ঢাকা: রপ্তানির লক্ষ্যপূরণে বন্ড-আমদানিসহ তিন দাবি জানিয়েছে গার্মেন্টস অ্যাক্সেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং ম্যানফ্যকিচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএপিএমইএ)।
রোববার (৮ জানুয়ারি) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দাবিগুলো জানান সংগঠনটির সভাপতি মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন মতি।
আগামী ১১ জানুয়ারি থেকে বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটিতে (আইসিসিবি) আয়োজিত হবে তৈরি পোশাকের অ্যাক্সেসরিজ ও প্যাকেজিং এক্সপো (গ্যাপেক্সপো) মেলা। এ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনটি আয়োজিত হয়।
রপ্তানির লক্ষ্যপূরণে দেশের প্রধান রপ্তানিপণ্য তৈরি পোশাকের অ্যাক্সেসরিজ ও প্যাকেজিং পণ্যশিল্পের বিদ্যমান সমস্যা সমাধান ও নীতি সহায়তাসহ বিজিএপিএমইএ’র অপর দাবিগুলো হলো- বন্ড ও আমদানির অনুমতি পত্র ইস্যু করার ক্ষমতা বিজিএপিএমইএ’র হাতে হস্তান্তর এবং ট্রেড লাইসেন্স প্রতি বছর নবায়নের পরিবর্তে পাঁচ বছর অন্তর নবায়নের ব্যবস্থা করা।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, আইসিসিবি’র নবরাত্রি হল এবং তৎসংলগ্ন তাবুতে গ্যাপেক্সপো-২৩ অনুষ্ঠিত হবে। এবার তাঁবু সহ ১০টি হলে মেলা অনুষ্ঠিত হবে। দেড়শ এক্সিবিউটর ৬৫০ থেকে ৬৬০টি স্টলে মেলায় অংশ নেবে। মেলায় দেশি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বিদেশি প্রতিষ্ঠান অংশ নেবে। বিদেশি গার্মেন্টসে অ্যাক্সেসরিজ প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য জাপান, ভারত, ভিয়েতনাম, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, জার্মানি।
বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি প্রধান অতিথি থেকে মেলা উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, বিজিএমইএ’র সভাপতি ফারুক হাসান ও ভারতের গুজরাটের চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাট্রিজের সভাপতি হিমাংশু হাসমুকভাই বোদাওয়ালাসহ মেলায় তৈরি পোশাক শিল্পের দুই উপখাত ওভেন ও নিটের উদ্যোক্তা এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীরা উপস্থিত থাকবেন।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন মতি বলেন, দেশের তৈরি পোশাক শিল্পে অ্যাক্সেসরিজের চাহিদার শতভাগ সরবরাহ করার ক্ষমতা দেশের প্রতিষ্ঠানেরই সক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু তৈরি পোশাকের বিদেশি ক্রেতারা কার্যাদেশ দেওয়ার সময় তাদের পছন্দের দেশের পণ্যের চাহিদা দিয়ে থাকে। এর ফলে দেশের প্রতিষ্ঠানের এ সব অ্যাক্সেসরিজ সরবারহ করা সম্ভব হলেও বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করে আমদানি করা হয়। এক্ষেত্রে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে কার্যাদেশ নেওয়ার সময় দেশি প্রতিষ্ঠানের অ্যাক্সেসরিজ সরবরাহের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। বোঝাতে হবে আমদানি করা অ্যাক্সেসরিজের সমমানের পণ্য দেশেই কম দামে ও কম সময়ে সরবারহ করা সম্ভব।
দেশের অ্যাক্সেসরিজ পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১ হাজার নয়শো’র বেশি। এ সব প্রতিষ্ঠানে ৬০ ধরণের অ্যাক্সেসরিজ পণ্য উৎপাদন হয়ে থাকে। এ খাতের বিনিয়োগের পরিমাণ ৪০ হাজার কোটি টাকার বেশি। কর্মসংস্থান হয়েছে সাত লক্ষাধিক মানুষের। ২১টির বেশি দেশে গত বছরে ৭৫০ ডলারের বেশি মূল্যের অ্যাক্সেসরিজ রপ্তানি হয়েছে বলেও তিনি জানান।
মোয়াজ্জেম হোসেন মতি আরও বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ হলে ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ (ইইউ) অধিকাংশ দেশে পণ্য রপ্তানিতে প্রেফারেন্সিয়াল সুবিধা উঠে গেলে তৈরি পোশাক শিল্পের শতভাগ স্থানীয় অ্যাক্সেসরিজে ভূমিকা রাখবে। সেক্ষেত্রে এখন থেকেই অ্যাক্সেসরিজ শিল্পের অগ্রযাত্রা ও দেশের শতভাগ চাহিদা পূরণ করে রপ্তানিতে সক্ষমতা বৃদ্ধিতে প্রয়োজনীয় নীতি সহায়তা দেওয়ারও দাবি জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৮, ২০২৩
জেএ/এমজে