ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বিদায় ২০২২

বসুন্ধরা গ্রুপের নানা খাতে সাফল্য, স্বীকৃতি অর্জন

গৌতম ঘোষ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১, ২০২৩
বসুন্ধরা গ্রুপের নানা খাতে সাফল্য, স্বীকৃতি অর্জন

ঢাকা: বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের দৃঢ় মনোবল, মেধা ও মননের সমন্বয়ে বসুন্ধরা গ্রুপ এগিয়ে চলেছে দুর্বার গতিতে। তাঁর একনিষ্ঠ পরিশ্রম ও নির্দেশনায় দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ খাতে বিস্তৃত হয়েছে এ শিল্পগোষ্ঠী।

ব্যাপকভাবে বিস্তৃত হয়ে নানা খাতে সাফল্যের জোয়ার তুলেছে। এর ফলে ২০২২ সালে বসুন্ধরা গ্রুপ পেয়েছে একের পর এক আন্তর্জাতিক পুরস্কার ও স্বীকৃতি।

বসুন্ধরা গ্রুপের স্লোগানই হলো ‘দেশ ও মানুষের কল্যাণে’ কাজ করা। এই অন্তর্নিহিত শক্তিতে বসুন্ধরা গ্রুপ দেশ মাতৃকার যেকোনো প্রয়োজনে অগ্রগামী থাকে। নানাবিধ ব্যবসাসফল উদ্যোগের মাধ্যমে দেশের জিডিপিতে প্রত্যক্ষভাবে অবদান রাখার পাশাপাশি বসুন্ধরা গ্রুপ গ্রাম বাংলার আর্থ সামাজিক উন্নয়নেও কাজ করে যাচ্ছে। ফলে পেয়েছে নানা স্বীকৃতি।

গণমাধ্যমে অবদানে মাদার তেরেসা অ্যাওয়ার্ড:
বাংলাদেশের গণমাধ্যম জগতে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ‘সেন্ট মাদার তেরেসা আন্তর্জাতিক অ্যাওয়ার্ড’ পুরস্কার পেয়েছেন বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীর। আন্তর্জাতিক মাদার তেরেসা অ্যাওয়ার্ড প্রবর্তনের ২২তম বর্ষপূর্তি উদযাপন উপলক্ষে (২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২) বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কলকাতার ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশনস’ (আইসিসিআর)-এর সত্যজিৎ রায় অডিটোরিয়ামে এক অনুষ্ঠানে এই সম্মাননা দেয় মাদার তেরেসা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড কমিটি। পুরস্কার হিসেবে সায়েম সোবহান আনভীরের হাতে তুলে দেওয়া হয় একটি মানপত্র, মাদার তেরেসার ছবিসহ একটি স্মারক ও উত্তরীয়।

মাদার তেরেসা অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করছেন বসুন্ধরা এমডি

‘পারসন অব দ্য ইয়ার’ সম্মানে ভূ‌ষিত বসুন্ধরা এম‌ডি:
‘গ্রেটেস্ট ব্র্যান্ড’ পুরস্কার জিতেছে বাংলাদেশের শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপ। আর ‘পারসন অব দ্য ইয়ার’ হয়েছেন বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীর। ভোক্তা ও শিল্প পর্যায়ে বিশেষ অবদানের জন্য তাঁকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়। আর তাঁকে মনোনীত করে ইউনাইটেড রিসার্চ সার্ভিসেস অ্যান্ড এশিয়াওয়ান ম্যাগাজিন।

গ্রেটেস্ট ব্র্যান্ড অ্যান্ড লিডার্স ২০২১-২০২২ এশিয়া-আমেরিকা-আফ্রিকা অ্যাওয়ার্ড প্রোগামে বিরল সম্মানে ভূষিত করা হয়। এবারের ১৭তম আসরে এশিয়াওয়ান মিডিয়া গ্রুপের আয়োজনে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে ম্যারিয়ট হোটেলে জমকালো অনুষ্ঠানে এসব সম্মাননা দেওয়া হয়।

ট্রাব অ্যাওয়ার্ড অর্জন:
আর্তমানবতার সেবা, শিল্প-বাণিজ্য ও ক্রীড়ায় বিশেষ অবদানের জন্য টেলিভিশন রিপোর্টার্স ইউনিটি অব বাংলাদেশ (ট্রাব) অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর।

