ঢাকা, রবিবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

অবশেষে চালু হচ্ছে সৈয়দপুর রেলওয়ে সেতু কারখানা 

মো. আমিরুজ্জামান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫০ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০২৩
অবশেষে চালু হচ্ছে সৈয়দপুর রেলওয়ে সেতু কারখানা 

নীলফামারী: দীর্ঘ পাঁচ বছর বন্ধ থাকার পর দেশের বৃহত্তম সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার রেলওয়ে সেতু কারখানা চালু হচ্ছে। আন্দোলন ও সংগ্রামের পর অত্যন্ত দরকারি এ কারখানাটি চালুর উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

 

তবে এতোদিনে অনেক মূল্যবান যন্ত্রপাতি, মেশিনপত্র নষ্ট হয়ে গেছে। কিছু কিছু মূ্ল্যবান মেশিনপত্র মাটিতে মিশে গেছে।  

রেলওয়ে সূত্র জানায়, ১৮৭০ সালে তৎকালীন আসাম-বেঙ্গল রেলওয়ের বৃহত্তম এ কারখানাটি গড়ে ওঠে। এর পাশে একই সময় প্রায় ১৮ একর জমির ওপর গড়ে তোলা হয় গুরুত্বপূর্ণ সেতু কারখানাটি (ব্রিজ ওয়ার্কশপ)। এর উদ্দেশ্য হলো- সারাদেশের রেলপথে যেসব ব্রিজ, কালভার্ট রয়েছে, সেগুলোর উপকরণ, নির্মাণ, স্থাপন এবং সরবরাহ করা।  

ওই কারখানাটিতে রেল সেতুর গার্ডার নির্মাণ, রেলওয়ে স্থাপনার জন্য পানির ট্যাংক নির্মাণ, রেললাইনের জন্য পয়েন্ট অ্যান্ড ক্রেসিং ও ট্যাংক রেল সেটআপ এবং হার্ডিঞ্জ সেতুর জন্য এক্সপাঞ্জ সুইচ নির্মাণ করা হয়। এছাড়া সীমাবদ্ধতার মধ্যেও ওই সেতু কারখানায় রেলের সেতু ও কালভার্ট মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করা হতো।

জনবল সংকটে ২০১৪ সালে ব্রিটিশ আমলের প্রায় ১৫০ বছরের পুরোনো সৈয়দপুর রেলওয়ে সেতু কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর ২০১৮ সালে কারখানাটির কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর দীর্ঘদিন  শ্রমিক-কর্মচারীদের পদচারণা না থাকায় পুরো এলাকা ছেয়ে যায় আগাছায়। খোলা আকাশের নিচে হাজার কোটি টাকার যন্ত্রপাতি পরিত্যক্ত অবস্থায় নষ্ট হচ্ছিল। কারখানাটির এসব মেশিন ইংল্যান্ড, জার্মানি, আমেরিকা, জাপান আর ফ্রান্স থেকে সংগ্রহ করা।

এনিয়ে শ্রমিকরা আন্দোলন, সংগ্রাম ও এলাকাবাসীর চাহিদার কারণে রেলওয়ে সেতু কারখানাটি চালুর উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত ১১ জন খালাসি আর অস্থায়ীভাবে নিয়োগ দেওয়া চারজন দক্ষ জনবল দিয়েই শুরু হয়েছে কারখানার কার্যক্রম। পাশাপাশি চলছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা। তবে শ্রমিকরা বেশিরভাগ শিক্ষানবীশ হওয়ায় কাজ এগুচ্ছে ধীরগতিতে।  

রেলওয়ে সেতু কারখানার সহকারী প্রকৌশলী তহিদুল ইসলাম বলেন, লোকবলের অভাবে কারখানাটি ২০১৮ সালে বন্ধ হয়ে যায়। এরপর কারখানাটি দেখভালের জন্য তিনজন ছিলেন। সম্প্রতি ১১ খালসি আমরা পেয়েছি। তাদের দক্ষ কারিগর হিসেবে গড়ে তোলার জন্য অবসরে যাওয়া চারজন শ্রমিককে আহ্বান জানালে তারা সাড়া দেন। নতুনদের নিয়ে আমরা কাজ শুরু করেছি। পাশাপাশি কারখানাটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে। কারখানার মেশিনগুলো চালানোর জন্য যে ধরনের লোকবল প্রয়োজন, সে ধরনের লোকবল পাওয়া যায়নি। যদি আমরা লোকবল পেয়ে যাই, অচিরেই কারখানার মেশিনগুলো চালু করা সম্ভব হবে।

এ প্রসঙ্গে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে প্রধান যন্ত্র প্রকৌশলী মুহাম্মদ কুদরত-ই খুদা জানান, রেলওয়েতে জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা ও সেতু বিভাগে লোক দেওয়া হয়েছে। এসব জনবল নিয়োগে কিছুটা হলেও কাজের গতি এসেছে। উৎপাদনের মাত্রাও বাড়ছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩২ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০২৩
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।