ঢাকা, রবিবার, ১ পৌষ ১৪৩১, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বাংলাদেশ বিজনেস সামিট শুরু হচ্ছে ১১ মার্চ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৩
বাংলাদেশ বিজনেস সামিট শুরু হচ্ছে ১১ মার্চ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেছেন এফবিসিসিআইর সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠনের (এফবিসিসিআই) ৫০ বছরপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত হতে যাওয়া ‘বাংলাদেশ বিজনেস সামিট-২০২৩’ শুরু হচ্ছে আগামী ১১ মার্চ।   তিন দিনব্যাপী এই সামিট অনুষ্ঠিত হবে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে।

শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন এফবিসিসিআইর সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।

তিনি বলেন, চলতি বছর এফবিসিসিআইয়ের ৫০ বছরপূর্তি হচ্ছে। এজন্য প্রথমেই আমি স্মরণ করতে চাই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। তিনি দেশ স্বাধীন করেছিলেন বলেই এফবিসিসিআই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। স্বাধীনতার আগে বাঙালিরা ব্যবসা-বাণিজ্য করবে এমনটা তো চিন্তাই করতে পারিনি আমরা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে এখন আমরা স্মার্ট বাংলাদেশের পথে এগিয়ে চলেছি। আমাদের এই অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রার পথিকৃৎ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই।

জসিম উদ্দিন বলেন, ১৯৭৩ সাল থেকে যারা এফবিসিসিআইকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তাদেরও ধন্যবাদ দিতে চাই। তাদের শ্রমে-ঘামে আজকের অবস্থানে এসে পৌঁছেছে এফবিসিসিআই। বর্তমানে এফবিসিসিআইতে ৪১২টি পণ্যভিত্তিক বাণিজ্য সংগঠন, জেলা ও মেট্রোপলিটন পর্যায়ে ৮৭টি চেম্বার, নারী উদ্যোক্তা সংক্রান্ত ১৮টি চেম্বার/অ্যাসোসিয়েশন এবং দ্বিপক্ষীয় চেম্বার রয়েছে ২০টি। পণ্যভিত্তিক বাণিজ্য সংগঠনের সংখ্যা আরও বাড়ছে। কারণ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়ছে। স্বাধীনতার পরের অর্থনীতি আর আজকের অর্থনীতির অনেক পার্থক্য। ২০০৮ সালে যেখানে আমাদের অর্থনীতি ছিল ৯০ বিলিয়নের ডলারের, সেই অর্থনীতি আজকে ৪৭০ বিলিয়ন ডলারে এসে দাঁড়িয়েছে।

এফবিসিসিআইয়ের ৫০ বছরপূর্তি উপলক্ষে আমরা আগামী মার্চের ১১ থেকে ১৩ তারিখ ‌‘বাংলাদেশ বিজনেস সামিট ২০২৩’ করতে যাচ্ছি। আমাদের দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রাকে আরও স্বরান্বিত করতে এই সামিট বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে আমি বিশ্বাস করি। এই আয়োজনে আমাদের আন্তর্জাতিক মিডিয়া পার্টনার সিএনএন।

তিনি আরও বলেন, এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বিশ্বের ১২ থেকে ১৫টি দেশের মন্ত্রী অংশ নেবেন। থাকবেন কয়েকটি বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা। ডব্লিউটিওর মহাপরিচালক এবং ইইউর ট্রেড কমিশনারকেও আনার চেষ্টা চলছে। তা ছাড়া বিশ্বের বিভিনন দেশের বৃহৎ কোম্পানির প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানিয়েছি। কেননা, টেকসই শিল্পায়নের লক্ষ্যে সরকার সারাদেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করছে। বেসরকারি বিনিয়োগ আকর্ষণে অবকাঠামো উন্নয়ন করছে। অর্থনীতিকে আরও এগিয়ে নিতে সরকার বিজনেস ফ্যাসিলিটেশনকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছে। সুতরাং এখনই সময় বাংলাদেশকে ব্র্যান্ডিং করার। এখনই সময় আমাদের ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির পথে যাত্রাকে ত্বরানিত করা।

এই সামিট আয়োজনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য-বাণিজ্য ও বিনিযোগ সম্প্রসারণ। বাংলাদেশের অর্থনীতি, বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ সম্ভাবনাকে বৈশ্বিক ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা, বিনিযোগকারী, উদ্ধারক, নীতিনির্ধারক, বাজার বিশ্লেষক এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে তুলে ধরতে এই আয়োজন অগ্রণী ভূমিকা রাখবে বলে আমি বিশ্বাস করি। বাংলাদেশ বিজনেস সামিটে দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্ভাবনা, রাধা এবং উত্তরণের উপায় খুজে বেড় করতে ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারী, বিশ্লেষক এবং নীতিনির্ধারকদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হবে ৩টি প্ল্যানারি সেশন, ১৩টি প্যারালাল মেশন, উন্মুক্ত আলোচনা, বিটুবি, নেটওয়ার্কিং সেশন প্রভৃতি।

তিনি জানান, বাংলাদেশে উৎপাদিত সেরা পণ্যগুলোকে সামিট উপস্থাপন করার জন্য বিজনেস সামিটের পাশাপাশি আমরা বেস্ট অব বাংলাদেশ এক্সপোর আয়োজন করেছি। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে দেশের সম্ভাবনাময় খাতগুলোকে তুলে ধরা হবে এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে। এই এক্সপোতে টেক্সটাইল, কৃষি প্রক্রিয়াজাত খাবার, চামড়া, সিরামিক, পাট এবং হস্তশিল্পসহ বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় বিভিন্ন সেক্টরের গণ্য এবং পরিষেবা প্রদর্শিত হবে। বাংলাদেশে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের প্রচার, বাংলাদেশি পণ্য ও পরিষেবার প্রচার, এবং স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলোর জন্য ব্যবসার সুযোগ তৈরিতে কেস্ট অব বাংলাদেশ এক্সান্থে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।

এর পাশাপাশি দেশের অর্থনীতি এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের বিকাশে বিশেষ অবদানের জন্য উদ্যোক্তাদের সম্মানিত করতে আমরা এবার বাংলাদেশ বিজনেস এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ডচ সম্মাননার ব্যবস্থা করেছে। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অসামান্য স্বকৃতীস্বরুপ এই সম্মাননা দেওয়া হবে। বিশেষ এ সম্মাননার জন্য অর্থনীতিবিদ, সাংবাদিক এবং ব্যবসায়ীদের সমন্বয়ে বিশেষ জুরি বোর্ড গঠন করেছি। তারা ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে। আমি মনে করি, এই উদ্যোগ ব্যবসায়ীদের দেশ বিনির্মাণে আরও উৎসাহিত করবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইর সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, সহ-সভাপতি এম এ মোমেন, সহ সভাপতি আমিন হেলালী, হাবিব উল্লাহ ডন প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৩
এমকে/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।