ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্রও বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের যে সার্বিক পরিবেশ, আমেরিকা বিনিয়োগের ব্যাপারে আগ্রহী আছে।
তারা আমাদের নৌ-খাতের অগ্রগতি নিয়ে আশাবাদী বলে জানান তিনি।
মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
নৌপ্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, তিনি (পিটার হাস) তার প্রশংসা করেছেন। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর কার্যক্রমের প্রশংসা করেছেন। দেশের সাবির্ক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে তিনি প্রশংসা করেছেন। এতে বোঝা যায়, বাংলাদেশ সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্য দেশগুলোর দৃষ্টিভঙ্গি কী!
মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের নৌ-খাত ও নৌ-মন্ত্রণালয় সম্পর্কে আলোচনা হয়েছে। কারণ এর আগে ইউএস ট্রেডের আমন্ত্রণে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) একটি দল ১৪ দিন আমেরিকা সফর করেছিলাম। তখন অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন ও মেরিটাইম নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় আমরা কথা বলেছি। আমেরিকার বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংস্থা (ইউএসটিডিএ), এক্সিম ব্যাংক, তারা এখানে কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। সে বিষয়গুলো নিয়ে কথা হয়েছে। মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর, চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দর নিয়েও আগ্রহ প্রকাশ করেছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত। বিশেষ করে আমাদের যে ফায়ার ফাইটিংয়ের চ্যালেঞ্জগুলো রয়েছে, সেগুলো মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, পায়রা বন্দর নিয়ে তাদের বলেছি যে, এটি নতুন একটি বন্দর, এখানে অনেক ধরনের সুযোগ আছে। যুক্তরাষ্ট্র বিনিয়োগ করতে চাইলে সেটা তারা করতে পারবে। এ নিয়ে পায়রা বন্দরকে বলবো। পায়রা বন্দরের চেয়ারম্যানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হবে, কী কী ধরনের সুযোগ আছে, তা তারা জানতে চাইবে। আর বাংলাদেশে বিভিন্ন সময় যে বন্যা ও দুর্যোগ হয়, এসব বিষয়ে তারা সহযোগিতা করতে পারে, আমরাও আগ্রহ প্রকাশ করেছি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের আন্তর্জাতিক জাহাজ ও বন্দর স্থাপনা নিরাপত্তা (আইএসপিএস) কোড আছে। আমেরিকার কোস্টগার্ড এরইমধ্যে মোংলা সমুদ্রবন্দর পরিদর্শন করেছে। আমরা তাদের সঙ্গে কাজ করছি। আমরা বিভিন্ন ধরনের ড্রেজার সংগ্রহ করছি, তার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রও যুক্ত আছে। তাদের কাছ থেকেও সরঞ্জামাদি সংগ্রহ করা হচ্ছে।
বন্দরগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে কোনো কথা হয়েছে কি না, প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে যে উন্নয়ন হয়েছে, তা অকল্পনীয়, তারা খুবই খুশি। চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় তারা সহযোগিতা করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
বিনিয়োগের প্রস্তাবের জবাবে মার্কিন রাষ্ট্রদূত কী বলেছেন, জানতে চাইলে নৌপ্রতিমন্ত্রী বলেন, তারা খুবই আগ্রহী। বাংলাদেশের যে সার্বিক পরিবেশ, আমেরিকা বিনিয়োগের ব্যাপারে আগ্রহী আছে। যদি আমাদের কোনো প্রস্তাব থাকে, কোথায় কীভাবে বিনিয়োগ করা যাবে, সে বিষয়ে তিনি আমাদের কাছ থেকে জানতে চেয়েছেন। কী ধরনের বিনিয়োগ তারা করতে পারেন, সে বিষয়ে জানতে আগ্রহী মার্কিন রাষ্ট্রদূত।
মন্ত্রণালয়ের বাইরে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, না, এমনিতেই পারিবারিক আলোচনা হয়েছে। আমার পরিবার সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। রাজনৈতিক কোনো আলোচনা হয়নি।
এখন তো রাজনীতিই সবচেয়ে বড় ইস্যু, বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করছে। এসব নিয়ে কোনো কথা হয়েছে কি না, প্রশ্নে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমাদের এখানে বিনিয়োগ, বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে তাদের যে আগ্রহ আছে, এসব দেখেই বুঝে নেওয়া যায় যে তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কটা কী রকম। আমরা মাঠে যে কথাগুলো শুনি, আলোচনা হয়, বাস্তব কার্যক্রমের সঙ্গে তার কোনো মিল নেই।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৪ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০২৩
জিসিজি/এএটি