ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

‘১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত ইলিশ ধরা নিষেধ’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৩
‘১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত ইলিশ ধরা নিষেধ’

ঢাকা: ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে নিরাপদ প্রজননের লক্ষ্যে আগামী ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে ইলিশ আহরণ নিষেধ থাকবে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।  

তিনি বলেন, এ সময় দেশব্যাপী ইলিশ পরিবহন, কেনাবেচা, মজুদ ও বিনিময়ও নিষিদ্ধ থাকবে এবং একইসঙ্গে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান বাস্তবায়ন করা হবে।

 ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধ থাকাকালে ইলিশ আহরণে বিরত থাকা জেলেদের সরকার ভিজিএফ খাদ্য সহায়তা দেবে।

বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মৎস্য ভবনে মৎস্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে ইলিশের উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রধান প্রজনন মৌসুমে ইলিশ আহরণ বন্ধের সময় নির্ধারণ এবং মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান ২০২৩ বাস্তবায়নের জন্য ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত জাতীয় টাস্কফোর্স কমিটির সভায় মন্ত্রী এ কথা জানান।  

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, ইলিশ আমাদের জাতীয় সম্পদই শুধু নয়, এটি জিআই সনদপ্রাপ্ত একটি সম্পদ যা বিশ্বপরিমণ্ডলে আমাদের আলাদা পরিচয় বহন করে। অতীতের সব রেকর্ড অতিক্রম করে ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে। এক্ষেত্রে ইলিশ উৎপাদনের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সংশ্লিষ্ট সবার অবদান রয়েছে। ইলিশ সংরক্ষণে মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা, স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা, মৎস্যজীবী ও মৎস্যজীবীদের বিভিন্ন সংগঠন বিভিন্ন পর্যায়ে দায়িত্ব পালনের কারণে ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে।

তিনি বলেন, দেশে ইলিশের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য অভয়াশ্রম সৃষ্টি, বিভিন্ন সময়ে ইলিশ আহরণ বন্ধ রাখা, জাটকা নিধন বন্ধ করা, আহরণ বন্ধ থাকাকালে ইলিশ আহরণে সম্পৃক্ত জেলেদের ভিজিএফ সহায়তা ও বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেওয়াসহ নানাভাবে সরকার কাজ করছে।

মন্ত্রী বলেন, উৎপাদন বাড়লে মৎস্যজীবীরাই ইলিশ আহরণ করবে। তারাই লাভবান হবেন। সরকার শুধু ইলিশ উৎপাদনের পরিসর বাড়ানোর কাজ করছে। জাতীয় সম্পদ ইলিশ যাতে কোনোভাবে বিপন্ন না হয় সেক্ষেত্রে কাজ করতে হবে। ইলিশ সারা দেশের সম্পদ। এজন্য এ মাছ রক্ষায় সবাই মিলে আন্তরিকভাবে ভূমিকা রাখতে হবে।

ইলিশ সংক্রান্ত জেলা ও উপজেলা টাস্কফোর্সের সভা দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করা এবং জেলেদের জন্য বরাদ্দকৃত ভিজিএফ খাদ্যশস্য বিতরণের জন্য জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা দেন মন্ত্রী।  

পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করে ইলিশ রক্ষায় জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।

মন্ত্রী বলেন, দরিদ্র-অসহায় মৎস্যজীবীদের ব্যবহার করে একশ্রেণীর মুনাফালোভী দুর্বৃত্ত। তারা মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধকালে নদীতে-সমুদ্রে মাছ ধরতে জেলেদের নামায়। এক্ষেত্রে কোনো ছাড় নয়। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এসব দুর্বৃত্তের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। দেশের সম্পদ রক্ষায় রাষ্ট্র চেষ্টা করছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চেষ্টা করছেন। এর ব্যত্যয় ঘটালে, যতই প্রভাবশালী হোক ব্যবস্থা নিতে হবে। ইলিশ সম্পৃক্ত এলাকায় এ সময় প্রয়োজনে বরফ কল বন্ধ করে দিতে হবে।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ, অতিরিক্ত সচিব নৃপেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথ, এ টি এম মোস্তফা কামাল, মো. আব্দুল কাইয়ূম ও মো. তোফাজ্জেল হোসেন, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক, বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের চেয়ারম্যান সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়, জননিরাপত্তা বিভাগ, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, বাংলাদেশ নৌবাহিনী, বাংলাদেশ বিমান বাহিনী, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কোস্টগার্ড, বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি, মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি, বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশন, র‌্যাব, নৌ পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশের প্রতিনিধি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষক, ইলিশ সম্পৃক্ত জেলাগুলোর জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপাররা, ট্রাক-কাভার্ডভ্যানচালক সমিতি, আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগ ও মৎস্যজীবী বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি এবং মৎস্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সভায় অংশ নেন।

উল্লেখ্য, প্রটেকশন অ্যান্ড কনজারভেশন অব ফিশ অ্যাক্ট, ১৯৫০ এর অধীন প্রণীত প্রটেকশন অ্যান্ড কনজারভেশন অব ফিশ রুলস, ১৯৮৫ অনুযায়ী প্রতিবছর প্রধান প্রজনন মৌসুমে ইলিশের নিরাপদ প্রজনন নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে ২২ দিন সারাদেশে ইলিশ মাছ আহরণ, পরিবহন, মজুদ, বাজারজাতকরণ, কেনা-বেচা ও বিনিময় নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০,২০২৩/আপডেট: ১৬৪৭ ঘণ্টা
জিসিজি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।