ঢাকা: বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার মো. আব্দুল হালিম বলেছেন, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) কমোডিটিজ নিয়ে কাজ করছে৷ সিএসই কমোডিটি চলতি সালের অক্টোবরের মধ্যে চালু হবে বলে তিনি বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন৷
শুক্রবার (৪ মে) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ আয়োজিত পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, সিডিবিএল, সিসিবিএল, মার্চেন্ট ব্যাংক এবং অ্যাসেট ম্যানেজম্যান্ট কোম্পানির শীর্ষ নির্বাহীদের অংশগ্রহণে গাজীপুরের ব্র্যাক সিডিএমে দুদিন ব্যাপী (২-৩ মে) ফিনান্সিয়াল ডারভাইটিভস অন এক্সচেঞ্জ ট্রেড প্লাটফর্ম শীর্ষক কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন৷
আব্দুল হালিম বলেন, ডেরিভেটিবস নিয়ে আজকের ওয়ার্কশপই শেষ নয়। এটা নিয়ে আরও অনেক প্রোগ্রাম করতে হবে৷ বিশ্বের অনেকে দেশে এ বিষয়ে অনেক আগে থেকে চালু আছে।
তিনি বলেন, পুঁজিবাজারে যেসব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তাতে বাজার এ অবস্থায় থাকবে না। পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে অনেক ভালো হবে। বাইরে থেকে কেউ এসে বাজার ভালো করে দেবে না। এখানে যারা আছে তাদেরই খুঁজে বের করতে হবে, এখানে কি সমস্যা আছে, আর কি কাজ করা যায়। তাহলেই বাজার ভালো হবে। অর্থনীতিতে যে পরিবর্তন হয়েছে, সে অনুযায়ী আমাদের রোল পরিবর্তন হওয়া উচিত। ২৫ সালের মধ্যে এ ডেরিভেটিস পণ্য চালু হবে বলে আমি আশাবাদী এরমধ্যে সিসিবিএলও তার কার্যক্রম শুরু করে দেবে।
তিনি আরও বলেন, গতানুগতিক চিন্তা করলে হবে না। একটু ভিন্নভাবে ভাবতে হবে। বাজারে অনেক কিছুই পরিবর্তন হয়েছে। শুধু করার জন্য ওয়ার্কশপ করলে হবে না। আপনাদের ভাবতে হবে আমরা এটা করব। সেক্ষেত্রে সিসিবিএলের সমস্যা দেখব না সিসিবিএলের বড় শেয়ারহোল্ডার ডিএসই। প্রয়োজনে তাদের সঙ্গে সমস্যার কথা জানান। দরকার হলে সেগুলো নিয়ে আলাদা ওয়ার্কশপ করেন।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডিবিএ’র প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম৷
ডিএসই’র মার্কেট ডেভেলপমেন্ট বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মোঃ ছামিউল ইসলামের সঞ্চালনায় দুদিন ব্যাপী কর্মশালার স্বাগত বক্তব্যে ডিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. এটিএম তারিকুজ্জামান বলেন, ডিএসইও তার পণ্যের বৈচিত্র্যকরণ আনতে আগ্রহী। আমরা নিয়ম/বিধি প্রণয়নের জন্য বিএসইসি’র সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছি এবং খুব শিগগিরই ডেরিভেটিভ মার্কেট শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিচ্ছি। আর্থিক খাতের ডেরিভেটিস পণ্য বাংলাদেশের জন্য খুবই সময়োপযোগী। ডেরিভেটিভ পণ্যগুলো অত্যন্ত পরিশীলিত পণ্য এবং ঝুঁকি হ্রাসের জন্য একটি কার্যকর হাতিয়ার যা পুঁজিবাজারের তারল্য প্রবাহ এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় অধিকতর দক্ষতা প্রদান করে অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে।
এ সময় বিএসইসি’র নির্বাহী পরিচালক মো. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, আমরা যখন কাজ শুরু করি তখন আমাদের এ মার্কেট খুবই ছোট ছিল। সে সময় আন্তর্জাতিক অনেক বড় মার্কেট দেখার সুযোগ হয় তার তুলনায় এ মার্কেট কিছুই ছিল না। তখন ভাবতাম এবং আশা করতাম যে আমাদের পুঁজিবাজার বড় হবে। কিন্তু এখনো বড় হয়নি। বাজার এখনো শিশু অবস্থায় রয়ে গেছে। মার্কেট এ অবস্থা হওয়ার কারণ হচ্ছে, আমাদের মার্কেটে পণ্য কম, ইকুইটি কেন্দ্রিক বাজার। এখানে বিনিয়োগের নতুন কোনো ক্ষেত্র নেই এবং নতুন কোনো পণ্য নেই। ফলে দেশে দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়ে। এখন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন মিলে ডেরিভেটিভস পণ্য চালুর উদ্যোগ নিয়েছে তারই অংশ হিসেবে এ ট্রেনিং প্রোগ্রাম।
কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডিএসই’র উপ-মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম ভুঁইয়া৷
কর্মশালার বিশেষ অতিথি ডিএসই ব্রোকারস অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম বলেন, দেশের পুঁজিবাজারে পণ্যের ভিন্নতা আনতে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো পিছিয়ে রয়েছে। পণ্যে ভিন্নতা আনতে অনেক আগে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। তাই বাজার ভালো করতে হলে পণ্যে ভিন্নতা আনতে হবে।
ডিএসই’র প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা সাত্বিক আহমেদ শাহ সমাপনী বক্তব্যে বলেন, সময়ের পরিবর্তনে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ সব ক্ষেত্রেই পরিবর্ধিত ও পরিবর্তিত হচ্ছে৷ এ পরিবর্তনের অংশ হিসেবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে পণ্য বৈচিত্রকরণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ৷ বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে পণ্য বৈচিত্রময় করা এবং বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি ভারসাম্যপূর্ণ পোর্টফোলিও গঠনে এ মুহূর্তে ডেরিভেটিভস মার্কেটের বিকল্প নেই৷
বাংলাদেশ সময়: ১৯০২ ঘণ্টা, মে ৪, ২০২৪
এসএমএকে/জেএইচ