিজার্ভ হ্রাস বন্ধ হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, ৩০ নভেম্বর , ২০২২
জেডএ/এসএএইচ