ঢাকা, সোমবার, ১ পৌষ ১৪৩১, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

দেড় যুগ আগে ডিজিটাল বাংলাদেশের পরিকল্পনায় দেশ এগিয়েছে: মাহবুবুর রহমান

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৯ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০২৩
দেড় যুগ আগে ডিজিটাল বাংলাদেশের পরিকল্পনায় দেশ এগিয়েছে: মাহবুবুর রহমান

এফবিসিসিআই-এর সাবেক সভাপতি মাহবুবুর রহমান বলেছেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের পর স্মার্ট বাংলাদেশের পরিকল্পনা এ শতাব্দীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং দূরদৃষ্টিসম্পন্ন সিদ্ধান্ত। কেননা উন্নত বিশ্বের দেশগুলোও এর মধ্যেই স্মার্ট দেশে রূপান্তরিত হয়েছে।

এমনকি অনেক উন্নয়নশীল দেশও রূপান্তরে অনেক দূর এগিয়ে গেছে। ভবিষ্যতে যেসব দেশ প্রযুক্তি ব্যবহারে এগিয়ে থাকবে তারাই ব্যবসা-বাণিজ্য, আন্তর্জাতিক লেনদেন ও যোগাযোগ ক্ষেত্রে সবচেয়ে সুবিধাজনক অবস্থায় থাকবে।  

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্মার্ট বাংলাদেশের মতো আজ থেকে দেড় যুগ আগে ডিজিটাল বাংলাদেশের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছিলেন বলেই বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়েছে। দুই বছর ধরে চলা করোনা মহামারির মধ্যেও আমাদের অর্থনীতি এগিয়েছে। আগামীতে আমাদের উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে প্রয়োজন উৎপাদন সক্ষমতা বাড়ানো।  

এর জন্য শিল্প, কৃষি ও অত্যাবশ্যকীয় সেবা খাত বৃদ্ধি, সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখার জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাতে হবে। আপনার ব্যক্তিগত চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করার মাধ্যমে আপনি ৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের জায়গায় ২৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছেন। এতে আপনার ব্যক্তিগত কতগুলো বিষয় কাজ করেছে যে, আপনি চিন্তা করেছেন এটা না হলে ‘দ্য স্পিরিট অ্যান্ড দ্য পারপাস অব ইকোনমি উইল নট বি অ্যাচিভ’। সে অবস্থায় আমরা যদি এখনো বিদ্যুতের সঠিক ব্যবহার না করতে পারি, তাহলে একটু সমস্যায় পড়ে যাই। আমাদের উৎপাদন ১৪ হাজার মেগাওয়াট।  

বাকি ক্যাপাসিটি পড়ে আছে, আমরা ব্যবহার করতে পারছি না। ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আপনি এটা করেছেন। এ সম্পর্কে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। কিন্তু জ্বালানির অভাবে আমাদের এখন বিদ্যুতের আমদানি করতে হচ্ছে। সেদিকে আপনার বিশেষ দৃষ্টি আমি আকর্ষণ করছি। আমি মোটামুটি যেসব এলাকা নিয়ে কথা বলব ভেবেছিলাম, আমাদের এফবিসিসিআইয়ের মাননীয় সভাপতি জসিম সাহেব সব বিষয় তুলে ধরেছেন। আমি আপনাকে ওভার বার্ডেন করতে চাই না। কিন্তু এই বিদ্যুতের দিকটা আপনাকে টপ প্রায়োরিটি বেসিসে রেখে কাজ করতে হবে।  

শিল্প বিকাশ এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন বেগবান করতে ভৌত অবকাঠামো প্রধান শর্ত। বর্তমানের পূর্ব-পশ্চিমের মিলন সেতু পদ্মা সেতু, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ফোর লেন মহাসড়ক, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেল ও বহু অবকাঠামো (ইনফ্রাস্ট্রাকচার) আমাদের অগ্রযাত্রায় অবদান রাখছে। এগুলো সবই আপনার বিভিন্ন বিষয় যেমন  অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সামাজিক উন্নয়ন আপনার দূরদর্শিতার বহিঃপ্রকাশ। এ অবস্থায় এসব অবকাঠামো যদি না থাকে তাহলে বেসরকারি খাত কাজ করতে পারবে না এবং সেই অবকাঠামো দেওয়ার কারণে আপনি বেসরকারি খাতের বন্ধু হিসেবে আপনি তাদের যে সাহায্য করেছেন, দেশকে সাহায্য করেছেন, মানুষকে সাহায্য করেছেন। অন্যথায় এটা করা সম্ভব হতো না।  