২০২২ সালের ১৫ ডিসেম্বর রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ‘২৮তম ট্রাব অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করেন।

‘গ্র্যান্ড স্টার অব সাকসেস’ পুরস্কারে ভূষিত সাফওয়ান সোবহান:
লন্ডনের শিক্ষা-সংস্কৃতির তীর্থস্থান অক্সফোর্ডের ঐতিহাসিক টাউন হলের কনফারেন্স এরিনাতে আন্তর্জাতিক সক্রেটিস অ্যাওয়ার্ড সেরিমনি অনুষ্ঠিত হয় বুধবার (২১ ডিসেম্বর)। সক্রেটিস অ্যাওয়ার্ড সেরিমনিতে বিরল ‘গ্র্যান্ড স্টার অব সাকসেস ২০২২’ সম্মানে ভূষিত হন বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সাফওয়ান সোবহান। আধুনিক বিশ্বে সামাজিক ও ব্যবসায় ক্ষেত্রে অসামান্য উৎকর্ষতা ও সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ ইবিএ কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশের তরুণ উদ্যোক্তা সাফওয়ান সোবহানকে এই পুরস্কার প্রদান করে। বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সাফওয়ান সোবহান গ্রুপটির ক্রমবর্ধমান উন্নয়নে সফলতার সাথে ভূমিকা রেখে চলেছেন। তাঁর অগ্রণী নেতৃত্বে বর্তমান আধুনিক বিশ্বে বহুমুখী ব্যবসায়িক নির্দেশনার মাধ্যমে শুধু বসুন্ধরা গ্রুপেই নয় বরং বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রধান ভূমিকা পালন করে আসছেন। ২০০০ সাল থেকে বিশ্বের নানা ধরনের ব্যবসায়ী এবং সৃজনশীল ব্যক্তিত্বদের জন্য এই অনুষ্ঠান খুবই অর্থবহ এবং সম্মানজনক।

ট্যাক্স কার্ড ও সম্মাননা অর্জন:
সেরা করদাতাদের উৎসাহিত করতে প্রতিবছরের মতো বিগত বছরও ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ট্যাক্স কার্ড দিয়েছে  জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ব্যক্তি পর্যায়ে তরুণ ক্যাটাগরিতে (৪০ বছর) সেরা করদাতা হিসেবে ট্যাক্স কার্ড ও সম্মাননা পেয়েছেন দেশের শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সাফওয়ান সোবহান। একই সঙ্গে বসুন্ধরা গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডকে গত ছয় বছরের ধারাবাহিকতায় সপ্তমবারের মতো প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া ক্যাটাগরিতে ট্যাক্স কার্ড ও সম্মাননা প্রদান করে এনবিআর। ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর অফিসার্স ক্লাবে ট্যাক্সকার্ড ও সেরা করদাতা সম্মাননা দেওয়া হয়।

‘গ্লোবাল লিডার অব দ্য ইয়ার’ সম্মানে ভূষিত সাফওয়ান সোবহান:
শিল্প ও সমাজসেবায় অসামান্য অবদানের জন্য দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সাফওয়ান সোবহানকে ‘গ্লোবাল এশিয়ান অব দ্য ইয়ার ২০২১-২২’ সম্মানে ভূষিত করা হয়। তাকে মনোনীত করে এশিয়া ইউরোপ বিজনেস অ্যান্ড সোশ্যাল গ্রুপ। অসামান্য নেতৃত্বগুণ আর ব্যবসা পরিচালনার দক্ষতা প্রদর্শনের স্বীকৃতি হিসেবে ২০২২ সালের (১২ এপ্রিল) লন্ডনের ম্যারিওট হোটেলে এক জমকালো অনুষ্ঠানে এশিয়াওয়ান মিডিয়া গ্রুপ আয়োজিত ‘এশিয়া-ইউরোপ বিজনেস অ্যান্ড সোশ্যাল ফোরাম’- এর ১৭তম আসরে সাফওয়ান সোবহানের হাতে এই সর্বোচ্চ আন্তর্জাতিক সম্মাননা স্মারক তুলে দেওয়া হয়।

