ঢাকা, শুক্রবার, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

মে মাসের ১২ দিনে প্রবাসী আয় বেড়েছে

সিনিয়র করেসপেন্ডন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩২ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০২৩
মে মাসের ১২ দিনে প্রবাসী আয় বেড়েছে

ঢাকা: হ্রাস-বৃদ্ধির ধারাবাহিকতায় মে মাসের ১২ দিনে প্রবাসী আয় খানিকটা বেড়েছে। প্রবাসীরা মে মাসের প্রথম ১২ দিনে ৭৭ কোটি ৩৯ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার পাঠিয়েছেন, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮ হাজার ৩৫৯ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১০৮ টাকা)।

রোববার (১৪ মে) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

আগের মাস এপ্রিলে প্রবাসীরা রেমিট্যান্স কিছুটা কম পাঠিয়েছিলেন। ধারণা করা হচ্ছিল, ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স আসার ভাটা পড়ল। এপ্রিলে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৬৮ কোটি ৩৫ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার। চলতি মাসের ১২ দিনে দেশে আসা প্রবাসী আয়ের ধারা অব্যাহত থাকলে পুরো মে মাসে আসবে ১৯৩ কোটি ৫০ হাজার ডলার, যা এপ্রিলের চেয়ে বেশি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মূলত রোজার শুরুতেই অনেক প্রবাসী পুরো মাসের জন্য অর্থ পরিবারের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। এ কারণে এপ্রিল মাসে প্রবাসী আয় কমে যায়। মার্চ মাসে প্রবাসীরা পাঠিয়েছিলেন ২০২ কোটি ২৫ লাখ ডলার।

রেমিট্যান্স আয় দেশে পাঠানোর এটাই ঠিক ধারা বলে মনে করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবা উল হক বলেন, এপ্রিল মাসে ঈদের লম্বা ছুটির কারণে প্রবাসী আয় কম এসেছে। চলতি মে মাসে আবার ঠিক হয়ে যাবে। রোববার ১২ দিনের প্রবাসী আয়ের যে তথ্য এলো, তাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বভাসই সঠিক হলো।   

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি ২০২২-২৩ অর্থ বছরের প্রথম দুই মাস জুলাই ও আগস্টে দুইশ কোটির ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছিল। পরে ৬ মাসে প্রবাসী আয় আসায় ভাটা পড়ে। এতে কিছুটা শঙ্কা তৈরি হয়। অবশেষে অর্থ বছরের নবম মাস মার্চে দুইশ কোটি ডলারের মাইলফলক স্পর্শ করে রেমিট্যান্স। তবে পরের মাস এপ্রিলে আবারও হোঁচট খায়।

করোনা মহামারির সময় থেকে প্রবাসী আয়ে সুবাতাস লাগে। অব্যাহতভাবে বেড়েছে প্রবাসী আয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের ১৬ দশমিক ৪২০ বিলিয়ন প্রবাসী আয় থেকে পরের বছর ২০১৯-২০ অর্থ বছরে প্রবাসী আয় উঠে ১৮ দশমিক ২০৫ বিলিয়ন ডলারে। তারপরের  বছরে গতি আরও বাড়ে। ২০২০-২১ অর্থ বছরে প্রবাসী আয় ওঠে ২৪ দশমিক ৭৭৭ বিলিয়ন ডলারে। ২৯২১-২২ অর্থ বছরে কমে দাঁড়ায় ২১ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলারে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, প্রবাসী আয় ব্যাংকিং চ্যানেলে পাঠানোর জন্য গত কয়েক মাস ধরেই বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে। এর ইতিবাচক ফলও পাওয়া যাচ্ছিল। পদক্ষেপগুলো হলো, বৈধ পথে প্রবাসী আয় পাঠানোর বিপরীতে নগদ প্রণোদনা ২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২ দশমিক ৫ শতাংশ করা; প্রবাসী আয় পাঠানো প্রবাসীদের সিআইপি সম্মাননা দেওয়া; প্রবাসী আয় বিতরণ প্রক্রিয়া সম্প্রসারণ ও সহজ করা; অনিবাসী বাংলাদেশিদের জন্য বিনিয়োগ ও গৃহায়ণ অর্থায়ন সুবিধা দেওয়া; ফিনটেক পদ্ধতির আওতায় আন্তর্জাতিক মানি ট্রান্সফার অপারেটরকে বাংলাদেশের ব্যাংকের সঙ্গে ড্রয়িং ব্যবস্থা স্থাপনে উদ্বুদ্ধ করা ও রেমিট্যান্স পাঠাতে ব্যাংক বা এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোর চার্জ ফি মওকুফ।

এছাড়া সেবার বিনিময়ে দেশে প্রবাসী আয় আনার ক্ষেত্রে ফরম ‘সি’ পূরণ করার শর্ত শিথিল করার ব্যবস্থা করা হয়। ঘোষণা ছাড়াই সেবা খাতের উদ্যোক্তা ও রপ্তানিকারকদের ২০ হাজার মার্কিন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আনার সুযোগ দেওয়া হয়। এ সব উদ্যোগের ফলে প্রবাসী আয়ের ইতিবাচক ধারা অব্যাহত থাকবে বলে মনে করা হচ্ছিল। কিন্তু আবার ভাটা পড়ে প্রবাসী আয়ে। মে মাসের ১২ দিনের প্রবাসী আয় ওঠানামার মধ্যেই একটি ঊর্ধ্বমুখী ধারা অব্যাহত থাকবে বলে মনে করছে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩০ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০২৩
জেডএ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।