এ অবস্থায় এসব অবকাঠামো আরও সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আপনার সরকার কাজ করবে এ সম্পর্কে আমাদের কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু জ্বালানির অপর্যাপ্ততা অর্থাৎ গোল এবং গ্যাসের আবিষ্কার যদি আমরা না করতে পারি, সেগুলো যদি উত্তোলন বা এর ব্যবহার যদি না করতে পারি তাহলে আমরা সমস্যায় পড়ে যাব। এ বিষয়ে টপ প্রায়োরিটি আপনাকে দিতে হবে। রেলওয়ের আধুনিকায়ন এবং এক্সপানশন মানুষের যাতায়াতের জন্য পণ্য পরিবহনের বিশেষ ভূমিকা পালন করে এবং রেলের বিষয়টি আমার মনে হয় একটু পেছনে পড়ে গেছে। এটাকে যদি সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হয়, তাহলে মাস্ট ট্রানজিটে সুবিধা হবে। বাস দিয়ে ১৭ কোটি মানুষকে ট্রান্সপোর্ট করা সম্ভব হবে না।  

তাই রেলের আধুনিকায়ন একান্ত জরুরি এবং সিটি কমিউনিকেশনের জন্য আপনি মেট্রোরেল শুরু করেছেন এবং এটা সামনে আরও এগিয়ে যাবে। কৃষি খাতে বিপ্লবের (এগ্রিকালচার রিভোলিউশন) জন্য আপনার অলটারনেটিভ নেই। সেখানে পার্টিকুলারলি ক্লাইমেট ডিপেডেন্সি না করে ক্লাইমেট এডজাস্ট করার জন্য এগ্রিকালচার ইন্ডাস্ট্রি ক্লাইমেট ফ্রেন্ডলি করার জন্য সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা কাজ করছি। আগামী আগস্ট মাসের ২ তারিখ এগ্রিকালচার মিনিস্ট্রিসহ ফাও অর্থাৎ ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশনসহ ঢাকাতে একদিনের সম্মেলন করতে যাচ্ছি। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। তারপর আমরা কাজ করব। এবারের বাজেটে আয়কর সংশ্লিষ্ট কর্মীদের একটা বিচারিক ক্ষমতা দেওয়ার প্রস্তাব আসছে। যদি আয়করের কর্মীদের বিচারিক ক্ষমতা থাকে তাহলে আমাদের কোর্ট-কাচারির দরকার নেই। কোনোভাবেই আয়করের কর্মীদের বিচারিক ক্ষমতা দেওয়া যেতে পারে না। এটা যুক্তিসংগত নয় এবং আয়কর বিভাগকে পুরোপুরি ঢেলে সাজাতে হবে। এটার অ্যাবসুলিটলি ফর্ম এসেনশিয়াল। এটা কতগুলো জিনিস সরকারের বিভিন্ন সংস্থা থেকে টাকা পাওয়া গেছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সেই রিফর্মগুলো সময়মতো হয়ে ওঠেনি।  

এখানে আমরা পিছিয়ে আছি। আমাদের আয়কর বিভাগকে ঢেলে সাজাতে হবে। এ সম্পর্কে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। লাস্ট পার্ট অব দ্য লিস্ট, আমি মনে করি যে, ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইওয়ে হয়তো বেশি দিন লাগবে না। এটা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাবে। কারণ হলো- এটাতে যেভাবে যানজট চলছে, শুনেছি এটাকে আট লেন হাইওয়েতে রূপান্তরের কথা ভাবা হচ্ছে। আর এটা যদি হয়, তাহলে আগামী ২০ বছরেও এটা করা সম্ভব হবে না। অধিগ্রহণ ইত্যাদি সব মিলিয়ে। তারপরও এর সমস্যার সমাধান হবে না। এর একমাত্র সমাধান হলো- এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। ঢাকা-চট্টগ্রাম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে যদি হয় তাহলে সোজা ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম এবং অন্য জেলাগুলোর মালামাল চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছে যাবে। আমার মনে হয়, এটাকে টপ প্রায়োরিটি বেসিস দেওয়া দরকার।  

বাংলাদেশ সময়: ১১৪৯ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০২৩
এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।