গ্লোবাল লিডার অব দ্য ইয়ার’ সম্মানে ভূষিত সাফওয়ান সোবহান

কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতায় শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতি:
দেশের বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপ যুক্তরাজ্যভিত্তিক অর্থ ও ব্যবসা বিষয়ক সাময়িকী ‘দ্য গ্লোবাল ইকোনমিক্স’-এর বিবেচনায় চলতি বছর ‘বেস্ট সিএসআর (কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটি) কনগ্লোমারেট গ্রুপ’ নির্বাচিত হয়েছে। ২০২২ সালের আগস্ট মাসে দ্য গ্লোবাল ইকোনমিক্স এই তালিকা প্রকাশ করে। সেরা সিএসআর কনগ্লোমারেট ক্যাটাগরিতে সেখানে জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশের বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপ।

গ্রাম বাংলার আর্থ সামাজিক উন্নয়নে কাজ করা, করোনা মহামারির সময় দেশের মানুষের কল্যাণে অবদান রাখা, বিনা খরচে চক্ষু চিকিৎসাসহ নানাবিধ চিকিৎসা সেবা প্রদান, দেশের সুবিধাবঞ্চিত-বুদ্ধি প্রতিবন্ধী শিশুদের পড়াশোনার সুযোগ করে দেওয়াসহ বিভিন্ন অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বাংলাদেশের সেরা সিএসআর কনগ্লোমারেট গ্রুপ হিসেবে এই পুরস্কার লাভ করেছে বসুন্ধরা গ্রুপ।

তৃতীয়বারের মতো বেস্ট ব্র্যান্ড অ্যাওয়ার্ড: 
বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরামের উদ্যোগে আয়োজিত বেস্ট ব্র্যান্ড অ্যাওয়ার্ডের ১৪তম আসরে এলপি গ্যাস ক্যাটাগরিতে বেস্ট ব্র্যান্ডের স্বীকৃতি পেয়েছে বসুন্ধরা এলপি গ্যাস। তৃতীয়বারের মতো এ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় এই ব্র্যান্ডটি।

২০২২ সালের ২৪ ডিসেম্বর রাজধানীর ‘লা মেরিডিয়ান’ হোটেলে জমকালো আয়োজনের মাধ্যমে এই অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়। এর আগেও দুবার আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন সুপার ব্র্যান্ড অ্যাওয়ার্ড অর্জন করে বসুন্ধরা এলপি গ্যাস।

দেশের ব্র্যান্ডগুলোকে অনুপ্রাণিত করতে বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরাম গত ১৪ বছর ধরে বেস্ট ব্র্যান্ড অ্যাওয়ার্ডের মাধ্যমে সর্বাধিক প্রিয় ব্র্যান্ডকে সম্মানিত করে চলেছে। বেস্ট ব্র্যান্ড অ্যাওয়ার্ডের মূল উদ্দেশ্য কঠোর প্রচেষ্টার মাধ্যমে অর্জিত ব্র্যান্ডগুলোর সাফল্যের প্রদর্শন এবং উদযাপন।

সর্বাধিক পণ্য বিক্রয়ের রেকর্ড: 
২০২২ সালের নভেম্বর মাসে সর্বাধিক পণ্য বিক্রয়ের রেকর্ড গড়েছে বসুন্ধরা পেপার মিলস্‌ লিমিটেড। এর অধীনে রয়েছে বসুন্ধরা টিস্যু, বসুন্ধরা খাতা, বসুন্ধরা পেপার, বসুন্ধরা ডায়াপ্যান্টসহ আরো অন্যান্য পণ্য। বাংলাদেশে এই প্রথম কোনো পেপার মিলস্‌ এক মাসে রেকর্ড পরিমাণ পণ্য বিক্রয় করলো।

মেট্রোরেলের গর্বিত অংশীদার বসুন্ধরা সিমেন্ট:
বাংলাদেশের প্রথম মেট্রোরেল প্রকল্পে ব্যবহার করা হয়েছে দেশের শীর্ষ শিল্পোদ্যোক্তা পরিবার বসুন্ধরা গ্রুপের উৎপাদিত আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন বসুন্ধরা সিমেন্ট। একমাত্র বসুন্ধরা সিমেন্টে নির্মিত এই মেগাপ্রকল্পের উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১১.৭৩ কিলোমিটার পথ উদ্বোধন করা হয়েছে। প্রকল্পটিতে এখন পর্যন্ত প্রায় তিন লাখ ৪৮ হাজার মেট্রিক টন গুণে-মানে সমৃদ্ধ বসুন্ধরা সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়েছে।

