ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

দাম কমেনি আলু পেঁয়াজ ডিমের, হতাশ ক্রেতারা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৩
দাম কমেনি আলু পেঁয়াজ ডিমের, হতাশ ক্রেতারা

ঢাকা: রাজধানীর হাতিরপুল বাজারে দৈনন্দিন বাজার-সদাই করতে এসেছেন বেসরকারি কর্মজীবী রাজিব আহমেদ। বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, আলু, ডিম ও পেঁয়াজের দাম কমার ঘোষণা সরকার দিলেও বাজারে কোনো প্রভাব পড়েনি।

সরকার দাম বেঁধে দিলেও ব্যবসায়ীরা তো মানছেন না, তাদের নিজেদের মতো দাম নিচ্ছেন।

শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর পলাশী বাজারে প্রতি ডজন ডিমের দাম ১৫০ টাকা। সরকার অন্য আরও দুটি পণ্যেরও দাম বেঁধে দিয়েছে—পেঁয়াজ ও আলু। এ দুটি পণ্যও সরকার নির্ধারিত দামে পাওয়া যাচ্ছে না।  

খুচরায় প্রতি কেজি আলুর সরকার নির্ধারিত দাম ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা। কিন্তু বাজারে ৫০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না। অর্থাৎ এক কেজি আলুতে অন্তত ১৪ টাকা বেশি দিতে হচ্ছে।

দেশি পেঁয়াজের সরকার নির্ধারিত দাম ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা কেজি। তবে খুচরা বাজারে এখন বিক্রি হচ্ছে ৮৫ থেকে ৯০ টাকা। অর্থাৎ বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে ২০ থেকে ২৫ টাকা বেশি। আর আমদানি করা পেঁয়াজের খুচরা দাম পড়ছে মানভেদে ৬০ থেকে ৭০ টাকা।

শুধু হাতিরপুল বাজার নয়, আশপাশের পলাশী বাজার, নিউমার্কেট কাঁচাবাজার ও কাঁঠালবাগান বাজার ঘুরে এ চিত্র পাওয়া গেছে।

হাতিরপুল বাজারের বিক্রেতা আবদুল খালেক বলেন, তেজগাঁও ডিমের আড়ত থেকে প্রতি শ ডিম কিনেছি ১ হাজার ১৪০ টাকায়। প্রতি ডিমের পাইকারি দাম পড়েছে ১১ টাকা ৪০ পয়সা। এর সঙ্গে গাড়িভাড়া যোগ হবে। ডিম নষ্ট থাকে, ভেঙে যায়, সেই খরচও ধরতে হবে। দোকানভাড়া, বিদ্যুৎ বিল ও ডিমের প্যাকেজিং খরচও আছে। সব মিলিয়ে প্রতি ডিমে খরচ আসে ১২ টাকার ওপর।

অতিরিক্ত দাম নেওয়ার কারণ হিসেবে আবদুল খালেক দাবি করেছেন, সরকার যে দাম ঠিক করেছে, সে দামে ডিম বিক্রি করতে গেলে লোকসান করতে হবে। পাইকারি বাজারে ডিমের দাম কমলে তখন কম রাখা সম্ভব হবে।

ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার পাশাপাশি বাজারে অভিযান হচ্ছে। এতে খুচরা ব্যবসায়ীরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন।

তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আমানত উল্লাহ বলেন, খামারিদের উৎপাদন খরচ কমানোর ব্যবস্থা না করে এভাবে ডিমের দাম বেঁধে দিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণের কোনো মানে হয় না।

প্রান্তিক খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, সরকারের বেঁধে দেওয়া ডিমের দাম শুধু কাগজে-কলমে থাকবে; বরং মুরগির খাবারের দাম কমানো ও এক দিন বয়সী মুরগির বাচ্চার বাজার স্থিতিশীল করার পরামর্শ দিয়েছে সংগঠনটি।

এর আগে  বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি গত বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) ডিম, আলু ও দেশি পেঁয়াজের দাম বেঁধে দেন।  

এরপর গত শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) থেকে সরকারের বেঁধে দেওয়া দাম তদারকিতে বাজার অভিযানে নামে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। সংস্থাটি গত দুই দিনে সারাদেশে অভিযান চালিয়ে ২৩৪টি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করেছে। তবে বাজারে দাম কমার লক্ষণ নেই।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৩   
এনবি/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।