ঢাকা, বুধবার, ৩ পৌষ ১৪৩১, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

‘সোনায় বিনিয়োগ, ভবিষ্যতের সঞ্চয়’ প্রতিপাদ্যে ৮ ফেব্রুয়ারি শুরু বাজুস ফেয়ার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১, ২০২৪
‘সোনায় বিনিয়োগ, ভবিষ্যতের সঞ্চয়’ প্রতিপাদ্যে ৮ ফেব্রুয়ারি শুরু বাজুস ফেয়ার

ঢাকা: ‘সোনায় বিনিয়োগ, ভবিষ্যতের সঞ্চয়’ শীর্ষক প্রতিপাদ্য নিয়ে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি শুরু হচ্ছে তিন দিনের বাজুস ফেয়ার-২০২৪। বিশ্ববাজারে দেশের স্বর্ণশিল্পীদের হাতে গড়া অলংকারের পরিচিতি বাড়াতে আগামী ৮, ৯ ও ১০ ফেব্রুয়ারি ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরার (আইসিসিবি) নবরাত্রি হলে এ মেলা অনুষ্ঠিত হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশন-২০৪১ সফলভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বাজুস প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীরের পরিকল্পনায় দেশের ইতিহাসে তৃতীয়বারের মতো এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। একই দিন সন্ধ্যায় বাজুস মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড-২০২৩ বিজয়ীদের পুরস্কার দেওয়া হবে।

বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) পান্থপথের বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) কার্যালয়ে বাজুস ফেয়ার উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।  

‘সোনায় বিনিয়োগ, ভবিষ্যতের সঞ্চয়’ প্রতিপাদ্য নেওয়ার কারণ কী, এমন প্রশ্নের জবাবে বাজুসের মুখপাত্র, বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক সভাপতি ডা. দিলীপ কুমার রায় বলেন, আমাদের পরিবারের অনেক সদস্য আছেন যারা ৬-৮ হাজার টাকা ভরিতে স্বর্ণ কিনেছিলেন, এখন তার মূল্য লাখ টাকা হয়ে গেছে। স্বর্ণ ছাড়া যে কোনো পণ্যই আপনি কেনেন তার রিটেল ভ্যালু এতো থাকে না। আজকে আপনি একটা টেলিভিশন, ফ্রিজ কিনলে পরের দিন বিক্রি করতে গেলে মূল্য অর্ধেক হয়ে যাবে। কিন্তু স্বর্ণ এমন জিনিস যেটা মানুষ সঞ্চয় হিসেবে নিয়েছে। গরিব, ধনী, মধ্যবিত্ত সবাই এটা কেনে। ধনী দেশগুলো আজকে স্বর্ণকে রিজার্ভ হিসেবে নিয়েছে। এ জন্য আমাদের প্রতিপাদ্য ‘সোনায় বিনিয়োগ, ভবিষ্যতের সঞ্চয়’।

বাজুসের ৪০ হাজার সদস্য, অথচ মেলায় অংশগ্রহণকারী খুবই কম, এটা সন্তোষজনক কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. দিলীপ কুমার রায় বলেন, নিরাপত্তার জন্য এ থেকে বেশি স্টল দেওয়া সম্ভব নয়। আপনারা জানেন এই মেলাটি একটি নিরাপত্তার বেষ্টনীর মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়। কোটি কোটি টাকার স্বর্ণ নিয়ে উন্মুক্ত স্থানে এ মেলা আয়োজন করা সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, যার ফলে বাংলাদেশে যেসব স্বর্ণ ব্যবসায়ী রয়েছেন, তার মধ্যে যাদের বিশ্বব্যাপী স্বর্ণালংকারের সুনাম রয়েছে, সে সমস্ত ব্যবসায়ীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে স্টল দিয়েছি। আমার বিশ্বাস, জায়গা ছোট হলেও আমাদের দেশে উৎপাদিত সব জুয়েলারি পণ্য উপস্থাপন করতে পারবো। এতে দর্শক, ক্রেতা, দেশি-বিদেশি বায়ার আসবেন। গত দুই বছরের সাফল্যের ধারা অব্যাহত থাকবে। দেশে-বিদেশে আমাদের স্বর্ণালংকার সুপরিচিত পাবে।  

সংবাদ সম্মেলনে বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ফেয়ার অ্যান্ড ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের চেয়ারম্যান উত্তম বণিক লিখিত বক্তব্যে জানান, এদেশের চলমান অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রামের অন্যতম লক্ষ্য সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলা। এই লক্ষ্যে কাজ করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার নেতৃত্বাধীন সরকার। সোনার বাংলাদেশ গড়ার কাজে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বাজুস। এই লক্ষ্য অর্জনে সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন সারাদেশের প্রায় ৪০ হাজার জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান।

উত্তম বণিক বলেন, বাজুস ফেয়ার-২০২৪ দেশীয় জুয়েলারি শিল্পকে সমৃদ্ধশালী করার পাশাপাশি বিশ্ববাজারে একটি নতুন অবস্থান তৈরিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে বাজুস আশা করছে। দেশের স্বর্ণশিল্পীদের হাতে গড়া নিত্যনতুন আধুনিক ডিজাইনের অলংকারের পরিচিতি বাড়বে। এই লক্ষ্যে ‘বাজুস ফেয়ার-২০২৪’-এ সব ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের সাদরে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। আমরা আশা করছি- বাংলাদেশের জুয়েলারি শিল্পের বিদ্যমান অবস্থা এবং এর ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা সম্পর্কে দেশের ১৮ কোটি মানুষ অবগত হবে।