বসুন্ধরা সিমেন্ট মেট্রোরেল ছাড়াও সরকারের অন্যান্য মেগাপ্রকল্পে উল্লেখযোগ্য হারে ব্যবহার করা হচ্ছে। তার মধ্যে রয়েছে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প, পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প, পদ্মা সেতু নদী প্রশিক্ষণ প্রকল্প, ফার্স্ট ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে (ফেজ-১), ফার্স্ট  ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে (ফেজ-২ ও ৩), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু নির্মাণ প্রকল্প, আশুগঞ্জ নদীবন্দর—সরাইল-দরখার-আখাউড়া স্থলবন্দর সড়ক চার লেন জাতীয় মহাসড়ক প্রকল্প হিসেবে উন্নয়ন (৫০.৫৮ কিলোমিটার), পায়রা সেতু প্রকল্প, বাঁশখালীর এসএস পাওয়ার-১ (এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট কয়লাচালিত বিদ্যুকেন্দ্র প্রকল্প), চায়না কনস্ট্রাকশন সেভেনথ ইঞ্জিনিয়ারিং ডিভিশন করপোরেশন লিমিটেড, উপকূলীয় বাঁধ উন্নয়ন প্রকল্প-২ (সিইআইপি-২), অষ্টম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু, বৃহত্তর ঢাকা টেকসই নগর পরিবহন প্রকল্প (বিআরটি প্রকল্প), মেঘনাঘাটে একটি সম্মিলিত সাইকেল পাওয়ার স্টেশন, আশুগঞ্জ ৪০০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্লান্ট, অ্যামিগো বাংলাদেশ লিমিটেড প্রকল্প, খুলনা সারফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট এবং কেওয়াসার জলাধার, সপ্তম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু, রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, মাতারবাড়ী আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, কালনা ব্রিজ, দ্বিতীয় রূপসা রেলওয়ে সেতু প্রকল্প প্রভৃতি।

মেট্রোরেল প্রকল্প

স্বর্ণ শিল্পের যুগান্তকারী অধ্যায়ের সূচনা: 
স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের এক ছাতার নিচে আনতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর। বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) সভাপতি হওয়ার পর থেকে নতুন গতিপথ পেয়েছে সংগঠনটি। যার ফলস্বরূপ বাজুসের সদস্য সংখ্যা ৪০ হাজারে দাঁড়িয়েছে। জুয়েলারি ব্যবসায় চোরাচালান রোধ করে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহীতা প্রতিষ্ঠায় সব স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে এক ছাতার নিচে আনতে দেশের প্রতিটি জেলায় প্রতিনিধি সম্মেলন করা হচ্ছে।

বিদেশে রপ্তানির মধ্য দিয়ে স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা যাতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারে, সরকারকে ভ্যাট-ট্যাক্স দিয়ে সঠিক পথে আনা যায় এবং ফরেন রেমিট্যান্স আনার মাধ্যমে স্বর্ণ ব্যবসা যেন জিডিপিতে অবদান রাখতে পারে, সেই লক্ষ্য নিয়ে বাজুস এগিয়ে যাচ্ছে। এজন্য সব বৈধ স্বর্ণ ব্যবসায়ী, জুয়েলার্সের দোকানে বাজুসের স্টিকার, আইডি কার্ড দেওয়া হচ্ছে, যাতে তারা কোনো ধরনের হয়রানির শিকার না হন। বসুন্ধরা গ্রুপ এরইমধ্যে গোল্ড রিফাইনারি স্থাপনের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এ বছরই আন্তর্জাতিক বাজারের দেখা মিলতে পারে মেইড ইন বাংলাদেশ লেকা গোল্ড।  

