ঢাকা, রবিবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৯ মে ২০২৪, ১০ জিলকদ ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

কমেছে ডলারের চাপ, সরবরাহে সক্ষম ৩৯ ব্যাংক

সিনিয়র করেসপেন্ডন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০২৩
কমেছে ডলারের চাপ, সরবরাহে সক্ষম ৩৯ ব্যাংক

ঢাকা: ডলারের ওপর চাপ কমে এসেছে। আগে অধিকাংশ ব্যাংক গ্রাহকের চাহিদা মতো ডলার সরবাবহ করতে পারতো না।

এ ঘাটতি এখন আর নেই। ৬০ বাণিজ্যিক ব্যাংকের মধ্যে ৩৯টিই নিজেদের প্রয়োজন মতো ডলার সরবরাহ করতে পারছে। ফলে এলসি খোলাসহ তারা নিজেদের চাহিদা পূরণ করতে পারছে। বাকি ২১টি ব্যাংক চাহিদা পূরণ করতে পারছে না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক।

বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান তিনি।  

এ সময় সহকারী মুখপাত্র সাঈদা খানম উপস্থিত ছিলেন। দেশের ডলার সংকট নিরসনে গৃহীত পদক্ষেপ জানানোর জন্য এ সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

মুখপাত্র বলেন, বাফেদা রপ্তানি-রেমিট্যান্স ও আমদানি সব ক্ষেত্রেই ডলারের দাম ৫০ পয়সা কমিয়েছে। এতে করে ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশের টাকার মান বাড়বে। যেটা এতদিন ছিল উল্টোমুখী। আমদানি কমে যাওয়ার কারণে ডলার চাহিদা কমে এসেছে এবং আগামী বছরের সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে বিল পরিশোধের চাপ অতি নগণ্যতে নেমে আসবে।

তিনি বলেন, দেশের ডলার খরচের মূল খাত হলো দুটি। একটি হলো, আমদানি মূল্য পরিশোধ করা এবং অন্যটি হলো সেবামূল্য পরিশোধ। দুই জায়গাতেই আমরা চাহিদা কমাতে সক্ষম হয়েছি। এরই মধ্যে আমাদের ডলার পরিশোধের পরিমাণ অর্ধেকে নেমে এসেছে। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে মাসিক ডলার পরিশোধ নেমে ৪৯ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে। কারণ আমরা এরই মধ্যে বেশ কিছু পণ্য আমদানিতে সীমাবদ্ধতা আরোপ করেছি। পাশাপাশি এখন দীর্ঘমেয়াদি ঋণপত্র খোলার হার কমে গেছে। ব্যবসায়ীরা এখন যেসব ঋণপত্র খুলে তার বেশিরভাগই তাৎক্ষণিকভাবে। তাই খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ডলার সংকটের পাশাপাশি দেশের মূল্যস্ফীতি ও নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। আগামী জুনের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশের নিচে নেমে আসবে।

প্রবাসী আয়ের ডলারের দাম কম হওয়ার কারণে প্রবাসীরা অবৈধভাবে ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে ভিন্ন মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছে, এটা সঠিক নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রবাসী আয়ের ডলারের দাম ৫০ পয়সা কমানোর পরও প্রবাসী আয়ের ইতিবাচক ধারা অব্যাহত থাকবে।  প্রবাসী আয় ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে যাওয়ার জন্য অন্য বিভিন্ন কারণ রয়েছে। এসব পথ আস্তে আস্তে সীমাবদ্ধ হয়ে আসবে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মুখপাত্র বলেন, আমাদের বেশিরভাগ ব্যাংকের কাছেই প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ডলার আছে। পক্ষান্তরে সংকটেও রয়েছে কিছু ব্যাংক। এসব ব্যাংকের গ্রাহক চাইলেও চাহিদা অনুযায়ী ঋণপত্র খুলতে পারছেন না। তাই তারা বাধ্য হয়ে অন্য ব্যাংকের শরণাপন্ন হচ্ছেন। এ কারণেই কখনো কখনো অস্থিরতা দেখা দিচ্ছে ডলারের বাজারে।

রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রির প্রসঙ্গে মুখপাত্র জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে সরকার তার প্রয়োজনে ডলার নেয়। প্রয়োজন হলে দেশের স্বার্থে সেটা দিতেই হবে। বন্ধ করার কোনো সুযোগ নেই।

এর আগে গত বুধবার (২২ নভেম্বর) প্রতি ডলারে ৫০ পয়সা করে কমিয়ে আমদানিতে ১১০ টাকা ৫০ পয়সা এবং রপ্তানি ও রেমিট্যান্সে ১১০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মধ্যস্থতায় বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন এবিবি ও বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী ব্যাংকের সংগঠন বাফেদার যৌথ সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২১১১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০২৩
জেডএ/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।