তিনি বলেন, ‘সোনায় বিনিয়োগ, ভবিষ্যতের সঞ্চয়’ শীর্ষক ফেয়ারের পাশাপাশি একই স্থানে আমরা বাজুস জুয়েলারি সামিট-২০২৪ এর আয়োজন করেছি। এই সামিটে ১০ সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া আগে ঘোষিত বাজুস মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড-২০২৩ বিজয়ীদের পুরস্কার দেওয়া হবে। একইসঙ্গে ‘বাজুস ফেয়ার- ২০২৪- এ অংশগ্রহণকারী জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে সম্মাননা স্মারক দেওয়া হবে। এসব অনুষ্ঠানে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের কয়েকজন মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, জাতীয় সংসদের সদস্য, সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা, দেশের খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ, শিল্পী, অভিনেতা, অভিনেত্রী, মডেল, শোবিজ তারকাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের সেলেব্রিটিরা বাজুস ফেয়ারে অংশ নেবেন বলে আমরা আশা করছি।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দেশের অর্থনীতিতে অনবদ্য ভূমিকা রাখা বাংলাদেশের জুয়েলারি শিল্পের সবচেয়ে বড় আয়োজন বাজুস ফেয়ার প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। বাজুস ফেয়ারে প্রবেশ টিকিটের মূল্য জনপ্রতি ১০০ টাকা। ৫ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের টিকেট লাগবে না। এছাড়া জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানগুলো ক্রেতাদের মনোযোগ আকর্ষণে বিশেষ অফার দিচ্ছে। এবার বাজুস ফেয়ারে ৯টি প্যাভিলিয়ন, ১৭টি মিনি প্যাভিলিয়ন ও ১৫টি স্টলে দেশের স্বনামধন্য ৪১টি জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান অংশ নেবে।

এবারের বাজুস ফেয়ারে প্যাভিলিয়নে অংশ নেওয়া ৯টি প্রতিষ্ঠান হলো: ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড লিমিটেড, অলংকার নিকেতন (প্রা.) লিমিটেড, আমিন জুয়েলার্স লিমিটেড, ভেনাস জুয়েলার্স লিমিটেড, কুঞ্জ জুয়েলার্স, রয়েল মালাবার জুয়েলার্স (বিডি) লি., আপন জুয়েলার্স, জড়োয়া হাউজ (প্রা.) লিমিটেড ও রিজভী জুয়েলার্স।

মিনি প্যাভিলিয়নে অংশ নেওয়া ১৭টি প্রতিষ্ঠান হলো: ডায়মন্ড বাজার অ্যান্ড গোল্ড, গৌরব জুয়েলার্স, আলভী জুয়েলার্স, আই কে জুয়েলার্স লিমিটেড, চৌধুরী গোল্ড, রিয়া জুয়েলার্স, আফতাব জুয়েলার্স, ডায়মন্ড হাউজ, রয়েল ডায়মন্ড, দি ডায়মন্ড স্টোর, ড্রিমজ ইনস্ট্রুমেন্ট টেকনোলজি, রাজ জুয়েলার্স লিমিটেড, জারা গোল্ড, জায়া গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ড, সাস ইন্টারন্যাশনাল, দি পার্ল ওয়েসিস জুয়েলার্স ও ডি ডামাস দি আর্ট অব জুয়েলারি।

স্টলে অংশ নেওয়া ১৫টি প্রতিষ্ঠান হলো: গোল্ডেন ওয়ার্ল্ড জুয়েলার্স, দি আই, কে জুয়েলার্স, গীতাঞ্জলী জুয়েলার্স, আয়াত ডায়মন্ডস, সিরাজ জুয়েলার্স, পাপড়ি জুয়েলার্স, ডায়মন্ড প্যালেস, ডায়মন্ড স্কয়ার, নিউ বসুন্ধরা জুয়েলার্স, রাজঐশ্বরী, ডি গোল্ড প্যাশন, বাংলাদেশ সায়েন্টিফিক ইনস্ট্রুমেন্ট কোম্পানি, জেমস গ্যালারি অ্যান্ড ডায়মন্ড, খোকন জুয়েলার্স ও আরএন মাইক্রোটেক।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, বাজুসের মুখপাত্র ও সহ-সভাপতি মো. রিপনুল হাসান, মুখপাত্র ও সহ-সভাপতি মাসুদুর রহমান, মুখপাত্র এবং বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক ডা. দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহীন, উপদেষ্টা রুহুল আমিন রাসেল, ভাইস চেয়ারম্যান ও কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য নারায়ণ চন্দ্র দে, সদস্য মো. লিটন হাওলাদার, সদস্য মো. মনির হোসেন, সদস্য মো. আজাদ হোসেনসহ কমিটির অন্য সদস্যরা।

বাংলাদেশ সময়: ১২১৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০১, ২০২৪
জিসিজি/এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।