পুঁজিবাজারে নতুন পথ দেখাচ্ছে বসুন্ধরা:
দেশের উন্নয়নে বসুন্ধরা গ্রুপ সব সময়ই দুঃসাহসিক উদ্যোগ নেয়। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) কৌশলগত অংশীদার (স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার) হিসেবে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরুর মধ্য দিয়ে দেশের অর্থনীতিকে আরেক ধাপ এগিয়ে নিল শীর্ষ শিল্প গ্রুপটি। এই উদ্যোগের মধ্য দিয়ে পুঁজিবাজারকে নতুন পথ দেখাচ্ছে বসুন্ধরা গ্রুপ। সম্প্রতি সিএসই ও বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতিষ্ঠান এবিজি লিমিটেডের মধ্যে চুক্তি সই হয়। সিএসইর পক্ষে ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো. গোলাম ফারুক এবং এবিজি লিমিটেডের পক্ষে ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর চুক্তিতে সই করেন। সিএসইর ২৫ শতাংশ শেয়ার কেনার মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি এই পুঁজিবাজারের মালিকানায় কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়।

চট্টগ্রামে সিএসই ও বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতিষ্ঠান এবিজি লিমিটেডের মধ্যে চুক্তি সই অনুষ্ঠান

বসুন্ধরা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড:
রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) ২০২২ সালের ৩০ মে অনুষ্ঠিত হয় বসুন্ধরা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড। দেশে প্রথমবারের মতো এ আয়োজনে পুরস্কার দেওয়া হয় ১১ জন সাংবাদিককে। মুক্তিযুদ্ধ, অপরাধ ও দুর্নীতি, নারী ও শিশু ক্যাটাগরির প্রতিটিতে প্রিন্ট, অনলাইন ও ইলেকট্রনিক মাধ্যমের সেরা তিনটি প্রতিবেদন করে মোট ৯ জনকে পুরস্কার দেওয়া হবে। অনুসন্ধানী প্রামাণ্যচিত্র ও আলোকচিত্রের জন্য পুরস্কার দেওয়া হবে দুইজনকে। প্রত্যেক বিজয়ী পান আড়াই লাখ টাকা, ক্রেস্ট এবং সনদপত্র। অন্যদিকে, তৃণমূল সাংবাদিকতায় অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সারা দেশের ৬৪ জনকে বিশেষ সম্মাননা দেওয়া হয়।  

বসুন্ধরা চক্ষু হাসপাতালে নিখরচায় রোগীর ছানি অপারেশন:
বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটে গরীব-দুস্থ রোগীদের নিখরচায় চোখের ছানি অপারেশন করা হয়েছে বছর জুড়ে। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার সাবরিনা সোবহান রোডে অবস্থিত বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট, ভিশন কেয়ার ফাউন্ডেশন এবং নবজাগরণ প্রতিবন্ধী অধিকার সংস্থার যৌথ উদ্যোগে এ ফ্রি অপারেশন করা হয়।

কৃষকের পাশে আইনি সহায়তা নিয়ে বসুন্ধরা:
পাবনার ঈশ্বরদীতে বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক নামের একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে টাকা ফেরত না দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার হন ১২ কৃষক। এছাড়া মামলার মোট ৩৭ আসামির বাকি ২৫ কৃষক আদালতে আত্মসমর্পন করে জামিন চাইলে আদালত তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। কৃষকদের পক্ষে আইনি প্রক্রিয়া চালাতে যাবতীয় সহায়তা নিয়ে তাদের পাশে দাঁড়ায় দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগ্রুপ বসুন্ধরা গ্রুপ। কৃষকদের ঋণও পরিশোধ করে দেওয়া হয়।

অটিস্টিক শিশুদের নিয়ে বসুন্ধরা স্পেশাল চিলড্রেন ফাউন্ডেশন:
অটিস্টিক শিশুদের নিয়ে ‘বসুন্ধরা স্পেশাল চিলড্রেন ফাউন্ডেশন: এসো মিলি সবে প্রাণের উৎসবে’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বসুন্ধরা গ্রুপের ডিরেক্টর ও বসুন্ধরা স্পেশাল চিলড্রেন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইয়াশা সোবহানের উদ্যোগে অটিস্টিক শিশুদের মেধা বিকাশে ও তাদের এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা যোগাতে এ অনুষ্ঠান করা হয়।  

বসুন্ধরা পেপার মিলসের বিক্রিত প্রতিটি পণ্যের একটি নির্দিষ্ট অংশ অটিস্টিক শিশুদের উন্নয়নে ব্যয় করা হয়। অটিস্টিক ও অন্য প্রায় সব ধরনের সুবিধাবঞ্চিত প্রতিবন্ধী শিশুর দাতব্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঢাকার কেরানীগঞ্জে বসুন্ধরা রিভারভিউ প্রজেক্টে ২০১৭ সালের ১ মার্চ থেকে যাত্রা শুরু করে বসুন্ধরা স্পেশাল চিলড্রেন ফাউন্ডেশন। দরিদ্র পরিবারের প্রতিবন্ধী শিশুরা এখানে স্বাভাবিক জীবনের শিক্ষা, একাডেমিক ও কারিগরি শিক্ষা গ্রহণ করছে। শারীরিক সুস্থতা, পড়ালেখার পাশাপাশি পাচ্ছে নানা ধরনের ভোকেশনাল প্রশিক্ষণ। এখানে শিশুদের মানসিক বিকাশ লাভের জন্য রয়েছে সুসজ্জিত শ্রেণিকক্ষ, সেঞ্চুরি ইন্টিগ্রেশন পার্ক ও বড় খেলার মাঠ।

এছাড়া বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে বিনা সুদে ঋণ দিয়ে সাবলম্বী করে তুলছে। ফ্রি-ফ্রাইডে ক্লিনিক বা ফ্রি-আই ক্যাম্প ও বসুন্ধরা আই হাসপাতালের মাধ্যমে বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসাসহ দিয়ে যাচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা। আদ্ব-দ্বীন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মাধ্যমে নামমাত্র খরচে মহিলা ও শিশুসহ অসহায়দের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে। বসুন্ধরা স্পেশাল চিলড্রেন ফাউন্ডেশন সুবিধাবঞ্চিত শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধীদের যোগ্যতম মানুষ গড়ায় উপযুক্ত পড়াশোনার সুযোগ করে দিয়েছে। এছাড়াও নিয়মিতভাবে নানাবিধ জনহিতকর উদ্যোগ যেমন- দেশের দরিদ্র ও অস্বচ্ছল পরিবারের শিশুদের হৃদরোগ, ব্যয়বহুল ক্যান্সারের চিকিৎসা সহায়তা বা সিআরপি-তে সরাসরি অর্থ সাহায্যে বসুন্ধরা গ্রুপের নাম আসে সবার আগে।

বর্তমানে মানিকগঞ্জে অলাভজনক হাসপাতাল নির্মাণ প্রক্রিয়াধীন আছে। মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পাওয়া অদম্য মেধাবীদের বৃত্তির ব্যবস্থা করে দেওয়া-সহ বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের অর্থ বৃত্তির ব্যবস্থা, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্কুলে অবকাঠামো তথা কম্পিউটার প্রদান, বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি-এর অফিস নির্মাণের জন্য জমি প্রদান ইত্যাদি বসুন্ধরা গ্রুপের একটি ধারাবাহিক প্রচেষ্টা।

করোনা দুর্যোগের সময় বসুন্ধরা গ্রুপ একক তত্ত্বাবধানে দেশব্যাপী মানুষের কাছে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিয়েছিল। শুধু তা-ই নয়, প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে নগদ অর্থ সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি বসুন্ধরা গ্রুপ কোভিডে সম্মুখ যোদ্ধাদের বিশেষ করে বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা যেমন-পুলিশ, র‍্যাব, আর্মি, ডাক্তারদের বিনামূল্যে নিরলসভাবে ওষুধ ও মাস্ক বিতরণ করেছিল। করোনা মোকাবেলায় আইসিসিবিতে অস্থায়ীভাবে বিশাল হাসপাতালের জন্য সরকারকে বিনামূল্যে জায়গা প্রদান করেছিল।

বন্যাদুর্গত এলাকায় মানুষের মাঝে ব্যাপক আকারে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছিল। এছাড়াও খেলাধুলায় পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে যুব সমাজকে মাদকাসক্তি থেকে দূরে রাখতেও কাজ করে যাচ্ছে গ্রুপটি। বাংলাদেশে খেলাধুলার মান উন্নয়নে গ্রুপটির অবদান অনস্বীকার্য। বসুন্ধরা কিংস বাংলাদেশের একটি প্রথম সারির চ্যাম্পিয়ন ফুটবল টিম। শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব এবং শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে রয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপ।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০১, ২০২৩
জিসিজি 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।